জামালপুরে একাধিক স্কুলে আসছে না চাল, কবে ঘুম ভাঙবে সরকারের?
প্রতীকী চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় মিড ডে মিলের (Midday Meal) চাল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠছে, স্কুলের ছাত্রদের খাওয়ার জন্য বরাদ্দ চাল উধাও হয়ে যাচ্ছে প্রশাসক এবং ডিলারদের যোগসাজশে। তাই কাগজে কলমে চালের হিসাব থাকলেও বাস্তবে চালের অভাব। এক স্কুল, অন্য স্কুলের কাছে হাত পাততে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। তিনি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করার কথা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য রাজ্যে রেশনে দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা উত্তর থেকে দক্ষিণে সর্বত্র তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। বর্তমান শাসক দলের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতেও তল্লাশি হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যের খাদ্য দফতরের এক তৃণমূল নেতা বাকিবুর রহমান গ্রেফতার হয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি রেশনের চাল, আটা বিক্রি করে, অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। একাধিক জায়গায় সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। খাদ্য দফতরে থাকার সময় সরকারি বেতনে এতও সম্পত্তির মালিক কীভাবে হলেন, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তৃণমূল, রেশন দুর্নীতির জালে একেবারে বেকায়দায়।
জামালপুর ব্লকে প্রাইমারি, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র মিলিয়ে স্কুলের সংখ্যা প্রায় আড়াইশোর বেশি। মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৩০ হাজার। এই স্কুলের জন্য জেলায় তিনমাস অন্তর দুই হাজার কুইন্টালের বেশি চাল বিডিও অফিসারের কাছে আসে। এরপর বিডিও সেই চাল, রেশন ডিলার রুমা চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পাঠান বলে জানা যায়।
ব্লকের স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষাদের অভিযোগ হল, "সব ঠিক ছিল কিন্তু গত পাঁচ-ছয় মাস ধরে চাহিদা অনুসারে ঠিক ভাবে চাল পাচ্ছিনা। ফলে প্রভাব পড়ছে মিড ডে মিলে (Midday Meal)। পরিস্থিতি এমনটাই দাঁড়িয়েছে যে অন্য স্কুল থেকে ধার নিয়ে খাবার দিতে হচ্ছে। কার্যত স্কুলে চাল সরবরাহের পুরো ব্যবস্থার মধ্যে দারুণ প্রভাব পড়েছে। এরপর স্কুলগুলির তরফ থেকে বিডিওকে অভিযোগ জানানো হয়। ইতিমধ্যে জ্যোৎশ্রীরাম পঞ্চায়েত এলাকার একটি বিদ্যালয়ের তরফ থেকে, চাল না পাওয়ার কথা জানিয়ে, জেলা শাসকের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।
জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার ডিলারের দিকে আঙুল তুলে বলেন, “কথা ঠিক, সময় মতো ঠিক পরিমাণে চাল স্কুলে যাচ্ছে না। প্রভাব পড়ছে মিড ডে মিলে (Midday Meal)। এই বিষয়ে বেশ কিছু স্কুল আমাকে অভিযোগ জানিয়েছেন। জেলার খাদ্য দফতর থেকে ডিলার রুমা চট্টোপাধ্যায় চাল তুলেছেন। সেই চাল স্কুলে ঠিক ভাবে পৌঁছানোর দায়িত্ব একমাত্র তাঁর। সেটা না হওয়ায়, তার দায়িত্ব ডিলারকেই নিতে হবে।”
অপরে ব্লকের ডিলার রুমা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গাড়ির সমস্যার জন্য সব চাল (Midday Meal) পাঠানো সম্ভবপর হয়নি। পুজোর পর সব চাল স্কুলে পাঠানো হবে।" তিনি আরও বলেন, "গুদামে কয়েকশ কুইন্টাল চাল নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে।”
বিজেপির সহ সভাপতি জিতেন ডকাল প্রশাসন এবং ডিলারদের আক্রমণ করে বলেন, “মিড ডে মিল (Midday Meal) নিয়ে রাজ্য জুড়ে চাল চুরি চলছে। শাসক দলের নেতাদের খুশি করতে ডিলাররা দুর্নীতি করেছেন। সেই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন এই দুর্নীতির সঙ্গে অংশ নিচ্ছেন। আমরা ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চাই।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।