img

Follow us on

Saturday, Nov 23, 2024

Cattle Smuggling Case: নিশুতি রাতে পাচার হত পাল পাল গরু, কীভাবে চলত অপারেশন?

কেবল শোনা যেত গরুর খুরের ঠক ঠক শব্দ। আর মাঝে মধ্যে পাচারকারীর হ্যাট, হ্যাট আওয়াজ...

img

গরুর পাল। ফাইল ছবি

  2022-08-13 18:33:08

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অপেক্ষা সূয্যি ডোবার। তার পরেই অন্ধকার হয়ে যেত বীরভূম (Birbhum)-মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বিস্তীর্ণ অংশ। অন্ধকার ফুঁড়ে ছড়ি হাতে বের হত গরু পাচারকারীরা। নিশুতি রাতে কেবল শোনা যেত গরুর খুরের ঠক ঠক শব্দ। আর মাঝে মধ্যে পাচারকারীর হ্যাট, হ্যাট আওয়াজ। এভাবেই দিনের পর দিন পাচার হয়ে যেত পাল পাল গরু। দেশের সীমান্ত পেরিয়ে সেই গরু চলে যেত বিভুঁইয়ে, বাংলাদেশে (Bangladesh)। তারপর ভায়া কষাইখানা হয়ে সটান খানদানিদের টেবিলে টেবিলে। এই গরু পাচার চক্রেই নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandol)। বিএসএফের (BSF) এক শীর্ষ কর্তা সহ আরও কয়েকজনের। 

কিন্তু কীভাবে চালানো হত গোটা অপারেশন? আসুন জেনে নেওয়া যাক, সেই গল্পই। সিবিআই সূত্রে খবর, যেসব গরু পাচার হত, তার সিংহভাগই আসত পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থান থেকে। যেসব গরুর প্রজনন ক্ষমতা নেই, বয়সের কারণে বাতিল হয়ে যাওয়া বলদই মূলত ঝাড়খণ্ড সীমান্ত হয়ে পাচারকারীদের হাত ধরে পৌঁছাত বীরভূমে। এই বীরভূমের ইলামবাজারে বসে বিরাট গরুর হাট। হাট চালাত গরু ব্যবসায়ী আবদুল লতিফ। ব্যবসার খাতিরেই লতিফ সম্পর্ক রেখে চলত জেলার সর্বেসর্বা অনুব্রতর সঙ্গে। হাট থেকে ফের গরু চলে যেত পাচারকারীদের হাতে। ট্রাকে করে সেই গরু বীরভূমের ফুটিসাঁকো বা বাদশাহি রোড ধরে সটান চলে যেত মুর্শিদাবাদে। 

সেখানেই গরু নিয়ে পাচারকারীরা অপেক্ষা করত সূয্যি ডোবার। কেবল সূর্য অস্ত গেলেই হবে না। পাচারকারীদের অপেক্ষা করতে হত বিএসএফ এবং কাস্টমসের একাংশের সবুজ সংকেতেরও। তারাই পাচারকারীদের জানিয়ে দিত, কোন দিন কখন লাইন খোলা হবে। নির্দিষ্ট দিনে এক কিংবা দু ঘণ্টার জন্য চোখে ঠুলি পরে বসে থাকত বিএসএফ। তার পর কখনও স্থলপথে কখনও বা জলপথে হাত বদল হয়ে যেত গরুর পাল। বাংলাদেশের পাচারকারীদের হাতে গরু তুলে দিতে পারলেই কেল্লাফতে। মিলবে মোটা অঙ্কের টাকা। পাঁচ হাজার টাকার গরুই হাত ফের হয়ে বিক্রি হয় আট থেকে দশগুণ বেশি দামে।
আরও পড়ুন : গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডল! নিয়ে যাওয়া হতে পারে সিবিআই ক্যাম্প অফিসে
লাভের কড়ি মোটা হলেও, সে টাকার সবটা ভোগে লাগত না পাচারকারীদের। টাকার বখরা দিতে হত পুরো চ্যানেলে থাকা লোকজনকে। যেসব থানার ওপর দিয়ে আসত গরুর পাল, সেখানকার থানার কর্তা এবং শাসকদলের নেতাদের দিতে হত নজরানা। যিনি যেমন মাপের নেতা, তাঁর পকেটে ঢুকবে তেমন পরিমাণ টাকা। শুধু নেতাদের নজরানা দিলেই যে সব কিছু মসৃণ গতিতে চলবে, তা তো নয়! তাই বখরার একটা অংশ দিতে হত বিএসএফ কর্তাদের একাংশকেও। কারণ তাঁরাই ‘গোপন’ সীমান্ত  নির্দিষ্ট সময়ে ‘ওপেন’ করে দেন। তাই গরু-পাচারের টাকার ভাগ পেতেন বিএসএফের কমান্ডান্ট পর্যায়ের আধিকারিক, ডিআইজি কিংবা আইজি স্তরের একাংশও। এঁদের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে বিএসএফ। গ্রেফতার হয়েছেন বিএসএফ কমান্ডান্ট সতীশ কুমার, জেডি ম্যাথু। গরু পাচার মামলায় ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত। গ্রেফতার হয়েছে তার দেহরক্ষী সায়গল হোসেনও। গ্রেফতার হয়েছে মূল অভিযুক্ত এনামূল হক। তবে এখনও অধরা হাটের মালিক লতিফ।

আরও পড়ুন : গ্রেফতার হতে না হতেই কেষ্টকে ঝেড়ে ফেলল তৃণমূল!

এখনও নিয়মিত বসে ইলামবাজারের হাট। বিক্রি হয় গরুও। তবে অনুব্রতরা গ্রেফতার হওয়ার পর ভয়ে সিঁটিয়ে গিয়েছে পাচারকারীরা। তাই বিক্রি কমেছে গরুর। কমেছে দামও। কাজলকালো চোখে জল নিয়ে নতুন মালিকের অপেক্ষায় হা পিত্যেশ করে দাঁড়িয়ে থাকে হাটের গরু। 

 

Tags:

anubrata mondal

BSF

Bengali news

Cattle smuggling case

cow smuggling racket

Smuggling news


আরও খবর


ছবিতে খবর