Trinamool Congress: তৃণমূল কংগ্রেসের ঝোলা থেকে একের পর এক দুর্নীতি বেরিয়ে আসছে!...
আবাস যোজনার বাড়ি (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কোথাও একজনের নাম রয়েছে পাঁচবার! আবার কোথাও বিলাসবহুল বাড়ি ও প্রচুর সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও আবাসের তালিকায় উঠেছে নাম। জেলায় জেলায় আবাস যোজনায় (Awas Yojana) দুর্নীতির ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসছে। অভিযোগ উঠছে, প্রকৃত উপভোক্তারা যেখানে টাকা পাচ্ছেন না, সেখানে আবাসের টাকা পাচ্ছেন শাসক দলের নেতারা। এনিয়ে এই মুহূর্তে তোলপাড় গোটা রাজ্য। ফলে, জেলায় জেলায় তৃণমূল (Trinamool Congress) সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া-২ নম্বর ব্লকের জগদানন্দপুর গ্রামের সুদেষ্ণা রায় নামে এক বাসিন্দার আবাস যোজনার (Awas Yojana) তালিকায় তাঁর নাম এসেছে পাঁচবার! কিন্তু, আরও বড় কেলেঙ্কারি সামনে এল এবার। যখন সরকারি আধিকারিকরা সমীক্ষা করতে গিয়ে দেখলেন, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে সুদেষ্ণা রায় নামে কোনও মহিলার অস্তিত্বই নেই। আর এতেই রাজনৈতিক মহলের একাংশের প্রশ্ন, আবাস যোজনার টাকা লুট করতে কি এবার ভূতুড়ে উপভোক্তা তৈরি করা হচ্ছে? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তালিকায় যে গরমিলের অভিযোগ উঠেছে, তার সমাধান করা হবে। তালিকা খতিয়ে দেখে, সমস্ত ভুয়ো নাম যোগ হয়েছে। সেই সমস্ত নাম বাতিল করা হবে। বিজেপি নেত্রী সীমা ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের ঝোলা থেকে একের পর এক দুর্নীতি বেরিয়ে আসছে। আবাস যোজনার বাড়ি প্রতি তৃণমূল ২০ হাজার টাকা করে তুলছে। ফলে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলাবাজি চলছে এই আবাস যোজনার বাড়ি থেকে। তাই ভুয়ো নাম ঢুকিয়ে দিয়ে তারা টাকা তোলার কারবার ফেঁদেছে। সুদেষ্ণা রায় নামে এই পঞ্চায়েতে কাউকে পাওয়াই যায়নি।” জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের দাবি, “প্রশাসনিক ব্যাপার এটা। কারও নামে ভুলবশত বাড়ি এলে সেই নাম বাতিল হবে। যাঁরা পাওয়ার যোগ্য, তাঁরাই বাড়ি পাবেন।” অন্যদিকে, যোগ্যকে বঞ্চনা, যাঁর পাকা বাড়ি, তাঁকেই আবাস? পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডিতে ঝালদা-বাঘমুণ্ডি রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান যোগ্যরা। মূলত দুর্নীতির অভিযোগে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের।
আরও পড়ুন: ‘‘তৃণমূলের রুচিবোধ নিম্নমানের, থ্রেট কালচারের জনক মমতা’’, তোপ শুভেন্দুর
পশ্চিম বর্ধমানে আবার আবাসের (Awas Yojana) তালিকায় নাম ঢুকেছে রেশন ডিলারের। জানা গিয়েছে, জেলার কাঁকসার বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েতের জামদোহা এলাকায় থাকেন মৃণালকান্তি ঘোষ। তিনি আবার বিদবিহার গ্রামের রেশন ডিলার। তিনি থাকেন বিদবিহারের জামদহ এলাকায় এই বিলাসবহুল বাড়িতে। তারপরেও কীভাবে বাংলা আবাস যোজনায় নাম ঢুকল ওই ব্যক্তির সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। বিদবিহার গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে যখন সমীক্ষা হয়েছিল তখন যে ৭৭৪ জনের নাম তালিকায় ছিল, সেই তালিকা গ্রাম পঞ্চায়েতের সার্ভার থেকে মুছে গিয়েছিল। সম্প্রতি সেগুলি আবার ফিরে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, ওই তালিকায় অধিকাংশ নামের ব্যক্তিরই রয়েছে পাকা বাড়ি। সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আবাসের তালিকায় নাম থাকা রেশন ডিলারকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি তড়িঘড়ি বাইক নিয়ে এলাকা ছাড়েন। কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই ধরনের কারও নাম আবাসের তালিকায় থাকার কথা নয়। যারা পাওয়ার যোগ্য তাদেরকেই দেওয়া হবে বাড়ি। সমালোচনায় সরব বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা সাংগঠনিকজেলার বিজেপির সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “সবাই বুঝতেই পারছে বাংলার কী হাল! যারা পাওয়ার যোগ্য তারা থাকছে মাটির ঘরে, আর যাদের রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ি তাদের জাতি বদল করে আবাসের তালিকায় নাম দেওয়া হচ্ছে।” রাজ্যের পঞ্চায়েত গ্রামোন্নয়ন ও সমবায় দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “যারা বাংলা আবাস যোজনার যোগ্য ব্যক্তি তাদেরকেই দেওয়া হবে আবাসের পাকা বাড়ি।”
এবার আউশগ্রাম ১ ব্লকের দিগনগর ২ পঞ্চায়েতেও আবাসের (Awas Yojana) অনিয়মের অভিযোগ সামনে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে আবাসের তালিকায় নাম রয়েছে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীর। যদিও প্রধান সবিতা মাহাতো তাঁর স্বামী পরশুরাম মাহাতোর নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য ব্লক প্রশাসনের কাছে চিঠি লিখেছেন। একইভাবে ওই পঞ্চায়েতেরই এক তৃণমূল ছাত্রনেতার নাম জড়িয়েছে। এই অবস্থায় আবাসের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। জানা গিয়েছে, ওই ছাত্র নেতার নাম হল তন্ময় গোস্বামী। তিনি আউশগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি এবং দিগনগর ২ পঞ্চায়েতের গোপীনাথবাটীর বাসিন্দা। অভিযোগ উঠেছে আবাসের তালিকায় নাম রয়েছে তাঁর বাবার। তবে তিনিও প্রধানের মতোই একইভাবে বিডিওকে চিঠি দিয়ে তালিকা থেকে বাবার নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। তাঁদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন, বিডিও (আউশগ্রাম ১) শেখ কামরুল ইসলাম। এ বিষয়ে বিডিও জানান, সবকিছু খতিয়ে দেখার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।