এক ঝলক দেখলে মনে হয়...
নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুলকি চালে চলছে মোষের গাড়ি। মোষের পিঠে লাঠির ঘা দিতে দিতে চালক বলছেন, হ্যাট, হ্যাট। মার খেয়ে জোরে গাড়ি টানার চেষ্টা করছে মোষ। বাঁশ আর চটে ঘেরা মোষের গাড়িতে পাচার হচ্ছিল কয়লা (Coal Smuggling)। বস্তায় ভরা। ওপরে ছড়ানো ছিল খড়। এক ঝলক দেখলে মনে হয়, গবাদি পশুর খাবার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে মোষের গাড়ি টানার ধরন দেখে সন্দেহ হয় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের। গাড়ি থামান তাঁরা। পুলিশ দেখে আঁধার রাতে গা ঢাকা দিয়েছেন মোষের গাড়ির চালকরা। খড় সরিয়ে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। দেখে, বস্তায় ভর্তি কয়লা। পরপর ছটি গাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রায় ১২ টন কয়লা। শুক্রবার গভীর রাতে ওই কয়লা বাজেয়াপ্ত হয়েছে বীরভূমের (Birbhum) সদাইপুর থানার রেঙ্গুনি গ্রামের রাস্তা থেকে। ছটি গাড়ি ভর্তি কয়লা কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, দুবরাজপুরের সালুঞ্চি গ্রাম থেকে সদাইপুর এলাকা হয়ে সিউড়ির দিকে যাচ্ছিল ৬টি মোষের গাড়ি। সূত্র মারফত খবর পেয়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মোষের গাড়িগুলিতে কয়লা বোঝাই রয়েছে। সেই মতো রেঙ্গুনি গ্রামের রাস্তায় ওত পেতেছিল পুলিশ। গাড়িগুলি ওই এলাকায় আসতেই সেগুলিকে আটক করা হয়। বাজেয়াপ্ত হয় কয়লা।
এদিকে, কয়লা পাচার করতে গিয়ে মহম্মদবাজার থানার পুলিশের হাতে ধৃত এক ট্রাক চালক। ভুয়ো চালান কেটে ইসিএলের খনি থেকে কলয়া পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, ট্রাক চালক যে চালান দেখান, তাতে মুর্শিদাবাদের এক ব্যক্তির নাম ছিল। যদিও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, এই কয়লা তাঁর নয় বলে পুলিশকে জানিয়ে দেন ওই ব্যক্তি। পরে অবশ্য ওই কয়লা ঝাড়খণ্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে স্বীকার করেন ট্রাক চালক। এর পরেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
আরও পড়ুুন: বেনামি অ্যাকাউন্টে নথি কার? গরুপাচার কাণ্ডে আরও ঘনীভূত রহস্য
এর আগেও বীরভূমের বিভিন্ন এালাকায় কয়লা পাচারের অভিযোগ উঠেছে। লরি, পিকআপ ভ্যানের পাশাপাশি মোষের গাড়ি মায় বাইকে করেও কয়লা পাচারের অভিযোগ উঠেছে। কয়লা পাচারকে কেন্দ্র করে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করছে ইডি, সিবিআই। গ্রেফতার করা হয়েছে অনেককে। তার পরেও রাশ টানা যায়নি কালো হীরে পাচারে। বীরভূম রয়েছে বীরভূমেই!