খড়দায় সারারাত ধরে চলত প্রতারকদের অফিস, বার বার দুবাই যাওয়ার হদিশ পেয়েছে পুলিশ
ধৃত প্রতারকরা (ফাইল ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: খড়দায় কল সেন্টারের আড়ালেই চলত বিশাল প্রতারণা চক্র। আমেরিকা, কানাডার নাগরিকদের অ্যাকাউন্ট সাফ করার অভিযোগ উঠেছিল প্রতারকদের বিরুদ্ধে। প্রায় আট হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ প্রতারকদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে। এবার সেই প্রতারণার আট হাজার কোটি টাকা কোন কোন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাখা হয়েছে, তারই হদিশ শুরু করেছে বারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। ইতিমধ্যে বিদেশে বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কের হদিশ পেয়েছে পুলিশ। অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। যে সব ব্যাঙ্কের হদিশ পেয়েছে পুলিশ, তাদের কাছে নথি চেয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। এই বিশাল চক্রের পিছনে বড় কোনও মাথা রয়েছে। তার মাধ্যমেই সমস্ত প্রতারণা (Fraud) চক্রটি অপারেট করা হত। ভিনরাজ্য সে গা ঢাকা দিয়ে বসে রয়েছে বলে পুলিশের আশঙ্কা। তার খোঁজেই ভিন রাজ্যে যাচ্ছে কমিশনারেটের একটি টিম।
দুবাই, ব্যাঙ্কক বার বার যেত প্রতারকরা (Fraud)
বলরাম হাসপাতালে কাছে একটি বাড়িতে ঘরভাড়া নিয়ে প্রতারণা (Fraud) চক্র চলত। সৈয়দ শাহাবাজ হাসান ঘর ভাড়া নিয়েছিল। সন্ধ্যে সাতটা থেকে সারারাত ধরে অফিস চলত। ভোরের দিকে কর্মীরা বাড়ি চলে যেত। সারারাত ধরে চলত প্রতারণা চক্র। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বুলেট সহ দামি দামি বাইক নিয়ে কর্মীরা কাজ করতে আসত। পুলিশ তদন্ত নেমে জানতে পেরেছে, প্রতারকরা বিলাসবহুল জীবনযাপন করত। একাধিকবার দুবাই ও ব্যাংকক যাওয়ারও তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। সেখানে তারা কেন বার বার যেত সেই এটাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে। কয়েকদিন আগে দেরদুন থেকে কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, তারা প্রত্যেকেই পাঁচতারা হোটেলে ছিলেন। বিদেশে যে অ্যাকাউন্টগুলিতে টাকা রাখা হত, সেখানে কোনও চক্র রয়েছে কিনা সেটাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে। বিটকয়েন এবং হাওলার মাধ্যমে ওই টাকা আসত বলে পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারকরা মূলত ভয়েস চেঞ্জারের মাধ্যমে বিদেশিদের সঙ্গে কথা বলে প্রতারণা (Fraud) করত। তাঁদের কম্পিউটারের অ্যান্টি ভাইরাসের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে, নতুন করে অ্যান্টি ভাইরাস দেওয়ার জন্য তারা লিংক পাঠাত। সেই লিংকে ক্লিক করলেই অ্যাকাউন্টের ডিটেলস চলে আসত প্রতারকদের কাছে। এরপর খড়দায় বসেই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিত প্রতারকরা। আমেরিকা এবং কানাডার ৭০-৮০ জন প্রবীণ নাগরিকের প্রতারিত হওয়ার হদিশ মিলেছে। গত ১৮ অক্টোবর একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে খড়দহ থানা এলাকার বলরাম হাসপাতালের কাছে একটি কল সেন্টারে হানা দেয় খড়দা থানার পুলিশ। তদন্তে নেমে ৮ হাজার কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। সব মিলিয়ে ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বারাকপুরের গোয়েন্দা প্রধান শ্রীহরি পান্ডে বলেন, সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের কাছে থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কেউ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।