গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান বার্তা নিয়ে দুমাস আগে তিনি লাদাখের পথে পাড়ি দিয়েছিলেন
লাদাখ থেকে ফেরার পর বন্ধুদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেবু মুখোপাধ্যায় (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সোমবার রাতে আসানসোল শহরে এক যুবককে ঘিরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়লেন তাঁর বন্ধুবান্ধবরা। তাঁকে গলায় মালা পড়িয়ে বাজি ফাটিয়ে স্বাগত জানানো হল। কিন্তু, ওই যুবককে ঘিরে কেন এত আয়োজন। জানা গেল, ওই যুবকের নাম দেবু মুখোপাধ্যায়। তাঁর বাড়ি আসানসোলের মহিশীলা এলাকায়। তিনি পেশায় অটো চালক। পায়ে হেঁটে তিনি লাদাখ (Ladakh) জয় করে দুমাস পর বাড়ি ফিরেছেন। শত প্রতিকুলতা জয় করে তিনি তাঁর লক্ষ্যপূরণ করে ফিরেছেন বলেই তাঁর সতীর্থরা তাঁকে সংবর্ধনা দিয়ে আরও উত্সাহিত করেছেন।
কয়েকমাস আগে দেবুর এক বন্ধু গাড়ি করে লাদাখ (Ladakh) গিয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও কারণে তিনি সেবার যেতে পারেননি। এরপর তিনি সাইকেল নিয়ে লাদাখ যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সাইকেল কেনার অর্থ জোগাড় করতে না পেরে তিনি পায়ে হেঁটে লাদাখ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি আসানসোল থেকে লাদাখের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। ২৪০০ কিলোমিটার পথ তিনি পায়ে হেঁটে যান। মূলত, গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান এই বার্তাকে নিয়ে তিনি পায়ে হেঁটে আসানসোল থেকে লাদাখ (Ladakh) গিয়েছিলেন। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে তাঁর এই উদ্যোগ। তাঁর এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সাধুবাদ জানিয়েছেন আসানসোল তথা রাজ্যবাসী।
অটো চালক দেবু মুখোপাধ্যায় বলেন, প্রায় দু মাস ধরে আমার যাত্রাপথে বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রচুর মানুষকে পাশে পেয়েছি। তবে, পায়ে হেঁটে এতটা পথ পাড়ি দেওয়ার জার্নি খুব সহজ ছিল না। অনেকদিন না খেয়ে থাকতে হয়েছে। পায়ে ফসকা পড়ে গিয়েছে। পাশে পেয়েছি। বন্ধুদের। তাঁরা খবর পেয়ে আসানসোল থেকে আমার কাছে গিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা সকলেই আমাদের পাশে ছিলেন। আর রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিভিন্ন মানুষও সাহায্য করেছেন। ফলে, এত কষ্টের পরও এই ভালোবাসা পেয়ে আমি আপ্লুত। আমার ইউব টিউব চ্যানেলে আমার সমস্ত জার্নি আপলোড করেছি। সকলে চাইলে আমার যাত্রাপথ কতটা কষ্টকর ছিল তা বুঝতে পারবেন।
কৃষ্ণা দাস নামে এক বন্ধু বলেন, গত অক্টোবর মাসে আমি লাদাখ গিয়েছিলাম। ও যেতে পারেনি। সেই লাদাখ (Ladakh) ও পায়ে হেঁটে জয় করবে তা ভাবতে পারিনি। মনের জোর থাকলে যে সবকিছু করা সম্ভব তা দেবুকে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে। আমরা এই বন্ধুর জন্য গর্বিত।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ