যে দিদি তাঁকে দেখলেই বুঝে যেতেন মাথায় অক্সিজেন পর্যাপ্ত নাকি কম, সেই দিদিই কেষ্টর বাঁশির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন না। ফলে নিদ্রাহীন নিশিযাপন করছেন বীরভূমের ‘ঢাকবাদক’ অনুব্রত মণ্ডল।
সুসময়ে কাছাকাছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডল
মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ টান টান কেষ্ট! দিদি তাঁর ফোন ধরছেন না। সিবিআইয়ের (CBI) ডাক এসেছে। যে দিদি তাঁকে দেখলেই বুঝে যেতেন মাথায় অক্সিজেন(Oxygen) পর্যাপ্ত নাকি কম, সেই দিদিই(DIDI) কেষ্টর বাঁশির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন না। ফলে নিদ্রাহীন নিশিযাপন করছেন বীরভূমের ‘ঢাকবাদক’ অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)।
তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামীকাল সোমবার গরু পাচার মামলায় ফের কেষ্টকে তলব করেছে সিবিআই। নিজাম প্যালেসে(NIZAM palace) হাজির হয়ে তাঁকে জবাব দিতে হবে তদন্তকারী সংস্থার নানা প্রশ্নের। অনুব্রতের দেহরক্ষী এখন আসানসোল জেলে। তাঁর ১০০ কোটি টাকার বেশি সম্পত্তি মিলেছে। গরু, কয়লা, বালি, পাথর পাচারের বেআইনি কারবারের নানা তথ্য সিবিআই, ইডির সংগ্রহে এসেছে। তাতেই বীরভূমের তোলাবাজির মূলপাণ্ডা হিসাবে নাম উঠে এসেছে কেষ্ট মণ্ডলের। তদন্তকারীদের হাতে এসেছে অকাট্য প্রমাণ। ফলে ডাক এসেছে সিবিআইয়ের।
সূত্রের খবর, গত ৫ অগষ্ট সাঁইথিয়াতে এক জনসভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu) ঘোষণা করে দিয়েছেন, মোটা পার্থর সঙ্গে এবার জেলে যাবেন মোটা কেষ্ট। বিরোধী দলনেতার এই ঘোষণার পরেই তৃণমূল শিবিরে হইহই পড়ে গিয়েছে। সাঁইথিয়ার সভার দিনেই সিবিআইয়ের এক আধিকারিক বোলপুরে নীচুপট্টির বাড়ি গিয়ে ফের হাজিরার নোটিস ধরিয়েছেন।
ফের গরুপাচার মামলায় অনুব্রতকে তলব সিবিআইয়ের, হাজির হবেন কেষ্ট?
তৃণমূল সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের নোটিস (CBI Notice) পেয়ে সে দিনই পেট খারাপ হয় ঢাকবাদকের। বার বার ফোনে ধরার চেষ্টা করেন তাঁর দিদিকে। কিন্তু দিদি কেষ্টর ফোন ধরেননি। ঘনিষ্ঠ মহলে এ নিয়ে আক্ষেপও করেছেন কেষ্ট। জানিয়েছেন, এত দিনের লড়াইয়ের সঙ্গী আমি। বিপদে পড়েছি যখন, তখন দিদি আর ফোন ধরছেন না। তবে সিবিআইয়ের সামনে আর যেতে চান না অনুব্রত। তিনি সোমবারই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ফের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে চান। তৃণমূলের এক নেতা মুচকি হেসে জানান, কেষ্টটার অবস্থা সঙ্গীন। তিনি সিবিআই দফতরে যাওয়ার চাইতে তাঁর যে কোষে পুঁজ জমেছিল, সেখানে আবার পুঁজ জমার প্রার্থনা করছেন। এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে আবার ভর্তি হতে চলেছেন তিনি।
গরু পাচার মামলায় বিপুল সম্পত্তির হদিশ অনুব্রতর? আদালতে তথ্য দিল সিবিআই
তৃণমূলের অনেকেই মনে করছেন, কেষ্টর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন, টুলু মণ্ডল, কেরিম খানের কাছ থেকে তল্লাশি চালিয়ে যে সব নথিপত্র উদ্ধার হয়েছে তাতে বীরভূমের কেষ্ট, তাঁর মৃত স্ত্রী এবং কন্যার নামে কয়েকশো কোটি টাকার সম্পত্তি কোথা থেকে হয়েছে, তা জানাতে হবে। সেই পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে চাইছেন তিনি। নিজের অ্যারেস্ট মেমোয় পরমাত্মীয় বলে মুখ্যমন্ত্রীর নাম-টেলিফোন নম্বর লিখে দিয়েছিলেন সদ্য প্রাক্তন শিল্প মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই পার্থবাবুকে ঝেড়ে ফেলতে খুব বেশি সময় নেয়নি তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীও নিজের দায় এড়িয়ে গিয়েছেন। এ বার কেষ্টর পালা? তাই কি কেষ্টর ফোন আর ধরছেন না তাঁর দিদি।