দিনহাটায় সক্রিয় জমি হাঙর!
প্রতীকী চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দিনহাটায় (Dinhata) জমি জায়গার অবৈধ কারবারের অভিযোগ উঠল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর (Udayan Guha) অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ শাসকদলের ছত্রছায়ায় একাধিক জায়গায় চলছে অবৈধভাবে জমি বেচা কেনার কারবার। অভিযোগ যে উড়িয়ে দেওয়ার মত নয় কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন উদয়ন গুহ। মঙ্গলবার সমাজমাধ্যমে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ লিখেছেন, “জমি সংক্রান্ত কোনও সমস্যায় আমার মাথা ব্যথা নেই। যারা আমার নাম ব্যবহার করে তারা নিজেদের স্বার্থে করে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, “উদয়ন গুহর অনুগামীরা মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে জমির আসল মালিকদের ভয় দেখাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে জমি মালিকের অজান্তেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। জমি বেচাকেনার অবৈধ কারবার চলছে গোটা দিনহাটা (Dinhata) জুড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযুক্তরা তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত। প্রসঙ্গত মন্ত্রীর নাম কারা ব্যবহার করে এবং কেনই বা তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি জিজ্ঞেস করা হলে উদয়ন বলেন, “আমার কাছে খবর আছে কেউ কেউ আমার নাম উল্লেখ করে বা আমার নাম ভাঙ্গিয়ে জমি জায়গার ব্যবসা করার চেষ্টা করছে। তাই ওদেরকে সতর্ক করে দিয়েছি। সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যিনি জমি সংক্রান্ত কারবার করবেন নিজের দায়িত্ব করবেন।” দলের তরফে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? প্রশ্ন করা হলে উদয়ন বলেন নির্দিষ্ট করে কেউ আমার কাছে বা পুলিশে অভিযোগ করলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উদয়ন গুহর ওই পোস্টে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, “কারা (Dinhata) বেআইনি জমির কারবার করছে তা শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা ভালই জানেন। তাঁরা জানেন না এ কথা বললে কেউ বিশ্বাস করবে না। আসলে কাটমানিটা তাঁদের কাছেও পৌঁছে যায়। তাই তাঁরা চুপ থাকেন। ধীরে ধীরে সবই প্রকাশ্যে আসছে। চাকরি থেকে জমি সব জায়গায় জড়িত তৃণমূলের নেতারা।”
জমির হাঙরদের রাজত্ব চলছে
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে কিছুদিন আগে দিনহাটার (Dinhata) বোর্ডিং পাড়া এলাকায় একটি জায়গা বিক্রি হয়। এই জমি বিক্রি নিয়ে তৃণমূলের দিনহাটা শহর ব্লক কমিটির এক নেতার নাম জড়িয়ে পড়ে। তিনি উদয়ন গুহর ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। সেই প্রভাব খাটিয়ে ওই জমি কেনা বেচা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে স্টেশন রোড এলাকায় মুচির মাঠ সংলগ্ন একটি জায়গাও মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে জোর করে কেনার চেষ্টা করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের একাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পরে। জানতে পেরে উদয়ন সরব হন বলে জানা যায়। যদিও বিজেপির পাল্টা দাবি, “যে সমস্ত ক্ষেত্রে কাটমানি নেতার কাছে পৌঁছে যায় না। সেই বিষয়েই প্রতিবাদে সরব হন তিনি। বাকি ক্ষেত্রে তিনি চুপ করেই থাকেন।”
কিছুদিন সবকিছু থেমে থাকলেও বর্তমানে ফের ভোটের বাজারে জমি মাফিয়াচক্র সক্রিয় হয়েছে। মনে করা হচ্ছে প্রশাসনের মাথায় এখন ভোটের চাপ। তাই এই সুযোগে স্বার্থসিদ্ধি করার অভিযোগ উঠছে। কোথাও (Dinhata) ভয় দেখিয়ে আবার কোথাও জোর করে বাজার মূল্যের কম দামে জমি কিনে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, “যারা জমি জায়গার কারবার করেন তাঁরা চিরকাল শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকেন। বর্তমানেও তারা শাসক দলের সঙ্গেই যুক্ত হয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করে যাচ্ছে।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।