উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ-বিপর্যয়ে ত্রাতার ভূমিকায় ছিলেন এক বঙ্গসন্তান...জানেন কে?
উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ পথ। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে (Uttarkashi Tunnel) আটকে থাকা শ্রমিক উদ্ধার কাজের দ্বায়িত্ব ছিলেন সিঙ্গুরের বঙ্গ সন্তান। ১৭ দিন ধরে সুড়ঙ্গের মধ্যে আটকে ছিলেন ৪১ জন শ্রমিক। উদ্ধার কাজে বিদেশী মেশিনের সাফল্য তেমন ভাবে কাজে লাগেনি। ভারতীয় পদ্ধিতিতেই উদ্ধারের সাফল্য এসেছে। ওই সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছিলেন বাংলার তিন শ্রমিক। সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে পড়া শ্রমিকরা কীভাবে রয়েছেন? খাবার পৌঁছেছে কি না? ইত্যাদি বিষয়ে ক্যামেরা পৌঁছে দিয়ে খবর আদান প্রদান কাজ করেছেন বঙ্গের এক সন্তান। আটকে থাকা শ্রমিকের পরিবারের কাছে তাঁর ক্যামেরাই সেই সময় আশার আলো দেখিয়েছিল।
৪১ জন শ্রমিককে সুড়ঙ্গ (Uttarkashi Tunnel) থেকে উদ্ধার করতে সিঙ্গুরের এই যুবকের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি মূলত ক্যামেরা দিয়ে সুড়ঙ্গের ভিতরের দৃশ্যকে সকালের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। আটকে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের কাছে খুশির খবর পৌঁছে দিয়েছিলেন। যুবকের নাম দৌদীপ খাঁড়া। তাঁর বাড়ি হুগলির সিঙ্গুরে। বাবা দীনেশ চন্দ্র খাঁড়া এবং মা সবিতা দেবী। ছেলের কাজের জন্য মায়ের চোখে জল দেখা গিয়েছে এদিন। সিঙ্গুর মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতেন। এরপর নালিকুল বাণী মন্দির থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন। ঠিক তারপরেই ধুলাগড়ের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনারিং কলেজ থেকে বিটেক পাশ করেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি সংস্থায় কনস্ট্রাকশনের পাইপলাইনে কাজ করেন।
সুড়ঙ্গের (Uttarkashi Tunnel) মধ্যে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে ‘ফ্লেক্সি প্রো ক্যামেরা’ পাঠানোর কাজ করছেন দৌদীপ। তাঁর কাজ খুব একটা সহজ ছিলনা। মাঝে মাঝে সুড়ঙ্গের অংশ বিশেষ ভেঙে পড়ছিল। প্রবেশের গতিপথে ছিল প্রচুর চাঙড় এবং লোহার রড। খনন করার যন্ত্রে চলছিল ব্যাপক কম্পন। তবে তাঁর ভূমিকা যে গোটা উদ্ধার কাজে ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেই বিষয়ে নিজেও বুঝতে পেরেছিলেন।
সুড়ঙ্গে (Uttarkashi Tunnel) উদ্ধার কাজে যুক্ত থাকায় দৌদীপ বলেন, “প্রথম যখন ক্যামেরাতে আটকে থাকা শ্রমিকদের দৃশ্য দেখতে পাই সেই সময় অবাক হয়ে গিয়েছিলেম। শব্দ দিয়ে সেই অভিজ্ঞতার কথা বোঝানো কঠিন। উদ্ধারের পর শ্রমিকার আমাদের টিমের সঙ্গে সকলকে বুকে জড়িয়ে নেন। এর থেকে আর কি বড় পাওনা হতে পারে।” দৌদীপের মা বলেন, “ছোট বেলা থেকে ও খুব ভীতু ছিল কিন্তু এই সুড়ঙ্গের উদ্ধারকাজে যা করল তাতে আমরা ভীষণ ভাবে গর্বিত।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।