রাজ্যের প্রশাসনই যখন অমানবিক, তখন অমানবিক ছবি তো ধরা পড়বেই, অভিমত রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের
মৃত সন্তান ব্যাগে করে বাড়ি ফিরলেন গরিব বাবা।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের অমানবিকতার ছবি! বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের দাবি মতো টাকার জোগাড় করতে না পেরে, মৃত সন্তানকে ব্যাগে ভরে বাড়ি ফিরলেন কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা। ঘটনায় রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গাফিলতির দিকেই অভিযোগের আঙুল তুললেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এটাই কি এগিয়ে বাংলার মডেল? কটাক্ষে ভরা প্রশ্ন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর।
কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মুস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অসীম দেবশর্মার যমজ সন্তান অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তাদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন পেশায় দিনমজুর অসীম। দু'জনেরই বয়স ৫ মাস। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। তবে সন্তানের মৃতদেহ বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে অ্যাম্বুল্যান্স চালক অসীমের কাছ থেকে আট হাজার টাকা চান। তত টাকা অবশ্য ছিল না অসীমের কাছে। বাধ্য হয়ে ব্যাগে করে শিশুর মৃতদেহ নিয়ে বাসে চেপে গ্রামে আসেন অসীম। পরে তিনি কালিয়াগঞ্জে ফিরে এলে গোটা বিষয়টি জানাজানি হয়। তিনি বলেন, 'সন্তানদের চিকিৎসা করাতে গিয়েই ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স আট হাজার টাকা চেয়েছিল। সেকারণে বাসে করেই মৃত সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছি।' এদিকে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর কালিয়াগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে ডাঙিপাড়া গ্রাম পর্যন্ত একটি অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দেন কালিয়াগঞ্জের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলার গৌরাঙ্গ দাস।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের হ্যারিকেন মিছিলের অনুমতি হাইকোর্টের
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে শিশুর দেহ ব্যাগে পুরে বাবার কালিয়াগঞ্জের বাড়িতে ফেরার ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। ট্যুইটে রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা ট্যুইটারে লিখেছেন, অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়ার টাকা না থাকায় একজন বাবাকে তাঁর ৫ মাসের শিশুসন্তানের মৃতদেহ ব্যাগে করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে কালিয়াগঞ্জে নিয়ে যেতে হল। কীসের জন্য স্বাস্থ্যসাথী? দুর্ভাগ্যবশত এটাই এগিয়ে বাংলা মডেল। এটাই রাজ্যের বাস্তব ছবি। প্রসঙ্গত, কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হয়ে শিলিগুড়ির মেডিক্যাল কলেজ। প্রায় একসপ্তাহ ধরে শিশুর চিকিৎসায় ১৬ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছেন বাবা। তাহলে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ব্যবহার কোথায়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
This is Ashim Debsharma; father of a 5 month old infant who died in a Medical College in Siliguri.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) May 14, 2023
He was being charged Rs. 8000/- to transport the dead body of his child. Unfortunately after spending Rs. 16,000/- in the past few days during the treatment, he couldn't pay the… pic.twitter.com/G3migdQww8
এই ঘটনা প্রসঙ্গে ট্যুইট করে সুকান্ত মজুমদার লেখেন, "এই হতদরিদ্র ব্যক্তি নিজের সন্তানের মৃতদেহ বাড়ি ফিরিয়ে আনার জন্য কোনও অ্যাম্বুলেন্স খুঁজে পাননি। এই আবহে তাঁকেই তাঁর সন্তানকে বয়ে নিয়ে আসতে হয়। এই হল পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবস্থা। এই ঘটনাটি উত্তর দিনাজপুর জেলার। দুঃখজনক হলেও পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় এটাই বাস্তব। রাজ্যের প্রশাসনই যখন অমানবিক, তখন অমানবিক ছবি তো ধরা পড়বেই।"
This poor person has to carry the dead body of his child in the bag. He didn’t find any Ambulence. This is the condition of the health facility in West Bengal. This case is from Uttar Dinajpur district . Sad but this is the reality across all districts in West Bengal. pic.twitter.com/gOziExkCVF
— Dr. Sukanta Majumdar (@DrSukantaBJP) May 14, 2023
কালিয়াগঞ্জ পুরসভার বিজেপি নেতা ও কাউন্সিলার গৌরাঙ্গ দাস বলছেন, গরিব মানুষের কাছে টাকা না থাকলে এই সরকারের আমলে এই হাল হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।