পার্থবাবুর ফোন থেকে উদ্ধার হওয়া মেসেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, যতবারই শিক্ষা দফতরে নিয়োগ হয়েছে পার্থবাবুর কাছে দলের বিধায়ক, সাংসদ, নেতাদের ভূরি ভূরি সুপারিশ জমা পড়ত।
ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়
মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ এসএসসি কাণ্ডের তদন্তে নেমে একের পর এক পর্দা ফাঁস হচ্ছে বলে ইডি-সিবিআইয়ের দাবি। নাকতলার বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে প্রাক্তন শিল্প মন্ত্রীর মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। সেই ফোনের ভিতরে ঢুকে কার্যত বহু রহস্য কিনারার সূত্র মিলেছে। পার্থবাবুর ফোন থেকে প্রায় ৩০ হাজার মেসেজ পাওয়া গিয়েছে। সেই সূত্রেই শিক্ষা দফতরের কেলেঙ্কারির একাধিক নতুন দিক পাওয়া যাচ্ছে। যদিও সিবিআই-ইডিকে কলকাতা হাইকোর্ট শুধুমাত্র নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তভার দিয়েছে। ফলে শিক্ষা দফতরের বাকি বিষয় তদন্তকারীরা আপাতত দূরে সরিয়ে রাখছেন। তবে বাহারি মেসেজ দেখে তাঁরা মানছেন, পার্থবাবু একজন রসিক ব্যক্তি।
ইডি-সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের দাবি, পার্থবাবুর ফোন থেকে উদ্ধার হওয়া প্রতিটি মেসেজ পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তাতে প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে,যতবারই শিক্ষা দফতরে নিয়োগ হয়েছে পার্থবাবুর কাছে দলের বিধায়ক, সাংসদ, নেতাদের ভূরি ভূরি সুপারিশ জমা পড়ত। একশোর বেশি বিধায়কের সুপারিশ তালিকা প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর ফোনে রয়েছে। ইডি সেগুলি মিলিয়ে দেখবে কোন কোন নেতার কতগুলি সুপারিশ মেনে চাকরি দেওয়া হয়েছে। চাকরি প্রাপকেরার সত্যিই পরীক্ষা দিয়ে নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছে, নাকি টাকার বিনিময়ে চাকরি মিলেছে তাদের। সেই কারণেই প্রাথমিকে নিয়োগ পাওয়া সমস্ত শিক্ষকের নথি সিবিআইয়ের কাছে জমা করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। তদন্তকারীদের দাবি, শুধুমাত্র দলীয় বিধায়ক-সাংসদ নয় বেশ কয়েকজন বিরোধী দলের নেতার সুপারিশের মেসেজও মিলেছে। প্রয়োজনে তাঁদেরও ডাকা হতে পারে।
'টাকা মাটি মাটি টাকা'! সেলে পার্থর হাতে কথামৃত! ফিরবে চৈতন্য?
নিয়োগ দুর্নীতি ছাড়াও ৩০ হাজার মেসেজের পাহাড় থেকে তৃণমূল সরকারের প্রায় প্রতিটি দফতরের নানা অনিয়মের ইঙ্গিতও মিলেছে। দলের মহাসচিব থাকাকালীন বিভিন্ন দফতরের নানাবিধ তথ্যও তাঁর কাছে আসত। সে সব দেখেও অবাক তদন্ততকারীরা। তবে কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইয়ের হাতে কেবলমাত্র নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তাদেশ দিয়েছে। ফলে শুধুমাত্র সে বিষয়েই নিজেদের আপাতত সীমাবদ্ধ রাখছেন তদন্তকারীরা।
তাঁদের একাংশ জানাচ্ছেন, ফরেনসিক পরীক্ষার পর উদ্ধার হওয়া বার্তাগুলির বিশ্লেষণ বেশ বড় কাজ। প্রতিটি বার্তার কোডিং করতে হবে। জানা যাচ্ছে, ইডি হেফাজতে তদন্তে বিশেষ সহযোগিতা করেননি পার্থবাবু। এই অসহযোগিতায় এসএসসি তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হতে পারে। কারণ তথ্য-নথি তদন্তকারীদের হাতে যে ভাবে প্রতিদিনই এসে পৌঁছচ্ছে তাতে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় শান্তিপ্রসাদ সিন্হা ও অশোক সাহাকে গ্রেফতার সিবিআইয়ের
পার্থবাবুর ফোনের মেসেজের বিশ্লেষণ করে তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, মহাসচিব একজন রসিক মানুষ। তা হলে কি অর্পিতার মতো আরও কয়েকজন পরিচিতাকে নিয়ে যে সব তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, সে দিকেই ইঙ্গিত করছেন তদন্তকারীরা। মুচকি হাসা ছাড়া কোনও জবাব নেই তাঁদের মুখে।