CAG: রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ক্যাগ রিপোর্টে কী উঠে এল?
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে (Raiganj University) বহু লক্ষ টাকার আর্থিক বেনিয়ম হয়েছে বলে দাবি করেছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ)। রাজ্যের প্রিন্সিপাল অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলের তরফে চিঠিও পাঠানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়কে। ৯ সেপ্টেম্বর পাঠানো সেই চিঠিতে যে যে অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ মিলেছে, তার জবাব চাওয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় (Raiganj University) তৈরি হয়েছিল। সেই সময় থেকে অর্থাৎ, ২০১৫-১৬ আর্থিক বছর থেকে ২০২২-২৩ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচের অডিট করে ক্যাগ (CAG)। গত ২২ এপ্রিল থেকে ২৪ মে পর্যন্ত চলে অডিট। এর পরে ইন্সপেকশন রিপোর্ট তৈরি করে তা বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠানো হয়েছে গত ৯ সেপ্টেম্বর। আনন্দবাজার প্রত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, ক্যাগের রিপোর্টে বলা হয়েছে, উপাচার্যের বাংলো এবং কর্মীদের আবাসন বানানোর ক্ষেত্রে নির্মাণকারী সংস্থাকে অতিরিক্ত ২৫.৮১ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা। নিয়ম ভেঙে ৫৫ লক্ষ টাকা অগ্রিম দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ক্যাগ। ওই কাজের বরাত প্রথমে রাজ্য সরকার অনুমোদিত সংস্থাকে দেওয়া হলেও পরে তা নিয়ম ভেঙে অন্য এক সংস্থাকে দেওয়া হয় বলে দাবি ক্যাগের। বলা হয়েছে, ওই সংস্থাকে কোনও আইনি ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়নি, বিশ্ববিদ্যালয় কোনও চুক্তিও করেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের প্রজেক্ট রিপোর্ট বানাতে ৩৭.৬৮ লক্ষ টাকা খরচ নিয়েও প্রশ্ন তুলে ক্যাগ। এ ছাড়াও, রাজ্য সরকারের টেন্ডার নীতি অমান্য করে কয়েকটি সংস্থাকে বারংবার বিভিন্ন কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। যে সব ক্ষেত্রে কোনও দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি।
আরও পড়ুন: শিক্ষা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়, তবে শিক্ষাকে হতে হবে ভারত-কেন্দ্রিক, মনে করেন মোহন ভাগবত
আনন্দবাজার প্রত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, ক্যাগের দাবি, সিসিটিভি ব্যবস্থা, গ্রন্থাগার, স্মার্ট ক্লাসরুম বানানো কিংবা সল্টলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের (Raiganj University) নামে ভাড়া নেওয়া তিন কামরার ফ্ল্যাট-সহ অনেক কিছু নিয়ে 'অস্বচ্ছতা'র অভিযোগ রয়েছে ক্যাগের রিপোর্টে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নীতি-নিয়মের তোয়াক্কা করা হয়নি বলে দাবি। এমন নানা তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি ক্যাগের দাবি, ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ৯৭ লক্ষ টাকার চেয়ার-টেবিল কেনে। যা দোকান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আনতে খরচ হয়েছিল ৫.৪৮ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের এমন বহু লক্ষ টাকার খরচ দেখানো হয়েছে, যারযথাযথ রসিদ নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালয় এক কোটি টাকার বেশি তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রেও কোনও টেন্ডার ডাকেনি। ক্যাগের দাবি,৪৩.২৯ লাখ টাকার গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে কোনও টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী একটি বিলে পাঁচ লাখ টাকার বেশি খরচ করতে হলে ই-টেন্ডার বাধ্যতামূলক।
উপাচার্য দীপককুমার রায় এবং রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকার ক্যাগের কাছে চিঠির কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের (Raiganj University) পরবর্তী এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকের পরে চিঠির জবাব দেওয়া হবে। কবে হবে সেই বৈঠক? উপাচার্য দীপককুমার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার বা উচ্চশিক্ষা দফতরের অনুমোদন মিললেই বৈঠক হবে। তার পরেই চিঠির জবাব তৈরি হবে। যে যে দফতর, সংস্থা বা ব্যক্তিকে নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠানো হয়েছে। ”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।