Cooch Behar: এপারে আসতে চেয়ে কোচবিহার সীমান্তে বাংলাদেশিদের ভিড়
ভারতে আসার জন্য জলে নেমে আর্জি বাংলাদেশিদের (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অশান্ত বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis)। গত জুলাই মাস থেকে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি দেশজুড়ে। হাসিনা পদত্যাগ করার পর লাগামছাড়া অত্যাচার শুরু হয়েছে হিন্দুদের ওপর। আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীরা আতঙ্কিত। এই আবহের মধ্যে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় চেয়ে সীমান্তে জড়ো হচ্ছেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। সকলেই ভারতে আশ্রয় চান। তাঁদের সীমান্তেই আটকে দিয়েছে বিএসএফ। তবে, জিরো পয়েন্টে দাঁড়িয়েই থাকেন ওই শরণার্থীরা। কেউ কেউ আওয়ামি লিগের নাম নিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। কেউ কেউ 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি দেন। শুক্রবার এমনই দৃশ্য চোখে পড়ল কোচবিহারের (Cooch Behar) শীতলখুচির পাঠানটুলি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে।
বুধবার জলপাইগুড়ির বেরুবাড়িতে বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis) সীমান্তে জড়ো হয়েছিলেন অনেক মানুষ। ওই স্থানে কাঁটাতার নেই। বিএসএফ জানায়, তাঁরা জিরো পয়েন্টে অপেক্ষা করছিলেন। সকলে ভারতে ঢোকার অনুমতি চান। যদিও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে কথা বলে তাঁদের ফেরত পাঠায় বিএসএফ। শুক্রবার দেখা যায়, আরও বেশি সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আসার জন্য শীতলখুচির পাঠানটুলিতে জড়ো হয়েছেন। বিএসএফ অবশ্য তাঁদের সীমান্তের ফেন্সিংয়ের আগেই আটকে রাখে। তখনই জিরো পয়েন্টে মাটিতে বসে হাসিনার সরকারের সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। বিএসএফ সূত্রে খবর, বাংলাদেশের লালমণিরহাট জেলার গাইবান্দা, পশ্চিম গোতামারি, পূর্ব গোতামারি, ডাকুয়াটারি এলাকা থেকে ওই বাসিন্দারা এসেছেন।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বাংলাদেশি সীমান্তের পাশে ডাকুয়াটারির খর্ব নদীর পারে জমায়েত হন ওই বাংলাদেশিরা। নদীর জলে নেমে হাসিনার সমর্থনে স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি ওই বাংলাদেশিরা 'জয় ভারত মাতা', 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি দিতে থাকেন। কেউ কেউ চিৎকার করে বলেন, ‘‘বাড়ির মা, বোনেদের তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে।’’ শেষ পর্যন্ত অবশ্য ভারতে প্রবেশ করতে পারেননি তাঁরা। সীমানায় মোতায়েন থাকা বিএসএফের ১৫৭ ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা তাঁদের জিরো পয়েন্টে আটকে দেন। পরে বিএসএফ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ওই স্থানে প্রায় হাজার জন ছিলেন। প্রত্যেকে ভারতে ঢুকতে চান। তবে, জওয়ানেরা তাঁদের কর্তব্যে অবিচল ছিলেন। তাঁরা বিজিবি-র সঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেন ওই বাংলাদেশি (Bangladesh Crisis) নাগরিকদের।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আক্রান্ত হিন্দুরা, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন মোদি সরকারের
গৌড়বঙ্গের মালদা-দিনাজপুর ও প্রায় ৭০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। সেই সব এলাকাতেও সীমান্ত সিল করে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় আশঙ্কা রয়েছে ভারতে অনুপ্রবেশেরও। সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে বিএসএফ জওয়ানের সংখ্যা। এতেও সন্তুষ্ট নয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাই মালদা ও দুই দিনাজপুর জেলার সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে ভারতীয় সেনাও। তিন জেলায় নিযুক্ত বিএসএফের ব্যাটালিয়নকে হেলিপ্যাড তৈরি রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। এ নিয়ে রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগকেও সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। উত্তরবঙ্গে সীমান্তে এখন বাংলাদেশি (Bangladesh Crisis) নাগরিকরা জড়ো হয়েছেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সীমান্তগুলি কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার (Cooch Behar), উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মালদা, সমস্ত জেলায় বিএসএফ-এর পাশাপাশি সেনাও মোতায়েন করা হয়েছে কিছু সীমান্তে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি, মালদার মহদিপুর ও উত্তর দিনাজপুরের রাধিকাপুর সীমান্তে দল গঠন করে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সেনার দলগুলি সীমান্তে অস্থায়ী ছাউনিতে থাকছে। তেমন কোনও ঘটনা ঘটলে যাতে দ্রুত মোকাবিলা করা যায় তার জন্যই আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।