img

Follow us on

Friday, Nov 22, 2024

Sukumar Ray: 'হ য ব র ল' এর রচয়িতার জন্মদিন আজ, জানুন তাঁর জীবন কথা

ছোটদের মধ্যে ব্রাহ্ম সমাজের মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে...

img

সুকুমার রায় ও তাঁর অমর কীর্তি।

  2022-10-30 15:53:17

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বর্তমানের শৈশব আটকে রয়েছে স্মার্টফোনের (Smart Phone) গেম এবং ইউটিউবের (Youtube) কার্টুনে। কিন্তু যখন স্মার্টফোন ছিল না, ইউটিউবের এত চল ছিল না, তখনকার শৈশবে বেশ কিছু বন্ধু ছিল। কিছু বন্ধু আমাদের সঙ্গে স্কুলে যেত, কিছু বন্ধু একসঙ্গে ডাংগুলি, লুকোচুরি, ক্রিকেট খেলতো। আর কিছু বন্ধু ছিল কাল্পনিক। শৈশবের এক বন্ধু ৪১ নম্বর গেছোবাজার কাগেয়াপট্টি-র বাসিন্দা।

শ্রী কাকেশ্বর কুচকুচের কথা আমাদের নিশ্চয়ই এখনও মনে আছে। আমরা ভুলিনি সেই চন্দ্রবিন্দু নামের অদ্ভুত মোটাসোটা লাল টকটকে বিড়ালটাকে। যে কথায় কথায় এক চোখ বন্ধ করে বিশ্রী রকমের হাসি হাসতো ফ্যাচফ্যাচ করে। কিংবা ধরুন ওই হিজিবিজবিজ-এর কথা।  বিদঘুটে দেখতে এই জন্তুটি যা খুশি কল্পনা করে আর সেগুলো ভেবে ভেবে হেসে গড়িয়ে পড়ে। পাগলা দাশুর কথা শুনতে শুনতে তো হেসে লুটিয়ে পড়ে না এমন মানুষ খুব কম আছেন। বিশেষত নাটকের স্ক্রিপ্টের বাইরে গিয়ে যখন দাশু বলে 'আবার সে আসিয়াছে ফিরে'। নন্দলাল কে তো আজও ভুলিনি আমরা। বেচারার কপালটা সত্যিই মন্দ। এদের নিয়েই অনেকের শৈশব কেটেছে। স্রষ্টার নাম নিশ্চয়ই আলাদা ভাবে মনে করাতে হবে না। আজ তাঁর জন্মদিন। আবোলতাবোল, হযবরল-র রচয়িতা বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায় (Sukumar Ray) ছিলেন উপেন্দ্রকিশোর রায় ও বিধুমুখী দেবীর পুত্র। তাঁরা ছিলেন পাঁচ ভাই-বোন। সুখলতা, পুণ্যলতা ও শান্তিলতা নামের তিন বোন এবং সুবিনয় রায় ও সুবিমল রায় নামের দুই ভাই।

সুকুমার রায়ের (Sukumar Ray) জন্ম ১৮৮৭ সালের ৩০শে অক্টোবর কলকাতার এক দক্ষিণ রাঢ়ীয় কায়স্থ বংশীয় ব্রাহ্ম পরিবারে। পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায় ছিলেন বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক‌। এই অসামান্য প্রতিভার যোগ্য উত্তরাধিকারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন 'পাগলা দাশু' চরিত্রের স্রষ্টা। সুকুমার রায়ের মা বিধুমুখী দেবী ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের কন্যা। সুকুমার রায়ের আদিনিবাস বর্তমান বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমার (বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলা) কটিয়াদি উপজেলার মসূয়া গ্রামে। মসূয়াতে বসবাসের আগে তাঁর পূর্বপুরুষের আদিনিবাস ছিল অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার অন্তর্গত চাকদহে৷ চিত্রশিল্পী হিসেবেও তিনি অসাধারণ মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। শিশু সাহিত্যের বইগুলির চিত্র তিনি নিজেই আঁকতেন। ছাত্রাবস্থায় অসাধারণ মেধাবী এই ছাত্র কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৬ সালে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় বি.এস.সি. (অনার্স) করার পর মুদ্রণবিদ্যায় উচ্চতর শিক্ষার জন্য ১৯১১ সালে বিলেতে যান। সেখানে তিনি আলোকচিত্র ও মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন এবং ভারতের অগ্রগামী আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভারতে ফিরে আসেন ১৯১৩ সালে। উপেন্দ্রকিশোর রায় ছোটদের মাসিক পত্রিকা 'সন্দেশ' চালাতেন। সুকুমার রায় দেশে ফেরার কিছুদিনের মধ্যে উপেন্দ্রকিশোর রায় প্রয়াত হলে, 'সন্দেশ' পত্রিকার দায়িত্বভার নিজের কাঁধে তুলে নেন সুকুমার রায়। প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াকালীন তিনি 'ননসেন্স সংঘ’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যার মুখপত্রের নাম ছিল 'সাড়ে বত্রিশ ভাজা'।

সুকুমার রায় (Sukumar Ray) 'অতীতের কথা' নামক একটি কাব্য রচনা করেছিলেন, যা ব্রাহ্ম সমাজের ইতিহাসকে সরল ভাষায় উপস্থাপন করেছিল - ছোটদের মধ্যে ব্রাহ্ম সমাজের মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে এই কাব্যটি একটি পুস্তিকার আকারে প্রকাশ করা হয়। ১৯২৩ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে এই বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক পরলোক গমন করেন। কালাজ্বর রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। দুঃখের কথা তখনও অবধি কালাজ্বর রোগের টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। পিতা সুকুমার রায়ের মৃত্যুর ঠিক দু বছর আগে ১৯২১ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সুযোগ্য সন্তান সত্যজিৎ রায় যিনি পরবর্তীকালে একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা বাঙালি হয়েছিলেন এবং জিতেছিলেন অস্কার।

আরও পড়ুন: কার্তিক মাসে গ্রাম বাংলায় পালিত হয় 'যমপুকুর ব্রত'! জানেন এর নেপথ্য গল্প?

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

Tags:

Bengali news

Sukumar Ray

absurd literature


আরও খবর


ছবিতে খবর