কোটি টাকা লোন পাওয়ার আশায় পূর্ব মেদিনীপুরের সায়ন্তন গুড়িয়া নামে এক ঠিকাদার প্রতারিত হয়েছেন। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ফাইল ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ অভিনব কায়দায় প্রতারণা (Cheating)। প্রতারিত হলেন এক ব্যবসায়ী। ব্যবসার লোনের জন্য পার্কস্ট্রিটের এক বেসরকারি সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছিলেন সায়ন্তন গুড়িয়া নামে এক ঠিকাদার। তাঁর বা়ড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার ঘাঘরা গ্রামে। কোটি টাকা লোন পাওয়ার আশায় তিনি ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু, তারজন্য তাঁকে এত খেসারত দিতে হবে তা তিনি স্বপ্নেও ভাবেননি। কোটি টাকা লোন পাওয়া তো দূরের কথা, উলটে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে দুদফায় ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। প্রতারিত (Cheating) হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে মাথায় হাত ব্যবসায়ীর। তিনি ইতিমধ্যেই মহিষাদল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু, বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
কোটি টাকার লোন পাইয়ে দেওয়া হবে বলে ১৪ মার্চ সায়ন্তনবাবুর কাছে পার্কস্ট্রিটের একটি বেসরকারি সংস্থার থেকে ফোন আসে। শুরুতে হোয়াটসঅ্যাপে আধার কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, প্যান কার্ড ইত্যাদির ছবি পাঠাতে বলা হয়। লোন পাওয়ার আশায় ওই সংস্থার কর্মকর্তাদের বিশ্বাস করে সবকিছু পাঠিয়েও দেন তিনি। ১৬ তারিখ সকালে ফোন করে সংস্থার ওই আধিকারিক লোনের ব্যাপারে কথা বলার জন্য বাড়িতে আসার কথা বলেন। বাড়িতে গিয়ে ফের সমস্ত নথির জেরক্স -সহ লগ ইন চার্জ হিসেবে ১৯৯ টাকা অ্যাকাউন্টের চেকে দিতে বলা হয়। বিশ্বাস করে ওই ব্যক্তির দেওয়া পেনে দুটো চেক লিখে দেন তিনি। পরের দিনই জানতে পারেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, পুরোটাই ‘ম্যাজিক পেনে’র কারসাজি। ১৭ মার্চ মহিষাদল থানায় অভিযোগ করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মূলত ম্যাজিক পেন দিয়ে এই কারসাজি করেছে প্রতারকরা। ম্যাজিক কালির পেন ব্যবহার করেছে তারা। যা রবার দিয়ে সহজেই মুছে ফেলা যায়। ওই ব্যবসায়ী চলে যাওয়ার পর তাঁর চেকে সই অক্ষত রেখে রবার দিয়ে টাকার অঙ্ক মুছে নিজেদের পছন্দের টাকার অঙ্ক লিখেই কেল্লা ফতে করেছে জালিয়াতরা। তবে,শুধু ম্যাজিক পেনের ব্যবহার নয়, টাকা তোলার আগে ব্যবসায়ীর নথি জমা করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বরটিও ১৭ তারিখ সাময়িকভাবে ব্লক করে দেয় প্রতারকরা। ফলে, সুখদেব দাস ও সাবির রহমান নামে দুই প্রতারক দুটি চেকের মাধ্যমে যথাক্রমে ৯৫ হাজার ৫০০ এবং ৪৮ হাজার ৫০০ টাকা তুলে নিলেও সিম বন্ধ থাকায় ফোনে টাকা তুলে নেওয়ার কোনও মেসেজ পাননি ব্যবসায়ী। ১৭ তারিখ দুপুরে কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, তাঁর নথি জমা দিয়ে কেউ বা কারা সিমটা বন্ধ করে দিয়েছে। এরপর আধার কার্ড দিয়ে পুনরায় সিম চালু করেন তিনি। কিন্তু, ততক্ষণে সব শেষ।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।