Behala Accident: বেহালার দুর্ঘটনায় পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকরাও...
বেহালা দুর্ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া শুভেন্দু অধিকারীর (ছবি-নিজস্ব)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বেহালার সড়ক দুর্ঘটনায় বড়িশা হাইস্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়ার মৃত্যুর জন্য সরাসরি পুলিশ ও মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়ে বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘এখন পুলিশের কাজ তৃণমূলের হয়ে ভোট লুট করা এবং রাস্তা থেকে টাকা তোলা। পুলিশ ব্যবস্থাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ করে দিয়েছেন, ধ্বংস করে দিয়েছেন। তার পরিণতিতে ওইরকম একটা ফুটফুটে বাচ্চার মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটল। পুলিশের এই অবস্থার জন্য আইপিএস এবং ইন্সপেক্টররা দায়ী, নিচুতলার কনস্টেবল বা এসআই দায়ী নন।’’
শুধু শুভেন্দু নন, ছোট্ট সৌরনীলের মৃত্যুতে পুলিশকেই দায়ী করেছেন স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে অভিভাবকরা। অভিযোগ, স্কুল শুরুর সময়ে প্রতি দিন যানজট দেখা গেলেও তা সামলাতে ট্র্যাফিক পুলিশের দেখা মেলে না। আরও অভিযোগ, পাশে অন্য বেসরকারি স্কুলের সামনে ট্র্যাফিক পুলিশ থাকে, ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু এই স্কুলের সামনে থাকে না। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘স্কুলে গরিব ঘর থেকে শিশুরা আসে, কেউ চার-চাকা করে আসে না। তাই স্কুলের সামনে নেই কোনও নিরাপত্তা।’’ তিনিও এই দুর্ঘটনার জন্য পুলিশকেই দায়ী করেন।
আরও পড়ুন: ‘‘সকালে আমার সঙ্গে কত কথা বলল...’’, ছেলের রক্তাক্ত ব্যাগ আঁকড়ে রয়েছেন সৌরনীলের মা
শুক্রবার সাতসকালে বেপরোয়া লরির ধাক্কায় বেহালার বড়িশা হাইস্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া সৌরনীল সরকারের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে ভর্তি তার বাবা সরোজ কুমার সরকার। এই দুর্ঘটনাকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। উত্তেজিত জনতা রাস্তায় মৃতদেহ ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের গাড়ি-বাইক জ্বালিয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ক্ষোভের আঁচ গিয়ে পড়ে ডায়মন্ড হারবার ট্রাফিক গার্ডে। অফিসে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় কন্ট্রোল রুমে। পাল্টা লাঠিচার্জ-কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। দফায় দফায় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। আহত হন পুলিশ এবং আমজনতা। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা।
এদিকে, ধুন্ধুমার কাণ্ডের পরে ঘটনাস্থলে যান কলকাতার নগরপাল পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল সহ শীর্ষ আধিকারিকরা। সিপি বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সেদিকে নজর রাখছি আমরা। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি যাতে ওই এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা হয়। সাউথ ওয়েস্ট ট্রাফিক গার্ডের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বেহালা, ঠাকুরপুকুর, পর্ণশ্রী ও হরিদেবপুর থানা। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে অসুবিধার কথা জেনেছি। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।”
আরও পড়ুন: লরির ধাক্কায় মৃত খুদে পড়ুয়া! পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধে ধুন্ধুমার বেহালায়
এদিকে, নবান্ন সূত্রের খবর, বেহালা দুর্ঘটনা ও তার পরবর্তী অশান্তিতে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী নিজে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে খোঁজখবর নিয়েছেন। লালবাজারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে নবান্ন। কলকাতা পুলিশের ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচির মধ্যে কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল তা মুখ্যমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি, রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ স্তরের নির্দেশে স্কুলে পৌঁছেছেন স্কুল শিক্ষা দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। তারাও পুলিশের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে। মৃত পড়ুয়ার বাড়িতেও যাচ্ছেন সরকারি অফিসাররা। শোনা যাচ্ছে, নিহতের বাড়িতে যেতে পারেন রাজ্যপালও।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।