দত্তপুকুরের মুসলিম মৃৎশিল্পীর মূর্তি পাড়ি দিল অযোধ্যার রামমন্দিরে…
বাঁ দিকে মৃৎশিল্পী জামালউদ্দিন ডান দিকে নির্মিত ফাইবারের মূর্তি। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রায় ৫০০ বছরের রাম জন্মভূমি আন্দোলনের সাফল্য রূপে উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় তৈরি হচ্ছে প্রভু শ্রীরামচন্দ্রের গগনস্পর্শী মন্দির (Ram Mandir Ayodhya)। আগামী ২২ জানুয়ারির পুণ্য তিথিতে মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রভু রামচন্দ্রের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হবে। আবার এই মন্দিরে বসতে চলেছে বাংলায় তৈরি হওয়া ১৬ ফুটের শ্রীরামচন্দ্রের মূর্তি। প্রভু শ্রীরামচন্দ্রের মূর্তিকে নিজের হাতে তৈরি করেছেন উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের মৃৎশিল্পী মহম্মদ জামালউদ্দিন এবং তাঁর ছেলে শিল্পী বিট্টু। এই কাজে এলাকায় মৃৎশিল্পীদের তীব্র উচ্ছ্বাস।
দত্তপুকুরের মৃৎশিল্পী মহম্মদ জামালউদ্দিন বলেন, “আমাদের নিজের পরিশ্রমে তৈরি প্রভু শ্রীরামচন্দ্রের মূর্তি, অযোধ্যার মন্দিরে স্থাপন করা হবে এটা আমাদের কাছে ভীষণ আনন্দের বিষয়। আমি অত্যন্ত সাধারণ মুসলমান। আমার জীবনের অঙ্গ হল মূর্তি নির্মাণ করা। আমরা সব কিছুর উর্ধে উঠে দেশের জন্য কাজ করব। শ্রীরামের দুটি মূর্তি তৈরি করেছি। একটি মূর্তি আট মাস আগে পাড়ি দিয়েছে অযোধ্যায় (Ram Mandir Ayodhya)। আরেকটি মাস দেড়েক আগে পাঠানো হয়েছে। মূর্তি বানিয়ে পারিশ্রমিক হিসাবে ৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পেয়েছি। মন্দির কমিটি জানিয়েছেন আগামী সপ্তাহে বাসানো হবে মূর্তি দুটি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জামালের বাড়িতে মূর্তি নির্মাণের কারখানা রয়েছে। জামাল জানিয়েছেন, মূর্তি বানানোর কাজ শিখে হায়দ্রাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতে অনেক দিন কাজ করেছেন জামাল। পরে নিজের বাড়িতেই কারখানাকে আরও বড় করে মৃৎশিল্পের পসার বৃদ্ধি করেছেন তিনি। ফাইবার দিয়ে দুর্গা, কালী সহ নানান দেবদেবীর মূর্তি তৈরি করা হতো কারখানায়। সেই তাঁর সঙ্গে ছেলেও কাজ শেখেন। গত পাঁচ বছর ধরে নানা রাজ্যে তাঁদের তৈরি মূর্তি পাঠিয়েছেন। গত দুই বছর আগে উত্তর প্রদেশের এক বন্ধু তাঁকে শ্রীরামচন্দ্রের মূর্তি (Ram Mandir Ayodhya) বানানোর কথা জানিয়েছিলেন জামালকে। এরপর শ্রীরাম মন্দির ট্রাস্টের কর্মকর্তা আসেন দত্তপুকুরে। মূর্তি দুটি কেমন হবে সেই নকশা দিয়ে যান তাঁরা। ফলে দত্তপুকুরে যশোর রোডের দুই ধারের ছোট ছোট কারখানা চালানোর মৃৎ শিল্পীরা ব্যাপক আশার আলো দেখছেন।
বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি তুহিন মণ্ডল বলেন, “রাম রাজত্বে মানুষের কর্মই প্রাধান্য পেয়েছিল। রাম মন্দিরের (Ram Mandir Ayodhya) নির্মাণেও একই সাফল্য লক্ষ্য করা গেল।” অপর দিকে তৃণমূলের বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী কুর্নিশ জানিয়েছেন শিল্পী জামালকে। তিনি বলেছেন, একজন প্রকৃত শিল্পীর পরিচয় দিয়েছেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।