১৯৯৮ সালে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল বাঁকুড়ার বিভিন্ন স্থানকে জোড়া হবে রেলের মানচিত্রে
প্রতীকী ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রেলের অভিযোগ দীর্ঘদিনের, বাজেট বরাদ্দ করা সত্ত্বেও শুধুমাত্র জমি জটের কারণেই নাকি প্রকল্পগুলি আটকে থাকছে। কয়েকদিন আগেও রেল (Indian Railways) রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের বিরুদ্ধে এই অসহযোগিতার অভিযোগ তোলে। এমন প্রকল্পও রয়েছে রাজ্যে যেগুলো গত ৫০ বছর ধরে আটকে রয়েছে। কোনও সুরাহা হয়নি। এরমধ্যে কতগুলি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন। সেগুলিও আপাতত বিশ বাঁও জলে। রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকরা বলছেন, রাজ্যের ঘোষিত নীতিই হল কোনও প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা যাবেনা। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে নাকি ছাড়ও রয়েছে বলছেন ভূমি দফতরের আধিকারিকরা। সেই বিশেষ ক্ষেত্র রেল কেন নয়? এমন প্রশ্নও উঠছে কোনও কোনও মহল থেকে।
১৯৯৮ সালে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল বাঁকুড়ার বিভিন্ন স্থানকে জোড়া হবে রেলের মানচিত্রে। ঠিক হয়েছিল মোট ৩০৫ কিমি রেললাইন বসানোর কাজ করবে রেলমন্ত্রক। তারমধ্যে গত ২৫ বছর ধরে ১১৬ কিমি রেলপথ বসানোর কাজ হয়েছে। সমগ্র প্রকল্পের জন্য বাজেট ধরা হয়ে ৩,৭৬৫ কোটি টাকা। তারমধ্যে ৪৮৫ কোটি টাকা খরচও হয়েছে কয়েকটি প্রকল্পের জন্য। এই প্রকল্পের অন্যতম অংশ বাঁকুড়া থেকে মুকুটমণিপুর অবধি ৪৮ কিমি নতুন লাইন সম্প্রসারণ, যা আজ বিশবাঁও জলে। মূলত জমি জটের কারণেই থমকে রয়েছে এই প্রকল্প। রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র মুকুটমণিপুর। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফিবছর আনাগোনা লেগেই থাকে ভ্রমণপিপাসুদের। বাঁকুড়া থেকে তাঁদের আড়াই তিনঘণ্টা বাস জার্নি করে পৌঁছাতে হয় মুকুটমণিপুর। আবার মুকুটমণিপুরের মৎস্য ব্যবসায়ীদেরও অনেক অসুবিধায় পড়তে হয় জেলা সদরের সঙ্গে রেলযোগাযোগ না থাকার কারণে।
বাঁকুড়ার বাসিন্দা গোবিন্দ ধীবর, নবীন মাজিরা বলেন, ছোট থেকেই শুনে আসছি এই রেলপথ সম্প্রসারণের কথা। কিন্তু হচ্ছে আর কই! মুখ্যমন্ত্রীও নানা সময়ে ঘোষণা করেছেন উদ্যোগ নেবেন বলে! কিন্তু আর নেননি। এটা হলে পর্যটনকেন্দ্র মুকুটমণিপুরের সঙ্গে বাঁকুড়া যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন উন্নয়ন হবে তেমনি মুকুটমণিপুরের মৎস্য ব্যবসায়ীরা অল্পসময়ে জেলা সদরে পৌঁছাতে পারবেন। আর্থিকভাবে উন্নয়নও হবে সমগ্র মুকুটমণিপুরের।
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-১১): ১৮ বছর ধরে আটকে সিউড়ি-প্রান্তিক রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-১০): আপাতত ঠাণ্ডা ঘরে আরামবাগ-বোয়াইচণ্ডী রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৯): ১৩ বছর ধরে আটকে দিঘা-জলেশ্বর প্রকল্পের কাজ
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৮): থমকে রয়েছে কালিয়াগঞ্জ বুনিয়াদপুর রেলপ্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৭): তেরো বছরেও সম্পূর্ণ হয়নি বালুরঘাট-হিলি রেলপ্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৬): একযুগ অতিক্রান্ত! বিশ বাঁও জলে হাসনাবাদ-হিঙ্গলগঞ্জ রেলপ্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৫): দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় বিশ বাঁও জলে ৩ প্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৪): থমকে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৪ প্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৩): প্রায় ৪০ বছরেও সম্পূর্ণ হল না উত্তর দিনাজপুর জেলার ৩ প্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-২): প্রায় ৫০ বছরেও শেষ হলনা হুগলির ৩ প্রকল্প
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
Tags: