Siliguri: আন্দোলনের জেরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে থ্রেট কালচার-নম্বর দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ কলেজ কর্তৃপক্ষের, তালিকায় কারা কারা আছে জানেন?
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আন্দোলনে চিকিৎসক পড়ুয়ারা (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মতো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল (North Bengal Medical) কলেজেও টিএমসিপি নেতাদের 'থ্রেট কালচার'-এর ফলে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। সেই সঙ্গে পরীক্ষায় কারচুপির বিস্তর অভিযোগ ছিল। বিশেষ করে নম্বর দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসতেই জুনিয়র ডাক্তার ও পড়ুয়াদের আন্দোলনের চাপে ১২ জনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে প্রাক্তন ডিন ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিন ও একজন আরএমও রয়েছেন।
আন্দোলনকারী পড়ুয়া-চিকিৎসকদের অভিযোগ, টিএমসিপি নেতাদের হাতের পুতুল হয়েছিলেন মেডিক্যাল কলেজ (North Bengal Medical) কর্তৃপক্ষ। থ্রেট কালচারের পাশাপাশি টিএমসিপি নেতাদের নির্দেশে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে (Siliguri) এতদিন চলে এসেছিল পরীক্ষায় নম্বরে কারচুপি, নকলে মদত দেওয়ার ঘটনা। কলেজ অনুষ্ঠানে টাকা তোলার জন্য জুলুম ও হুমকি দেওয়া হত। সেই টাকার কোনওদিন অডিট হয়নি। ৫২ নম্বর পাওয়া এক পড়ুয়ার নম্বর বাড়িয়ে ৮২ করে দেওয়া হয়েছিল।
গত ৪ সেপ্টেম্বর এর প্রতিবাদে পড়ুয়া ও জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের চাপে একথা স্বীকার করে পদত্যাগ করেন মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত, সহকারি ডিন সুদীপ্ত শীল। এই দু'জনের সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিত সাহার পদত্যাগের দাবিতে গত ৪ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীরা তাঁদের ঘেরাও করে রাখেন। রাতে সন্দীপ সেনগুপ্ত, সহকারি ডিন সুদীপ্ত শীল পদত্যাগ করলেও আশ্চর্যজনকভাবে অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিত সাহার পদত্যাগের দাবি থেকে সরে আসেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
আরও পড়ুন: 'থ্রেট কালচার'-এর অভিযোগ! আন্দোলনকারীদের প্রবল চাপে সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ ৫১ জনকে নোটিস
আন্দোলনের (North Bengal Medical) চাপে সুপারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন অধ্যক্ষ। তদন্তে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে আলোকপাত করা হয়নি। থ্রেট কালচারের হুমকি নিয়ে তদন্ত কমিটি সবপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সোমবার রিপোর্ট জমা দেয়। সেই রিপোর্টেই তিন আধিকারিক সহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ৯ ছাত্র নেতা। আধিকারিকদের মধ্যে প্রাক্তন ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত, সহকারি ডিন সুদীপ্ত শীল ও আরএমও নিলাব্জ ঘোষকে আপাতত ছুটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে কলেজ কাউন্সিল। অধ্যক্ষ বলেন, তিন হাউসস্টাফ শাহিন সরকার, শাহিনুল ইসলাম ও রিতুরম্ভ সরকার, সোহম মণ্ডল, জয় লাকড়া, তীর্থঙ্কর রায়, অরিত্র রায়, ঐশি চক্রবর্তী, শ্রীজা কর্মকারকেও বহিষ্কার করার সুপারিশ করা হয়েছে। সোহম মণ্ডল সহ যাদের নম্বর কারচুপি করার অভিযোগ রয়েছে, তাদের সকলের খাতা ফের মুল্যায়ন করা হবে। এদের মধ্যে তৃণমূল ছাত্র নেতা সোহম মণ্ডল ইন্টার্ন। অরিত্র ও তীর্থঙ্কর ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র। ঐশি, শ্রীজা ও জয় লাকড়া তৃতীয় বর্ষের পার্ট-১ এর ছাত্র।
অন্যতম অভিযুক্ত টিএমসিপির বরখাস্ত নেতা অভীক দে এখানে অবৈধভাবে অডিটোরিয়াম (North Bengal Medical) দখল করে তাঁর জন্মদিন পালন করেছিলেন। অধ্যক্ষ সেই অনুষ্ঠানে থেকেছেন। অভীকের হাত থেকে কেকও খেয়েছেন তিনি। সেকথা স্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ। তাতেই প্রশ্ন, অধ্যক্ষ কেন তদন্তের বাইরে? এই প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিত সাহা বলেন, ‘‘এখানে সবাই আমার অধস্তন। তাই আমার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ রয়েছে, তার সবটাই রাজ্য স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।’’ এ প্রসঙ্গে আন্দোলনকারীদের তরফে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘‘আমরা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি থেকে সরে আসছি না। তাঁর ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কী সিদ্ধান্ত নেয় দেখে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।