২০২১ সালে মালদায় ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তকরণের অভিযোগ ওঠে...
প্রতীকী ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল সিবিআই। কালিয়াচকের ওই সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দোর করে দুই ব্যক্তিকে হিন্দু থেকে মুসলমান ধর্মে (Forced Conversion) ধর্মান্তকরণ করেছে তারা। জানা গিয়েছে, মালদার মোথাবাড়ি ও কালিয়াচকের ৬ জায়গায় বৃহস্পতিবার অভিযান চালায় সিবিআই। সাত অভিযুক্তের বাড়ি থেকে মোবাইল সহ বেশ কিছু নথিও বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
২০২১ সালে মালদার মালদার কালিয়াচকের ঘটে এই ঘটনা। দুই বোনের অভিযোগ ছিল, তাঁদের স্বামী বুদ্ধ মণ্ডল এবং গৌরাঙ্গ মণ্ডল বিজেপির সমর্থক হওয়ার কারণে ভোট পরবর্তী সময়ে তাদের জোর করে ইসলামে ধর্মান্তকরণ করা হয়। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পরাস্ত হয়। তাঁরা কোর্টের কাছে আরও জানান, ২৪ নভেম্বর ২০২১ সাল থেকে তাদের স্বামীরা নিঁখোজ। পুলিশকে এব্যাপারে জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তারা। হাইকোর্টের কাছে রাজ্য অবশ্য রিপোর্ট দেয়, ওই দুই ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং পারিবারিক বিবাদের কারণে তারা বাড়ি ছেড়েছে। যদিও পরিবারের দাবির সঙ্গে কোনওভাবেই মিলছে না রাজ্যের রিপোর্ট। এবিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত করে সিবিআই রিপোর্ট জমা দেয় গত ২০ ফেব্রুয়ারি, যার ভিত্তিতে চলতি বছরের ৬ জুন হাইকোর্ট এফআইআর করতে নির্দেশ দেয়। সেই মতো এফআইআর করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। নাম রয়েছে, খুরশেদ সেখ, রবিউল সেখ, মুক্তাবুল সেখ, তিনু সেখ, নজু সেখ, বরকতি সেখ এবং হাবিব সেখের। জানা গিয়েছে প্রত্যেকেরই বাড়ি মালদায়।
জানা গিয়েছে পেশায় রাজমিস্ত্রি দুই ভাই বুদ্ধ মণ্ডল এবং গৌরাঙ্গ মণ্ডল ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর কাজে যান। গৌরাঙ্গ মণ্ডল যান রবিউল সেখের বাড়ি এবং বুদ্ধ মণ্ডল যান হাবিব সেখের বাড়ি। এরপর সেদিন দুপুর দুটোর সময় তাঁরা বাড়িতেও ফেরেন মধ্যাহ্নভোজ সারতে। তারপর আবার বেরিয়ে যান। পরে রাতে আর বাড়ি ফেরেন নি। এরপর নিঁখোজ দুইজনের স্ত্রী (বু্দ্ধ মণ্ডলের স্ত্রী পার্বতী মণ্ডল এবং গৌরাঙ্গ মণ্ডলের স্ত্রী কলাবতী মণ্ডল) জানতে পারেন তাঁদের স্বামীদের ইসলামে ধর্মান্তকরণ করা হয়েছে এবং নমাজ পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। পুলিশ এরপর বুদ্ধ মণ্ডল ও গৌরাঙ্গ মণ্ডলের সন্ধান পায় একটি মুসলিম বাড়িতে। মামলাকারীদের পুলিশ জানায়, বুদ্ধ মণ্ডল এবং গৌরাঙ্গ মণ্ডলকে কোর্টে তোলা হবে ২৮ নভেম্বর ২০২১। পরিবারের দাবি, কোর্টে তোলার দিন তাঁরা সকাল থেকেই আদালত চত্বরে হাজির ছিলেন, কিন্তু গোটা দিন উপস্থিত থাকার পরেও যখন বু্দ্ধ এবং গৌরাঙ্গকে কোর্টে তোলা হল না তখন কলাবতীদেবী এবং পার্বতীদেবী বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর বিকালের পরে বুদ্ধ এবং গৌরাঙ্গকে এসডিও এর সামনে হাজির করানো হয়, সেসময় প্রচুর পরিমাণে মুসলিমদের ভিড় সেখানে ছিল। তারা বুদ্ধ এবং গৌরাঙ্গকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যায়, পরিবারের লোকের অনুপস্থিতিতে। এরপর ২০২২ সালের সালের ৪ জানুয়ারি স্থানীয় ধরলা গ্রামে বুদ্ধ এবং গৌরাঙ্গকে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। খবর পেয়ে তখনই গ্রামে পৌঁছান পার্বতী দেবী ও কলাবতী দেবী। তাঁদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হলে স্থানীয় মুসলিমরা হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। এরপর গৌরাঙ্গ কোনওভাবে মুসলিম সম্প্রদায়ের খপ্পর থেকে পালিয়ে আসতে সমর্থ হয়। এবং কলাবতীকে সঙ্গে করে সে একটি গোপন আস্তানায় থাকতে শুরু করে। অভিযোগ, অপহরণকারীদের চাপে কলাবতী ও গৌরাঙ্গর নামে এফআইআর করে বুদ্ধ। এরপর গৌরাঙ্গকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা। কলাবতী জামিনে মুক্ত হন। পরিবারের অভিযোগ, দুইভাই ফোনে জানিয়েছে, তাদের জোরপূর্বক মাদকের নেশা করানো হচ্ছে এবং পশু হত্যা করার প্রশিক্ষণও দিচ্ছে মুসলিমরা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।