গত দু'বছরে রাজ্যে আত্মহত্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ! উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ মহল!
প্রতীকী ছবি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গে বাড়ছে আত্মহত্যা! গত দু'বছরে রাজ্যে আত্মহত্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ! আত্মহত্যার সংখ্যার নিরিখে দেশের প্রথম পাঁচ রাজ্যের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ব্যক্তিগত জটিলতাই বাড়াচ্ছে আত্মহত্যার প্রবণতা। তাই ১০ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড সুইসাইড প্রিভেনশন ডে (Suicide Prevention Day) উপলক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, সমস্যাই জীবন। কিন্তু তারপরেও জীবনকেই বেছে নিতে হবে! তবেই আনন্দ অনুভব করা যাবে।
কী বলছে সমীক্ষা?
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে আত্মহত্যা বাড়ছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের নিঃশব্দ মহামারি হতে চলেছে আত্মহত্যা। মানসিক অবসাদ ও অন্যান্য মানসিক অসুস্থতা আত্মহত্যার কারণ হয়ে উঠছে। ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে আত্মহত্যার নিরিখে প্রথম পাঁচ রাজ্যের মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ২০২০ সাল থেকে এ রাজ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে এক বছরে প্রায় ১৪ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। শুধুমাত্র কলকাতাতেই ২০২০ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ৪৯ শতাংশ আত্মহত্যা বেড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের আত্মহত্যার (Suicide Prevention Day) সংখ্যা বেশি। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এ রাজ্যে বছরে ৮,২৯০ জন পুরুষ আত্মহত্যা করছে। মহিলাদের এক বছরে আত্মহত্যার সংখ্যা ৫,২০৯ জন।
কেন বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা (Suicide Prevention Day)?
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, এ রাজ্যে আত্মহত্যার ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ, ব্যক্তিগত জীবনে জটিলতা। বিশেষত পরকীয়া আত্মহত্যার অন্যতম কারণ। সম্পর্কে জটিলতার জেরেই মানসিক অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট আত্মহত্যার ৩৪ শতাংশের মৃত্যুর কারণ হিসাবে ব্যক্তিগত সম্পর্কে জটিলতা কিংবা পরকীয়ার মতো তথ্য উঠে আসে। তবে, এর পাশপাশি, কর্মক্ষেত্রে চাপ ও অস্থিরতা, পরিবারের বিভিন্ন বিষয়ে চাপ দেওয়ার জেরে মানসিক অবসাদের জেরে আত্মহত্যার (Suicide Prevention Day) ঘটনা ঘটছে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সামাজিক অস্থিরতা মানসিক স্থিতাবস্থাকে আঘাত করছে। পরিবারের সম্পর্ক কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, সে সম্পর্কে সকলকেই সজাগ থাকতে হবে। পরকীয়ার মতো সমস্যা নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। তাই এই ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রয়োজন পারিবারিক শিক্ষা ও নৈতিক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেওয়া।
তবে, মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, কয়েকটি লক্ষণ স্পষ্ট হলে আন্দাজ করা যায়, আত্মহত্যাপ্রবণ (Suicide Prevention Day) হয়ে উঠছে কিনা। সে সম্পর্কে সতর্ক থাকলে বিপদ এড়ানো সম্ভব। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, পরিবারের কেউ খুব চুপচাপ হয়ে গেলে, নিজেকে সমস্ত বিষয় থেকে হঠাৎ গুটিয়ে নিলে পরিবারকে সতর্ক হতে হবে। তিনি কোনও রকম মানসিক সমস্যায় ভুগছেন কি না, তা আন্দাজ করা যায়। তখনই সতর্ক হলে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করালে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব হয়।
পাশপাশি কথা বলার সময়, হতাশাগ্রস্ত কিনা তা খেয়াল করা জরুরি। অনেকেই এমন ভাবে কথা বলেন, তাতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তিনি নিরাশায় ভুগছেন। এমন লক্ষণ স্পষ্ট হলে তাঁর বাড়তি যত্ন জরুরি। কারণ, এই ধরনের লক্ষণ মানসিক অবসাদের ইঙ্গিত দেয়।
তবে, কেউ যদি কখনও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন, তাহলে তাঁকে বকাবকি করা কিংবা নিছক মজা করা, আসলে অসচেতনতা বলেই জানাচ্ছেন মনোরোগ চিকিৎসকরা। কেউ আত্মহত্যা করবেন, এমন বললে কিংবা আত্মহত্যার চেষ্টা করলে, তাঁকে দ্রুত বিশেষজ্ঞদের কাছে নিয়ে যাওয়া জরুরি। যাতে ঠিকমতো চিকিৎসা এবং থেরাপির মাধ্যমে, তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো যায়।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।