সেটিং গুরু নাকি ভক্তকূলের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থায় কাজ করেন এমন অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতেন। বলাই বাহুল্য কিঞ্চিত দক্ষিণার মাধ্যমে।
পুরীর জগন্নাথ মন্দির
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কয়লা-গরু পাচার (Cattle-Coal smuggling scam) কাণ্ডে চাঞ্চল্যকরভাবে নাম জড়াচ্ছে পুরীর (Puri) জগন্নাথ মন্দিরের (Jagannath Temple) এক দয়িতাপতির (Daitapati)। তিনি নাকি তৃণমূলী মহলে ‘সেটিং গুরু’ (TMC Setting Guru) নামে পরিচিত। অতীতে সিবিআই-ইডি-আয়করের (ED-CBI-Income Tax) নোটিস এলেই তৃণমূলের (TMC) অনেক নেতাই এই সেটিং গুরুর কাছে হাজির হতেন। তিনি নাকি তাঁর ভক্তকূলের মধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থায় কাজ করেন এমন অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতেন। বলাই বাহুল্য কিঞ্চিত দক্ষিণার মাধ্যমে।
কিন্তু সেই সেটিং গুরুর যাবতীয় কারবার নাকি এখন আর কাজ করছে না। তৃণমূলের অন্দরের চর্চা, সম্প্রতি যে কজন বড় মাথা সিবিআই, ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁরাও সেটিং গুরু দয়িতাপতির শরণাপন্ন হয়েছিলেন। এবার অগ্রিম দক্ষিণাও দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও শেষ রক্ষা হয়নি। তৃণমূলের লোকজন এখন সেই সেটিং গুরুর চ্যালা চামুণ্ডাদের খুঁজতে শুরু করেছেন। এমনই একজন বিপদ বুঝে পূরী পালিয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: সাত মাসে তিন বার দুবাই যাত্রা অভিষেকের, ফিসফিসানি দলের অন্দরেই
কে এই সেটিং গুরু?
তৃণমূলের অন্দরের খবর, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দয়িতাপতির ওড়িশার চেয়েও কলকাতায় ভক্ত সংখ্যা বেশি। তিনি কলকাতায় এলে ডেরা বাঁধেন গড়িয়াহাটের কাছে। সেখানেই তৃণমূলের হেভিওয়েটরা তাঁর কাছে ভিড় করেন। কারণ, কালীঘাট চত্বরে বছরে দু-তিনবার মহাযজ্ঞ করে থাকেন তিনি। ফলে সর্বোচ্চস্তরে এক ফোনেই নানা কাজ করিয়ে দেওয়া নাকি তাঁর বাঁ হাতের খেলা। তৃণমূলের বহু নেতাকে টিকিট দেওয়া, কাউন্সিলারকে চেয়ারম্যান বানানো, বিধায়ককে মন্ত্রী বানানোর হাতযশ তাঁর রয়েছে। সেই সূত্রেই সেটিং গুরুর কাছে ভিড়ও হয়।
এবারও ইডি-সিবিআইয়ের নোটিস পাওয়া ভারী নেতারা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। দক্ষিণ শহরতলির কোনও এক কাঞ্জিলালের কাছে দক্ষিণাও পৌঁছে দিয়েছিলেন তাঁরা। এমনকি সিবিআই-ইডি ম্যানেজ হয়ে গিয়েছে বলেও সেটিং গুরু দাবি করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এবার ইডি-সিবিআই বেশি সক্রিয়। অন্যান্যবার সিবিআই জেরার জন্য ডেকে গ্রেফতার করত। এবার রীতিমতো বাড়ি গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলে ভারী নেতাদের গ্রেফতার করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আরও কিছু নেতা ও পুলিশ কর্তা সেই তালিকায় আছে বলে শোনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: গরু পাচারের ৪২ ঘাটে যুক্ত ৬২ আইসি-ওসি এবার সিবিআইয়ের আতসকাচে
কিন্তু সেটিং গুরুর কাছে দক্ষিণা পৌঁছে যাওয়ার পরও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সক্রিয়তা না কমায় তৃণমূল নেতারা কাঞ্জিলালের সন্ধান শুরু করেছে। শোনা যাচ্ছে দিন কয়েক আগে ওই ব্যক্তি রাজ্য ছেড়ে শ্রীক্ষেত্রের উদ্দেশে পালিয়েছে। কিন্তু তৃণমূল নেতাদের আফসোসের শেষ নেই। এই খবর সিবিআই-ইডির কাছেও পৌঁছেছে। ফলে সেটিং গুরুর কারবার নিয়ে নজরদারিও শুরু করেছে তারা।