৪৪ লক্ষ টাকা নিয়েছেন শুধু একটি পরিবার থেকে...
কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় যেতেন চন্দন মণ্ডলের বাড়ি।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার বাগদার রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলের বাড়িতে একাধিকবার গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এই দাবি করলেন বাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য অনুপ ঘোষ। তাঁর দাবি, বাগদা থেকে বস্তা বস্তা টাকা গিয়েছে কলকাতায়। শুধু তিনি নন, গ্রামের এক পরিবারের থেকে পাঁচজনের চাকরির জন্য ৪৪ লক্ষ টাকা নিয়েছেন চন্দন বলে দাবি স্থানীয় এক বাসিন্দার।
এদিন অনুপবাবু বলেন, ‘সরকার কি জানে না এই চাকরি কী করে হচ্ছে? তাহলে আগা থেকে মাথা পর্যন্ত সব ধরুক। চন্দনকে একা দোষ দিলে হবে না। এ কার মাস্টারপ্ল্যান? যারা সরকার চালাচ্ছে, শিক্ষা দফতরে কারা আছে? চন্দন কে? চন্দন তো আমার মামাভাগ্নের (গ্রামের নাম) ছেলে। তাহলে কলকাতায় শিক্ষা পরিচালনা কারা করছে? শিক্ষা দফতর কারা চালাচ্ছে? সেটা আগে দেখুক।’ চন্দনের কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় আসতেন ওনার বাড়ি। যারা এই এলাকায় বড় বড় চাকরি করে আর প্রভাবশালী লোক, সবাই ওখানে গিয়েছে। চন্দনের ফোঁটা সবাই নিয়েছে।’ অনুপবাবুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘আমরা রাজনৈতিক কর্মী। দলের কর্মীরা ভালোবেসে কোথাও ডাকলে যাওয়ার চেষ্টা করি। তেমনই বাগদাতেও গেছি। চন্দন মণ্ডলকে আলাদা করে চিনি না।’
অনুপ দাবি করেন, কালীপুজোর ফিতে কাটতে প্রতি বছর চন্দনের বাড়ি আসতেন কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যত ভিড় না থাকত, চন্দনের বাড়িতে তার থেকে বেশি ভিড় থাকত। এলাকার ১০০ জনকে টাকার বিনিময়ে চাকরি দিয়েছেন চন্দন। ক্লাস এইট পাশ ছেলেমেয়েরা টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছে। সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি দেওয়া হতো বলে দাবি করেছেন তিনি। ১৬ কোটি টাকা লেনদেনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন ১৬ কোটি বস্তা বস্তা টাকা গিয়েছে এখান থেকে। তাঁর দাবি, বিডিও, ওসিদের যাতায়াত ছিল চন্দনের বাড়িতে।
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার কুন্তলের মুখে রহস্যময়ীর নাম! তাঁর কাছেই রয়েছে সব টাকা! কে তিনি?
চন্দন মণ্ডল বাগদার মামা ভাগ্নে গ্রামের বাসিন্দা। ওই গ্রামের বাসিন্দা তথা চন্দনের এক দূরসম্পর্কের আত্মীয় অরবিন্দ বিশ্বাসের দাবি, চন্দন মণ্ডলকে তিনি প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। জমি বিক্রি করে ওই টাকা দেন তাঁর মেয়ে সহ পরিবারের পাঁচজনের চাকরির জন্য। প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক ও গ্রপ-ডি পদে নিয়োগ পেতে দু’বছর আগে চন্দনকে ওই টাকা দেন তিনি। মাথা-পিছু ১২ লক্ষ টাকা করে চেয়েছিলেন চন্দন। অগ্রিম ৫ লক্ষ টাকা এবং চাকরি হয়ে গেলে বাকি ৭ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা হয়। দু’জনের গ্রুপ-ডি পদে চাকরিও হয়েছিল। কিন্তু দু’মাস চাকরি করার পর আদালতের নির্দেশে তাদের বরখাস্ত করা হয়। এরপর টাকা ফেরত চাইলেও চন্দন দেননি বলে অভিযোগ অরবিন্দ বিশ্বাসের।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।