স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে ভোগান্তি বাড়বে! কেন জানেন?
প্রতীকী ছবি।
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা রাজ্যে কার্যত বিজ্ঞাপনে পরিণত হয়েছে। বারবার এমনই অভিযোগ তোলেন সাধারণ মানুষ। এবার সেই ভোগান্তির তালিকা আরও দীর্ঘ হতে চলেছে বলেই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। শুধু ভোগান্তি নয়। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড (Swasthya Sathi) নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের নয়া নির্দেশে, রোগীদের স্বাস্থ্য নিয়েও জটিলতা বাড়ার আশঙ্কায় চিকিৎসক মহল।
কী নয়া নির্দেশ (Swasthya Sathi) স্বাস্থ্য দফতরের?
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) কার্ডে আর সিটি স্ক্যান, এমআরআই-র মতো জটিল অর্থবহুল শারীরিক পরীক্ষা সহজে করা যাবে না। এই ধরনের শারীরিক পরীক্ষা করার জন্য প্রয়োজন হবে একাধিক অনুমতির। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, সিটি স্ক্যান, এমআরআই-র মতো ব্যয়বহুল শারীরিক পরীক্ষার জন্য খরচ বাড়ছে। বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে। সেই খরচে রাশ টানতেই নতুন একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।
সূত্রের খবর, এবার থেকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আওতায় এই ধরনের শারীরিক পরীক্ষা করাতে হলে হাসপাতালের চিকিৎসককে নিজের পুরো সই, তারিখ ও সিল দিয়ে ব্যাখ্যা করতে হবে। লিখিত ভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে, কেন রোগীর ওই পরীক্ষা জরুরি। তারপরে রোগীর দ্বিতীয় দফায় ওই পরীক্ষা করতে হলে, সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকেও সমস্ত রকম ব্যাখ্যা দিতে হবে। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দিষ্ট কমিটি থাকবে। তারা ব্যাখ্যা যাচাই করে দেখবে। তারা প্রয়োজন বুঝলে, তবেই পরীক্ষার অনুমতি দেবে। তারপরে রোগীর পরীক্ষা হবে। তাছাড়া, কোনও রোগী জরুরি বিভাগে দেখাতে এলেই, তার এই ধরনের পরীক্ষা স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আওতায় করা যাবে না। হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন থাকলে তবেই পরীক্ষা করা যাবে। তাছাড়া, যেসব সরকারি হাসপাতালে পিপিপি মডেলে এই পরীক্ষাগার চলে, সেখানে আলাদা রেজিস্ট্রেশন নথি তৈরি করতে হবে। কোনও রোগীর কেন এই ধরনের পরীক্ষা হচ্ছে, তা বিস্তারিত লিখতে হবে। প্রত্যেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর, তারিখ লিখে সম্পূর্ণ সই করতে হবে। যাতে পরবর্তীতে হিসাব সংক্রান্ত জটিলতা হলে চিকিৎসককে তলব করা যায়।
কোন ভোগান্তির (Swasthya Sathi) আশঙ্কা করছে চিকিৎসক মহল?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এর জেরে রোগীদের ভোগান্তি বাড়বে। আগেই ন্যায্য মূল্যের ওষুধ নিয়ে রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। বারবার অভিযোগ ওঠে, সরকারি হাসপাতালে, বড় বড় ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান থাকলেও, সেখানে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যায় না। এমনকী স্বাস্থ্য সাথী (Swasthya Sathi) কার্ড থাকলেও বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি নিতে রাজি হয় না, এমনও অভিযোগ একাধিকবার উঠেছে। এবার সেই তালিকায় পরীক্ষার সমস্যা যুক্ত হবে বলেই আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তারা জানাচ্ছে, যে ভাবে লাল ফিতের ফাঁস তৈরি হচ্ছে, তাতে সময় মতো রোগীর পরীক্ষা করাই কঠিন হয়ে উঠবে। চিকিৎসকরা জটিলতার ভয়ে হয়তো অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষার পরামর্শ এড়িয়ে চলবেন। যার ফল হবে ভয়ানক। তাছাড়া, অনেক ক্ষেত্রে রোগীকে একাধিকবার সিটি স্ক্যানের মতো পরীক্ষা করাতে হয়। আর সেই পরীক্ষা সময় মতো করা জরুরি। যে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পরিকল্পনা স্বাস্থ্য দফতর করছে, তাতে রোগীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হবে কিনা, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।