মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে না পেরে ভাতে মারার ফতোয়া!
বাঁ দিকে বিজেপি প্রার্থী কুমারেশ সাধু খাঁ এবং ডান দিকে অভিযুক্ত তৃণমূল উপ-পৌরপ্রধান তাপস দাশগুপ্ত। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রীতিমতো ফতোয়া দিয়ে দুই বিজেপি কর্মীর 'ট্রেকার' অনির্দিষ্ট কাল স্ট্যান্ডে ঢোকা নিষিদ্ধ করলেন তৃণমূল নেতা। ঘটনায় আবার নাম জড়িয়েছে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের বারাসত জেলার (North 24 Parganas) সভাপতি তথা স্থানীয় পৌরসভার উপ-পৌরপ্রধান তাপস দাশগুপ্তের। তিনি দুই বিজেপি কর্মীকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে সকলের সামনে হুমকি দিয়ে বলেন, "ট্রেকার স্ট্যান্ডে নিষিদ্ধ থাকবে অনির্দিষ্টকালের জন্য!"। এমনটাই অভিযোগ। আর তাকে ঘিরেই ভোটের মুখে কার্যত সরগরম হয়ে উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা অঞ্চল।
সূত্রের খবর, বারাসতের (North 24 Parganas) দুই চালকের মধ্যে কুমারেশ সাধু খাঁ এবারের ভোটে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গ্রাম সংসদের আসন থেকে। অন্যজন অবশ্য নিজে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলেও তাঁর স্ত্রী বিজেপির হয়ে লড়ছেন অন্য একটি গ্রাম সংসদের আসন থেকে। এটাই ছিল ওই দুই বিজেপি কর্মীর অপরাধ! যার জেরেই 'নিষিদ্ধ' করে দেওয়া হয়েছে দুই বিজেপি কর্মীর ট্রেকার। এদিকে, শাসকের এই তুঘলকি 'শাসন'-এর জেরে অসহায় অবস্থা ভুক্তভোগী দুই বিজেপি কর্মীর। পেশা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কার্যত এখন পরিবার নিয়ে অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। ইতিমধ্যে প্রশাসনের সর্বস্তরে অভিযোগও জানিয়েছেন তাঁরা দু'জনে। কিন্তু কোনও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ। তাই, সুবিচার পেতে দলের জেলা নেতৃত্বের মাধ্যমে রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন ভুক্তভোগী দুই বিজেপি কর্মী। যদিও, যাবতীয় অভিযোগ খণ্ডন করে পাল্টা গেরুয়া শিবিরকেই নিশানা করেছে শাসক শিবির।
জানা গিয়েছে, বেড়াচাঁপা-বারাসত (North 24 Parganas) রুটে ট্রেকার চালিয়ে সংসার নির্বাহ করেন দুই বিজেপি কর্মী কুমারেশ সাধু খাঁ এবং হারান ঘোষ। কুমারেশের বাড়ি দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা দু'নম্বর পঞ্চায়েতের সাধু খাঁ পাড়ায়। অন্যদিকে, হারানের বাড়ি দেগঙ্গার নূরনগর পঞ্চায়েতের ফাজিলপুর ঘোষপাড়ায়। দু'জনেই বিজেপির সক্রিয় কর্মী। দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তাঁরা। সেই সুবাদে কুমারেশকে টিকিটও দিয়েছে বিজেপি। তিনি দেগঙ্গার ১৫৫ নম্বর বুথে পঞ্চায়েত আসনে লড়াই করছেন বিজেপির প্রতীকে। তবে, হারান ভোটে প্রার্থী না হলেও তাঁর স্ত্রী সুজাতা ঘোষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গ্রাম সংসদের ৯৩ নম্বর আসন থেকে ।
অভিযোগ, প্রথম থেকেই এলাকায় (North 24 Parganas) এই দুই বিজেপি কর্মীর ওপর চাপ তৈরি করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা চালানো হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। কিন্তু, চাপের কাছে নতিস্বীকার করেননি তাঁরা। এর পরেই জব্দ করতে শাসকদল এই পন্থা বেছে নেয় বলে অভিযোগ করেছেন দুই বিজেপি কর্মী। এই বিজেপি কর্মীর জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বনই হল এই ট্রেকার। দীর্ঘদিনের সেই পেশা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন টান পড়েছে রুটি-রুজিতে। কীভাবে সংসার চলবে? আর কীভাবেই বা এর থেকে সুরাহা মিলবে? তা ভেবেই অস্থির দুই বিজেপি কর্মী।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের বারাসত জেলে সভাপতি তাপস দাশগুপ্ত বলেন, এমন কোনও বিষয় নেই! আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অত্যন্ত মিথ্যা। বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন এমন কাউকে আমি চিনিনা। ট্রেকার কোনও ব্যাক্তির বন্ধ হয় নি। তবে সিপিএমের কেউ কেউ এসেছেন আমার কাছে। তিনি হুমকির স্বরে আরও বলেন, বন্ধ না করেও যদি বন্ধের অভিযোগ করে থাকে কেউ! তাহলে এবার বন্ধ করে দেবো।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।