নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে? রিপোর্ট তলব উচ্চ আদালতের
কলকাতা হাইকোর্ট (ফাইল ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রশাসনের অগোচরে গার্ডেনরিচে নির্মাণ হয়নি, বৃহস্পতিবার এমনটাই জানাল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। অর্থাৎ এদিন সরাসরি প্রশাসনকেই এই ঘটনার জন্য কাঠগড়ায় তুলল হাইকোর্ট, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে- এবিষয়ে রিপোর্টও চেয়েছে উচ্চ আদালত। বৃহস্পতিবারই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল। আগামী ৪ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
গার্ডেনরিচ এলাকায় বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিং। মামলাকারী রাকেশের বক্তব্য, গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে যাওয়ার ফলে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর পাশাপাশি ওই এলাকায় এমন আরও প্রায় ৫০টি বেআইনি নির্মাণ রয়েছে বলে দাবি করেন রাকেশ। এ বিষয়ে আদালতের (Calcutta High Court) হস্তক্ষেপ চেয়েছেন মামলাকারী। বৃহস্পতিবার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘শুনলাম বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর উদ্ধারকার্য বন্ধ করে দিয়েছে। ধ্বংসস্তূপে আর কেউ আটকে থাকলে কী হবে? প্রতিটি পঞ্চায়েত, পুরসভার একটি করে নজরদারি কমিটি থাকা দরকার। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ওই পাঁচ তলা বহুতল গড়ে উঠেছে বলে মনে হয় না।’’
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ আটকাতে আইন থাকলেই হবে না, তা বলবৎ করার মতো পরিকাঠামোও থাকতে হবে। গুলি ছাড়া বন্দুক দিয়ে সৈন্যদের সীমান্তে যুদ্ধে পাঠিয়ে কী লাভ?’’ প্রধান বিচারপতির (Calcutta High Court) আরও পর্যবেক্ষণ, ‘‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে অসীম ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা যায়, তারা যখন স্কুটার বা জিপে করে কোনও এলাকা পরিদর্শনে যায়, তাদের মারধর করা হয়। পরিকাঠামো না থাকলে তারা কী করবে? মনে করুন, আপনি প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে অর্ধেক লরি ভর্তি বালি, এক লরি ভর্তি ইট নিয়ে এসে নির্মাণস্থলের সামনে রাখলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে কাউন্সিলরের গুপ্তচর চলে আসবেন। আর অনুমতি না থাকলে অনেক সময় কেউ আসেও না।’’
সরকারের উদ্দেশে আদালত (Calcutta High Court) এদিন আরও পরামর্শ দিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি আপাতত কয়েক দিন খাবার সরবরাহ, রেশন সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এর পাশাপাশি, যাঁরা বাড়ি হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য তাঁবুর বন্দোবস্ত করতে বলেছে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের মতে, প্রতিটি পঞ্চায়েত সহ সব জায়গায় মনিটরিং সেল থাকা দরকার। প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচে যেখানে বাড়িটি তৈরি হচ্ছিল, সেখানে জলাভূমি ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।