Contai Tender Scam: এবার ‘ভুয়ো’ এফআইআর! কাঁথি টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় সিবিআই-নির্দেশ হাইকোর্টের

অভিযোগকারীকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ আদালতের...
Calcutta_highcourt
Calcutta_highcourt

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এবার কাঁথি টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই মামলায় শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দুর ঘনিষ্ঠ রামচন্দ্র পান্ডার গ্রেফতারির ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। এই মর্মে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে আগামী পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে রিপোর্ট জমার নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। যে এফআইআর-এর ভিত্তিতে রামচন্দ্রকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেই তৃতীয় এফআইআরের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে বেঞ্চ। রামচন্দ্রের জামিন মঞ্জুর করা হয়। একইসঙ্গে, অভিযোগকারিনীকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।

ঘটনার প্রেক্ষাপট কী?

গত বছর, কাঁথি পুরসভার একটি টেন্ডার দুর্নীতি নিয়ে সরগরম হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। কারণ, ওই দুর্নীতির অভিযোগের তির ছিল শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দুর দিকে। ২০১৯-২০২০ সালে কাঁথি পুরসভার শ্মশানের সংস্কারের বরাত পেয়েছিলেন ঠিকাদার রামচন্দ্র পান্ডা, যিনি শুভেন্দু এবং অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি। অভিযোগ ওঠে, ভুয়ো শংসাপত্রের মালিক রামচন্দ্রকে বরাত দেওয়া হয়। রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, টেন্ডার পেয়েও তিনি কাজ শেষ করেননি। আরও অভিযোগ, ওই টেন্ডারে দেড় কোটির টাকার দুর্নীতি হয়েছে। 

তৃতীয় এফআইআর ঘিরে সন্দেহ

এই অভিযোগের ভিত্তিতে রামচন্দ্র পান্ডার বিরুদ্ধে তিনটি এফআইআর দায়ের হয়। প্রথম দুটি আগে দায়ের হয়েছিল। এরপর গত ২৮ ডিসেম্বর তৃতীয় এফআইআর দায়ের হয়। আর এই তৃতীয় এফআইআর ঘিরে তৈরি হয় যাবতীয় সন্দেহ। কেন? জানা যায়, তৃতীয় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ফ্রেন্ডস ইঞ্জিনিয়ার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সম্পাদক কাকলি পান্ডা। যিনি আবার কাঁথি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু পান্ডার স্ত্রী। আদালতে রাজ্য জানায় যে, কাকলির অভিযোগের ভিত্তিতেই রামচন্দ্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আদালতে রামচন্দ্রের দাবি

আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করেন রামচন্দ্র। হাইকোর্টে তিনি জানান, এই অভিযোগের পিছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। এর আগেও কয়েক বার অভিযোগ করা হয়েছিল। এখন যে এফআইআর করা হয়েছে তা সাজানো বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি আরও জানান, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত হওয়ার দরুন তাঁকে রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হতে হয়েছে।

আরও পড়ুন: ফের আরও এক রুশ নাগরিকের মৃত্যু হল রাশিয়ায়, এবার দেহ মিলল জাহাজে  

কাকলির হলফনামা তলব আদালতের

রামচন্দ্রের দাবির প্রেক্ষিতে অভিযোগকারিনী কাকলির হলফনামা তলব করে আদালত। তাতেই বেরিয়ে পড়ে আসল সত্য। রামচন্দ্রের দাবির সত্যতা রয়েছে বলে বুধবার আদালতে স্বীকার করে নেন কাকলি। তৃতীয় এফআইআর (Contai Tender Scam) সম্পর্কে আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় কাকলি জানিয়েছেন, গত বছর ২৫ ডিসেম্বর কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তাঁকে জোর তুলে নিয়ে গিয়ে অভিযোগপত্র লিখিয়েছেন এবং তাতে সই করতে বাধ্য করেছেন। তিনি এও জানান, ওই অভিযোগপত্রে যা লেখা রয়েছে, তা তাঁর নিজের অভিযোগে ছিলই না। 

আদালতের নির্দেশ

কাকলির হলফনামার প্রেক্ষিতে পুলিশের ভূমিকায় বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, “টেন্ডার দুর্নীতি নিয়ে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার! এও কি সম্ভব?” এরপরই দায়ের হওয়া মামলার মামলার উপর স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। সেইসঙ্গে, ভুয়ো এফআইআর-এর পিছনে প্রভাবশালী যোগ খুঁজতে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি। পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেবে সিবিআই। এদিকে, রামচন্দ্র পান্ডাকে নিঃশর্তে জামিন দেয় বিচারপতি মান্থার বেঞ্চ। একইসঙ্গে, এদিন থেকে রামচন্দ্র ও কাকলিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা ২৪ ঘণ্টা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles