শাসক দলের প্রতীক থাকলে যেন সাত খুন মাফ। রাস্তায় পুলিশও গায়ে হাত দেওয়ার সাহস দেখাবে না। গরু পাচারেও গাড়িতে ব্যবহার করা হচ্ছে তৃণমূলের প্রতীক আর পতাকা।
তৃণমূলের পতাকাই কি গরু পাচারের পাসপোর্ট?
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সামনে শাসক দলের প্রতীক থাকলে যেন সাত খুন মাফ। রাস্তায় পুলিশও গায়ে হাত দেওয়ার সাহস দেখাবে না। রাজ্যে ঘাসফুল পতাকার মাহাত্ম্যই আলাদা। আর এই পতাকা ব্যবহার করেই দেদার অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে অনেকেই। এমনই অভিযোগ বিরোধীদের। তবে, বিরোধীদের আনা সেই অভিযোগ এবার সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। এই যেমন সোদপুর ট্রাফিক মোড়ে চারচাকা গাড়িতে করে গরু নিয়ে যাওয়ার (Cattle Smuggling) জন্যই তৃণমূলের প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে। গাড়িতে করে একটি মাত্র গরু নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পাচার না অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তা ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা খতিয়ে দেখছেন। কিন্তু, বিরোধীদের প্রশ্ন, মাত্র একটি গরু চারচাকা গাড়ি করে নিয়ে যেতেও কী শাসক দলের প্রতীক ব্যবহার করতে হবে। পাচারকারীরা কী ধরেই নিয়েছে এই পতাকা থাকলে সাত খুন মাফ। এসব পাচার করতে রাস্তায় কোনও ঝক্কি পোহাতে হবে না। কিন্তু, শেষ রক্ষা হল না।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে একটি দুধ সাদা গাড়ি সোদপুর ট্রাফিক মোড় ধরে যাচ্ছিল। গাড়ির পিছনের দিকে কালো কাচ তোলা ছিল। সামনের দিকে তৃণমূলের পতাকা গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনের নিচে রাখা ছিল। ফলে, বাইরে থেকে দেখলে মনে হতেই পারে একজন শাসক দলের কোনও হোমড়াচোমরা গাড়ির মধ্যে রয়েছেন। ফলে, গাড়ি আটকানোর ক্ষমতা কারও নেই। এই ভেবেই চালক গাড়ি চালাচ্ছিলেন। কিন্তু, গাড়ির চালচলন দেখেই সোদপুর ট্রাফিক গার্ডের কর্মীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা গাড়িটিকে আটকানোর চেষ্টা করেন। তৃণমূলের পতাকা ব্যবহার করে রক্ষা হচ্ছে না দেখে অগত্যা চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন। কিন্তু, জনবহুল বিটি রোডে বেশি দূর গাড়ি যেতে পারেনি। পুলিশের তাড়া খেয়ে রাস্তার ডিভাইডারে গিয়ে ধাক্কা মারে। পুলিশ গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিকে ধরে ফেলে। যদিও ততক্ষণে গাড়ির মধ্যে থাকা চালক এবং খালাসি বা পাচারকারি গাড়ি ফেলে রেখে পগার পার। আর গাড়ি খুলতেই পুলিশের চক্ষু চড়কগাছ। চারচাকা গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল গরু (Cattle Smuggling)। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, গরুটিকে পাচার করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে, গাড়ি করে গরুটিকে কোথায় থেকে নিয়ে এসে কোথায় পাচার করা হচ্ছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এই নিয়ে কী বলছেন তৃণমূল নেতা। খড়দহ যুব তৃণমূলের সভাপতি দিব্যেন্দু চৌধুরী বলেন, একটি গরু চার চাকা গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের দলের পতাকা ব্যবহার করা হয়েছে। এটা পরিকল্পিতভাবেই করা হয়েছে। আসলে আমাদের দলকে কালিমালিপ্ত করার জন্যই এসব করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। আমরা চাই, ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন হোক।
আর বিজেপি নেতৃত্ব এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন। এই বিষয়ে বিজেপি নেতা কিশোর কর বলেন, গরু পাচার (Cattle Smuggling), বালি পাচার সব কিছুই তৃণমূলের মদতেই ঘটছে। পাচারকারীরাও নিজেদের শাসক দলের কর্মী ভাবছেন। আমরা বার বার অভিযোগ করে এসেছি। এবার সেটাই প্রমাণিত হল। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। আর এই ঘটনার সঙ্গে যে বা যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।