এই জলই বাধ্য হয়ে খেতে হচ্ছে মানুষকে, যার জেরে অনেক রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে...
এক-দুদিন নয়, এই সমস্যায় বহুদিন ধরেই ভুগতে হচ্ছে স্থানীয়দের (ছবি-নিজস্ব)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কালিয়াচক ১ নং ব্লকের সিলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খালতিপুর সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে টিউবওয়েলের জলে ব্যাপক হারে আয়রন থাকায় মানুষ প্রচণ্ড ভোগান্তির শিকার। সবচেয়ে বড় কথা, এলাকার কোনও স্থানেই আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। ফলে এই জলই বাধ্য হয়ে খেতে হচ্ছে মানুষকে। যার জেরে অনেক রোগ বাসা বাঁধছে শরীরে। সামান্য জল খেতে গিয়ে হ্যাপাও কম পোহাতে হচ্ছে না। জলকে ফিল্টার করে অন্য পাত্রে রেখে তারপরই খেতে হচ্ছে। যে বালি দিয়ে ফিল্টার করা হচ্ছে, সেই বালি সাদা থেকে লাল হয়ে যাচ্ছে। এক-দুদিন নয়, এই সমস্যায় বহুদিন ধরেই ভুগতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, এই জলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় তা তাঁরা বাধ্য হয়ে বালি, পাথর, মশারি ইত্যাদির মাধ্যমে ফিল্টার করে তবেই খাচ্ছেন। এই জল খেয়ে অনেকের পেটে পাথর হচ্ছে, চর্মরোগও দেখা দিচ্ছে। ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁরা বলেন "এটা জল না বিষ পান করছি?" স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। তাঁরা অতি দ্রুত এর প্রতিকার চান। পরিষ্কার জলের ব্যবস্থা করার সঙ্গে নিকাশি নির্মাণ করার দাবিও তাঁরা তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, অনেক নেতা, আধিকারিক বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। তাই এই বিষজলই তাঁদের পান করতে হচ্ছে। মাসে দুবার করে স্থানীয় হাসপাতালে তাঁদের যেতেই হয় চিকিৎসার জন্য। সব মিলিয়ে খুবই সমস্যার মধ্যে আছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: হুগলির ষাটোর্ধ্ব মহিলাকে কামাখ্যায় নরবলি! চারবছর পরে পুলিশের জালে ৫ আততায়ী
কালিয়াচক ১ নম্বর ব্লকের বিডিও সেলিম হাবিব সর্দার বলেন, কালিয়াচকের তিনটি ব্লক আর্সেনিক অধ্যুষিত। তাই এখানে আর্সেনিক প্রতিরোধ বিভাগ বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে। আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের দাবিতে। বিষয়টি আমি ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।" তাছাড়া তিনি গ্রামবাসীদের সঙ্গে একসঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
কী বলছেন ওই এলাকার বিরোধী নেতা?
ওই এলাকার বিরোধী নেতা বলেছেন, "এখানে উন্নয়নের নামে প্রহসন হচ্ছে। মানুষকে এই আর্সেনিকযুক্ত জলই খেতে হচ্ছে। কোনও রকম ব্যবস্থা নেয় না সরকার। আর্সেনিকমুক্ত জলের ব্যবস্থা তারা করতে পারেনি। এই সরকার শুধু লুট করতে এসেছে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য দরকার জল। আর সেই পানীয় জলের ব্যবস্থাটুকুও করতে পারেনি তারা এত দিন পরেও।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।