অনুব্রত তিহার জেলে, বোলপুরে তাঁর ভাইয়ের কী শোচনীয় অবস্থা দেখুন!
বোলপুর থানার মেঝেয় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে কাতরাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডলের ভাই। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দৃশ্যটা ভাবুন। বীরভূমের এক সময়ের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) ভাই বোলপুর থানার মেঝেয় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে কাতরাচ্ছেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাতর আর্জি জানাচ্ছেন। সামনেই বসে দুই পুলিশকর্মী। তাঁরা যেন শুনেও শুনছেন না। এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল বোলপুর, যে বোলপুরে পুলিশ অফিসারদের দাঁড় করিয়ে ধমক দিতে দেখা গেছে অনুব্রতকে। যে বোলপুরে এক সময় গাছের পাতা নড়তে গেলেও নাকি অনুব্রত মণ্ডলের অনুমতি লাগত। যে বোলপুরে অনুব্রতই ছিলেন শেষ কথা।
কী ঘটনা ঘটেছিল?
বর্তমানে গরু পাচার মামলায় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) তিহার জেলে বন্দি৷ বৃহস্পতিবার তাঁর ভাই সুমিত মণ্ডলকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, অনুব্রত মণ্ডলের নিচুপট্টির বাড়ি সংলগ্ন বোলপুরের বাড়িপুকুরের কাছে বিসর্জনের সময় তাঁকে মারধর করে এলাকার দুই যুবক। মেরে তাঁকে রক্তাক্ত করে দেওয়া হয়। সেই অবস্থায় রাতেই বোলপুর থানায় আসেন তিনি। কিন্তু, থানায় লিখিত অভিযোগ করা সত্ত্বেও তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়নি পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ৷ অনুব্রতর মণ্ডলের ভাই সুমিতের অভিযোগ, "থানায় এসে সবটা জানানো সত্ত্বেও পুলিশ আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি৷ অনুব্রত মণ্ডলের ভাই বলেই আমাকে মারধর করা হয়েছে। আর যেহেতু আমার দাদা তিহারে বন্দি, তাই পুলিশ অসহযোগিতা করছে। আমি প্রচণ্ড অসুস্থতা বোধ করছি৷ এটা বলার পরেও পুলিশ আমাকে হাসপাতালে নিচ্ছে না।" এদিন, থানার মধ্যেই রক্তাক্ত অবস্থায় দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকতে দেখা যায় অনুব্রত মণ্ডলের ভাই সুমিত মণ্ডলকে৷ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য চিৎকার করতে দেখা যায় তাঁকে। তাও তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়নি বোলপুর থানার পুলিশ৷ এমনকি, কর্তব্যরত অফিসারকে দেখা যায় পোশাকহীন অবস্থায় ডিউটি করতে।
মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ
অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) ভাই সুমিত মণ্ডল বলেন, "বিসর্জনের সময় কামরুল আলি ও আকাশ কুণ্ডু আমাকে আক্রমণ করে। আমাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। আমার দাদা আজ তিহারে বন্দি তাই আমাকে মারধর করেছে৷ আর তাই পুলিশ আমাকে অসহযোগিতা করছে৷"
কী বললেন অনুপম হাজরা?
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা বলেন, "রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এক সময়ের খুব কাছের ভাই এবং দক্ষ সংগঠক ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। সেই অনুব্রত মণ্ডলের ভাই রক্তাক্ত অবস্থায় থানার মেঝেতে পড়ে রয়েছেন এবং পুলিশ তাঁকে কোনও রকম সাহায্য করছে না। তাঁর কাতর আর্তিকে এক কথায় অবজ্ঞা করছে। এখান থেকে শিক্ষনীয় বিষয় একটাই, যারা বোলপুরে বা রাজ্যের অন্যত্র তৃণমূল কংগ্রেসটা করছেন, তাঁরা একটু ভেবেচিন্তে করবেন। কারণ মমতা কখন যে আপনার ওপর থেকে হাতটা তুলে নেবে, আপনি ধরতেও পারবেন না। উনি থাকতে ভয়ও নেই, ভরসাও নেই। এই ঘটনায় তা প্রমাণ হয়ে গেল।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।