মালদায় অমানবিক কালাহান্ডির ছায়া! রাস্তা খারাপ, মিলল না অ্যাম্বুল্যান্স..
খাটিয়ায় করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মৃত দেহ। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মালদায় (Malda) খাটিয়ায় দড়ি বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ২৪ বছরের রোগীকে। হ্যাঁ রাস্তা খারাপ বলে অ্যাম্বুল্যান্স মেলেনি। হাসপাতালে নিয়ে যেতে পথেই মৃত্যু হয় ওই রোগীর। এই অমানবিক ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিল ওড়িশার কালাহান্ডি দানা মাজির কথা। মৃত স্ত্রীর দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া ছিলনা বলে, মাথায় করে মৃত স্ত্রীর দেহ নিয়ে আসতে হয়েছিল তাঁকে। আবার এই রাজ্যেই এবছরেই জলপাইগুড়িতে মৃত ছেলের দেহ বাড়িতে আনার জন্য গাড়ি মেলেনি। শুধু তাই নয় কালিয়াগঞ্জের মৃত সন্তানের দেহ ব্যাগে করে বাড়িতে ফিরতে হয়েছিল বাবাকে। তিনিও পাননি অ্যাম্বুল্যান্স। এবার খাটিয়ায় করে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র। সভ্যসমাজের কাছে অত্যন্ত লজ্জার ঘটনা বলে মন্তব্য করছেন সমাজকর্মীরা।
মালদার বামনগোলা ব্লকের, গোবিন্দপুর মহেশপুর অঞ্চলের মালডাঙা গ্রামের এই মধ্যযুগীয় বর্বরতার ছবি উঠে আসলো। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই গ্রামেরই গৃহবধূ মামনী রায় (১৯)। বছর কয়েক আগে এলাকার বাসিন্দা কার্তিক রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। সম্প্রতি তিনি জ্বরে ভুগছিলেন বলে খবর। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করেন। অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে খারাপ রাস্তার কারণে টাকা বেশি চেয়ে যেতে রাজি হয়নি অ্যাম্বুল্যান্স। অবশেষে খাটিয়াতে শুইয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। বাঁচানো যায়নি মামনীকে। পথেই মৃত্যু হয়েছিল তাঁর।
বাড়িতে (Malda) মৃত মামনীর ২ বছরের এক সন্তানও রয়েছে। রাস্তার খারাপে জন্য প্রাণ গেল। ঠিক সময়ে পৌঁছালে হয় তো প্রাণ বেঁচে যেতো। অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য হাসপাতালে ফোন করলে রাস্তা খারাপের জন্য আসতে চায়নি। এই পরিপ্রেক্ষিতে কোনও বুদ্ধি না পেয়ে পরিবারের লোকেরা খাটিয়াতে দড়ি বেঁধে ঘাড়ে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এমন একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যাপক ভাইরাল হয়। অত্যন্ত অমানবিক নির্মম ভিডিও।
সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় রাস্তার জন্য বামনগোলা (Malda) বিডিও অফিসে এলাকাবাসী বহুবার গিয়েছিলেন। বিডিও সাহেব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিন্তু রাস্তা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে খাটিয়াতে করে নিয়ে যেতে হয় রোগীকে। রাজ্যের গ্রন্থাগার দপ্তরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেন, "মৃত্যুর জন্য খারাপ রাস্তা দায়ী নয়, দায়ী তাঁর ভাগ্য। ভাগ্যে ছিল বলেই তিনি মারা গেছেন।" আবার এবিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সহ সভাপতি বলেন, “এই ঘটনা আমার জানা নেই সঠিক ভাবে। তবে রাজ্য সরকার যেভাবে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন এরকম কোনও ঘটনা ঘটার কথা নয়, যদি ঘটে থাকে তাহলে খতিয়ে দেখবো বিষয়টি।
অপরে প্রশাসনের এই অমানবিক আচরণে বিজেপি তীব্র সমালোচনা করেছে শাসক দল তৃণমূলকে। বিজেপির তরফে জেলার নেত্রী (Malda) বিনা কীর্তনীয়া বলেন, “এতো এতো রাস্তা হচ্ছে পথশ্রী কোথায়? সরকার অত্যন্ত অমানবিক। রাস্তা নেই, অ্যাম্বুল্যান্স নেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।