উত্তরবঙ্গ জুড়ে সক্রিয় গরু-মহিষ পাচার! কীভাবে জানেন?
এই সব কন্টেনার করে গরু-মহিষ পাচার হয় (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গরু পাচারকাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডল এখন জেলে রয়েছেন। দক্ষিণবঙ্গে এই পাচারচক্র ততটা এখন সক্রিয় না হলেও উত্তরবঙ্গ (North Bengal) জুড়ে রমরমিয়ে শুরু হয়েছে মহিষ এবং গরু পাচার। পুলিশের একটা অংশকে হাতিয়ার করে এই পাচারচক্র চলছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার মানুষ।
কোন পথে পাচার? (North Bengal)
বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত উত্তরবঙ্গের (North Bengal) উত্তর দিনাজপুর, দার্জিলিং জেলার বিধাননগর, ঘোষপুকুর পেরিয়ে ফুলবাড়ি হয়ে জলপাইগুড়ি ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, বানারহাট, বীরপাডা হয়ে বারোবিষা সীমান্ত দিয়ে অসমে ঢুকে পড়ছে বেআইনি গরু ও মহিষ বোঝাই গাড়িগুলি। অসমের কয়েকটি জেলা পার হয়ে সোজা মেঘালয়ে চলে যায় গাড়িগুলি। উত্তরের ছয়টি জেলা পার হতে পারলে কেল্লাফতে এই পাচারকারীদের। জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ থেকে মহিষ এবং গরু নিয়ে এসে পাঞ্জিপাড়ায় সেগুলোকে নামানো হয়। সেখান থেকে কন্টেনার গাড়ি করে (যে গাড়িগুলি চারদিক বন্ধ) অসম এবং মেঘালয়ের উদ্দেশে রওনা করা হয়। একেবারে অস্বাস্থ্যকর এবং দমবন্ধ পরিবেশে গাড়িগুলিতে ওই মহিষগুলিকে নিয়ে যাওয়া হয়। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই যে ওই গাড়ি গুলিতে গরু-মহিষ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতি গাড়িতে ২৪-২৬ টি মহিষ নিয়ে যাওয়া হয়। যার অধিকাংশেরই বৈধ কাগজ নেই। গাড়িগুলিরও লাইভ স্টক পারমিট নেই বলেই জানা গেছে।
সম্প্রতি, বীরপাড়ায় একটি স্পেশাল চেকিংয়ে ৬ টি কন্টেনার গাড়ি থেকে ২৩৮ টি মহিষ উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জিপাড়া ও আসামের বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু, কীভাবে সম্ভব এই পাচার? পাঞ্জিপাড়া থেকে গাড়ি লোড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই গাড়ির নম্বর পাঠিয়ে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট থানাগুলিতে, যে থানার অধীনের রাস্তা ব্যবহার করে গাড়িগুলি পার হবে। এই এলাকাগুলি পেরিয়ে গেলে বারোবিষা বা বক্সিরহাট সীমান্তে সেই গাড়িগুলির নম্বর মিলিয়ে দেখা হয় এবং বিনা চেকিং করেই গাড়িগুলি ছেড়ে দেওয়া হয়। পাঞ্জিপাড়া থেকে অসম রাজ্য বিনা বাধায় গাড়ি প্রতি একটা পরিমাণ অর্থ নির্ধারণ হয়। সেই অর্থই সংশ্লিষ্ট থানা এবং কিছু আধিকারিকের কাছে পৌঁছে যায়। প্রতিদিন প্রায় ৩৫-৪০ টি গাড়ি করে এই ভাবেই গরু-মহিষ পাচার হচ্ছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।