মোবাইল সহ কোনো ইলেকট্রনিক গ্যাজেট যাতে জেলের ভিতরে ঢুকতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে জেল দফতরকে।
কলকাতা হাইকোর্ট।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মোবাইলের সাহায্যে জেলে বসেই জেলা কন্ট্রোল করছেন কেষ্ট, এমন অভিযোগ নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়, ঠিক তখনই অন্য একটি মামলার শুনানিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। জেলে বন্দিদের মোবাইল ব্যাবহার রুখতে রাজ্যের সব সংশোধনাগারে জ্যামার ও ফুল বডি স্ক্যানার বসানোর নির্দেশ দিল আদালত (Kolkata High Court)। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। সোমবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ (Divison Bench) এই নির্দেশ দিয়েছে।
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, বন্দিদের কোর্ট থেকে ফিরিয়ে আনার পর আগে তাদের গোটা দেহ ওই মেশিনে তল্লাশি করতে হবে। মোবাইল সহ কোনো ইলেকট্রনিক গ্যাজেট যাতে জেলের ভিতরে ঢুকতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে জেল দফতরকে। হাইকোর্টকে (Kolkata High Court) বিভ্রান্তিকর রিপোর্ট দেওয়ার জন্য কারা দফতরের একাধিক অফিসারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত। তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের লিখিত নির্দেশ দিলেও পরে রাজ্যের অনুরোধে তা প্রত্যাহার করে আদালত।
২০২২ সালের অক্টোবর মাসে জলঙ্গি থেকে তাজবুল শেখ ও সুকুর মণ্ডল নামের দুই যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। মাদক মামলায় অভিযুক্ত ওই দুই যুবকের জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্যের সমস্ত সংশোধনাগারে নজরদারি কড়াকড়ি করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আদালতে শুনানি চলাকালীন সরকারি আইনজীবী রুদ্রদ্বিপ্ত নন্দী বলেন, তাজবুল ও সুকুর মাদক ব্যবসায় পারদর্শী। সংশোধনাগার (Jail) থেকে গোপনে ফোনের মাধ্যমে ওরা ব্যবসা চালায়। মাদক ব্যবসায় এক অভিযুক্তের সঙ্গেও দুই যুবকের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। বিচারপতি বাগচী এই তথ্য শুনে হতবাক হয়ে পড়েন। এরপরই তিনি রাজ্যের সমস্ত সংশোধনাগারে চার সপ্তাহের মধ্যে জ্যামার ও ফুল বডি ইলেকট্রনিক্স স্ক্যানার (Full Body Electronic Scanner) বসানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: ধনখড়ের সঙ্গে সাক্ষাত রাজ্যপাল আনন্দ বোসের! কী কথা হল প্রাক্তন ও বর্তমানের মধ্যে?
প্রসঙ্গত, রাজ্যে সাম্প্রতিককালে একাধিক হেভিওয়েট নেতা জেলবন্দি রয়েছেন। অনুব্রত মণ্ডল প্রসঙ্গে সম্প্রতি বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন কাজল শেখ। তাঁর দাবি ছিল, জেলে বসেই জেলা কন্ট্রোল করছেন অনুব্রত। এমনই এক পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে আইনজীবী মহল। হাইকোর্টের এই নির্দেশ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলছেন, ‘নিরাপত্তার দৃষ্টিভঙ্গিতে এটা ভীষণভাবে দরকার। জেলের সাধারণ কয়েদিদের পরিবার যখন দেখা করতে যান, তখন তাঁদের একটু হয়ত হয়রানি হবে। কিন্তু জেলটাকে তো তামাশা হিসেবে নেওয়া যায় না। রাজ্য সরকার এটিকে তামাশা বানিয়ে দিয়েছে।’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।