পাহাড়ের হোমস্টে থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন পর্যটকরা! কেন জানেন?
প্রতীকী চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভাবছেন পাহাড়ের কোলে হোমস্টে'তে (Homestays in Darjeeling) পরিবার নিয়ে পুজোর কটা দিন সুন্দরভাবে কাটাবেন। অনেকে বুকিং সেরেও ফেলেছেন। আবার অনেকে খোঁজখবর করছেন। কিন্তু হোমস্টে'তে আসার পর ধাক্কা খেতে হতে পারে। কারণ পর্যটকরা বারবার অভিযোগ করছেন, অধিকাংশেরই থাকার ব্যবস্থা অস্বাস্থ্যকর, খাবার খুবই সাধারণ। যা দেখে ঘোরার আনন্দটাই মাটি হয়ে গেছে তাঁদের। একবার যাঁরা থেকেছেন, আর হোমস্টে'তে আসছেন না-একথা বলছেন খোদ ট্যুর অপারেটররাও।
কেন এই অবস্থা?
ভুক্তভোগীরা বলছেন, পরিকাঠামো উন্নয়নে যথেষ্ট খামতি রয়েছে। রাস্তা ভালো নেই। হাতের কাছে জরুরি চিকিৎসা পরিষেবাও মেলে না। পাহাড়ের গ্রামীণ এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের নতুন দিশা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হোমস্টে'কে বড় করে দেখিয়েছিলেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের উদাসীনতা ও নীতি নির্ধারণের দুর্বলতার কারণেই পাহাড়ের হোমস্টে থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। কেননা পর্যটকরা প্রত্যাশামতো পরিষেবাও পাচ্ছেন না। থাকার ব্যবস্থা আহামরি নয়। খাবারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ জানিয়ে গিয়েছেন পর্যটকরা।
ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সন্দীপন ঘোষ বলেন, ভিন রাজ্য ও দেশের পর্যটকরা এখানকার হোম স্টে (Homestays in Darjeeling) থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছেন। প্রত্যেকেই পয়সা খরচ করে ঘুরতে আসেন পরিবারকে নিয়ে কয়েকটি দিন রিল্যাক্স করার জন্য। এখানকার হোম স্টেগুলি সেভাবে গড়ে ওঠনি। পরিষেবা সহ সামগ্রিক ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় বাইরের পর্যটকরা আসতে চান না।
অসুখ আরও গভীরে
একাধিক হোমস্টে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, কমিউনিটি ট্যুরিজমের অন্যতম কর্তা দেবাশিষ চক্রবর্তী বলেন, ঠিকমতো পরিকাঠামে গড়ে না ওঠায় এখানে হোমস্টে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। তার মধ্যে কলকাতার একদল হোটেলিয়ার্স লিজ নেওয়ার পর থেকে এখানকার হোমস্টের আরও পতন শুরু হয়েছে। সস্তার বুকিংয়ে (Homestays in Darjeeling) মুনাফা করার জন্য হোটিলিয়ার্সরা যে পর্যকদের এখানে পাঠাচ্ছেন, তাঁরা ইচ্ছেমতো আমোদ-প্রমোদ করে ঘুরে যাচ্ছেন। এতে পাহাড়ের গ্রামীণ এলাকার নিজস্ব সংস্কৃতি, পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। শান্ত নিরীহ গ্রামীণ এলাকার আগামী প্রজন্মের কাছে বিপথগামীতার পথ খুলে দিচ্ছে। এতে হোমস্টে পাহাড়ের গ্রামবাসীদের কাছে আতঙ্কের হয়ে উঠেছে। এব্যাপারে রাজ্য সরকারের কোনও খেয়াল নেই।
দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা বারবার বলে আসছেন, হোমস্টে (Homestays in Darjeeling) থেকে পাহাড়ের মানুষের কোনও লাভ হয়নি। সম্প্রতি পাহাড়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, নিজস্ব সম্পত্তিতে গ্রামের নিরীহ মানুষ কর্মচারী হয়ে কাজ করছেন। কেউ স্বনির্ভর হয়ে ওঠেননি।
সন্দীপন ঘোষ ও দেবাশিষ চক্রবর্তী বলেন, সম্প্রতি সিকিম সরকার বাইরের কাউকে হোমস্টে (Homestays in Darjeeling) লিজ দেওয়া বন্ধ করেছে। এখানেও রাজ্য সরকারকে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই সঙ্গে হোমস্টের ঘর ও অন্যান্য ব্যবস্থা আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। খাবারের মানের দিকেও নজর দেওয়া দরকার।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।