PM Awas Yojana: অভিযোগ উঠেছে, ঝাঁ চকচকে বাড়ি রয়েছে, এমন তৃণমূল নেতারও নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়।
আবাস যোজনায় দুর্নীতি নিয়ে বিক্ষোভ বিজেপির
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আবাস যোজনার (PM Awas Yojana) তালিকায় দুর্নীতির অভিযোগে দিকে দিকে প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিজেপি। জেলায় জেলায় আবাস প্রকল্পের তালিকা নিয়ে অভিযোগ উঠে আসছে, আর এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তেই এবার পথে নামল বিজেপির কর্মীরা। গতকাল পুরুলিয়ার বেলকুঁড়ি এলাকায় এই বিক্ষোভে নেমে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিজেপির কর্মীদের। শুধুমাত্র পুরুলিয়া নয়, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা সহ আরও অনেক জেলায় আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে। এমনকি অভিযোগ উঠেছে, ঝাঁ চকচকে বাড়ি রয়েছে, এমন তৃণমূল নেতারও নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়। আর এর ফলেই সাধারণ মানুষ সহ বিজেপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন।
পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের লাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলকুঁড়ি ও চাকড়া গ্রামের বহু মানুষকে চক্রান্ত করে এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে তৃণমূল পরিচালিত লাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শান্তবালা মাহাতোকে বেশ কিছুক্ষণ ঘেরাও করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ দেখানো হয় বিডিও অফিসেও। এদিন বিডিও-র কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচি নেয় বিজেপি। আর তা দিতে গিয়েই পুলিশি বাধার মুখে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। এরপর বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গরীব মানুষদের তালিকা থেকে সরানো হয়েছে ও তার জায়গায় তৃণমূল নেতাদের নাম দেওয়া হয়েছে তালিকায়।
বাঁকুড়াতেও সেই একই অভিযোগ। ফলে গতকাল বাঁকুড়ার রানিবাঁধের বিডিও অফিসে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি প্রকাশিত আবাস যোজনার (PM Awas Yojana) তালিকায় ব্যাপক গরমিল রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, রানিবাঁধ ব্লকের পুড্ডি, বারিকুল, রাজাকাটা, রুদড়া, রাওতড়া-সহ মোট আটটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটি গ্রামে প্রকৃত গৃহহীনদের নাম বাদ দিয়ে পাকা বাড়ির মালিকদের নাম তালিকায় রয়েছে। বিজেপি নেতার বক্তব্য, “যাদের তিন তলা, চার তলা বাড়ি রয়েছে, বাইক রয়েছে, তারাই বাড়ি পাচ্ছে। আসলে যাঁদের প্রয়োজন, তাঁরা পাচ্ছেন না।” ফলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তীতে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি।
পূর্ব বর্ধমানের মেমারী ১ নম্বর ব্লকের দুর্গাপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। সেখানে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তৃণমূল নেতার ঝাঁ চকচকে দোতলা বাড়ি। অথচ আবাস যোজনার (PM Awas Yojana) তালিকায় রয়েছে তাঁর মায়ের নাম। স্থানীয় তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে স্বজন-পোষণের অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা বলেন, পরিকল্পিতভাবে আবাস যোজনার তালিকা থেকে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
এখানেও একই অভিযোগ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের প্রতাপনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (PM Awas Yojana) তালিকায় ফের স্বজন-পোষণের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রতাপনগরের গাড়াল অঞ্চলের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জয় নস্করের স্ত্রীর নাম রয়েছে আবাস-তালিকায়। অন্যদিকে তাঁর টাইলস বসানো দোতলা বাড়ি থাকলেও কী করে তাঁর নাম আবাস যোজনায় আসে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে গ্রামবাসীরা।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (PM Awas Yojana) সমীক্ষায় কারচুপির অভিযোগ তুলে মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার সুলতানপুরে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই ICDS কর্মী প্রকৃত প্রাপকদের নাম কেটে দিয়ে পাকা বাড়ির মালিকদের নাম আবাস-তালিকায় রেখেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (PM Awas Yojana) তালিকায় নাম রয়েছে তৃণমূল প্রধানের স্বামী ও শাশুড়ির। অভিযোগ এদের ঝাঁ চকচকে পাকা বাড়ি, তবুও নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়। মালদার চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। অভিযোগ, প্রকৃত প্রাপকদের বঞ্চিত করে আবাস তালিকায় স্বামী ও শাশুড়ির নাম ঢুকিয়েছেন তৃণমূল প্রধান মাস্তারা খাতুন।
আর এত সব অভিযোগ ওঠার পরে শাসকদলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন বিজেপির কর্মীরা। তাঁরা মানবাজার ১ বিডিওকে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার পথে বিজেপির মিছিল থেকে আবাস যোজনাতে কারচুপি করা হচ্ছে, তৃণমূল সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত — এই সব স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখায়। তাঁদের দাবি, তালিকা (PM Awas Yojana) সংশোধন করে শুধু যোগ্যদের নামই রাখতে হবে। বিজেপির নেতৃত্বে এই কর্মসূচিতে ছিলেন দলের শাঁকা ও নতুনডি পঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান, সদস্য ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য।