গার্ডেনরিচে ব্যবসায়ী নিসার খানের বাড়িতে এখনও চলছে নোট-গণনা...
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের যকের ধন উদ্ধার কলকাতায়। গার্ডেনরিচের (Garden Reach Money Scam) পরিবহণ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ টাকার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ালো ১৭ কোটি! এমনটাই জানাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট৷ সকাল দশটা থেকে টাকা গোনা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা৷ ৯ ঘণ্টায় ১৭ কোটি টাকা গোনা হয়েছে৷ গোয়ান্দাদের দাবি, ওই বাড়িতে আরও টাকা রয়েছে। তল্লাশি এখনও জারি রয়েছে।
আরও পড়ুন: যোগ রাজ্যের এক মন্ত্রীরও? এবার পরিবহণ ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে উদ্ধার বিপুল নগদ
টাকা গোনার মেশিন নিয়েই ওই বাড়িতে হানা দেন ইডি (Enforcement Directorate) আধিকারিকরা। টাকার অঙ্ক যে এরকমই বিপুল হতে পারে, তা ধারণা করে আগে থেকেই প্রস্তুতি রেখেছিলেন তাঁরা। উপস্থিত আছেন সরকারি ব্যাঙ্কের কর্মীরাও৷ প্রথম কয়েক ঘণ্টা টাকা গোনার পর সাত কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে আগে জানিয়েছিল ইডি৷ পরে জানা যায়, উদ্ধার হওয়া টাকার পরিমাণ ৮ কোটি৷ এর পর ১২ কোটি টাকা উদ্ধারের কথা জানানো হয়৷ আর এখন নগদের পরিমাণ ১৭ কোটি। ব্যবসায়ীর বাড়ির খাটের নীচ থেকে এই টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি।
ইতিমধ্যেই উদ্ধার হওয়া টাকা নিয়ে আসার জন্য গার্ডেনরিচের ওই ব্যবসায়ীর বাড়ির সামনে পৌঁছেছে ট্রাক৷ কড়া নিরাপত্তা বলয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা৷ উদ্ধার হওয়া টাকা নিয়ে যাওয়া হবে স্ট্র্যান্ড রোডে স্টেট ব্যাঙ্কের দফতরে৷
আরও পড়ুন: সাক্ষী সরাতেই হামলা! আক্রান্ত হাওড়ার প্রয়াত ছাত্রনেতা আনিস খানের ভাই সলমন
বেআইনি লেনদেনের মামলায় একযোগে কলকাতার ৬ জায়গায় ইডির তল্লাশি চালায়। গার্ডেনরিচ ছাড়াও মোমিনপুর, পার্ক স্ট্রিট, নিউটাউন-সহ ৬ জায়গায় অভিযান। চিনা মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে পুরস্কার জেতার টোপ দিয়ে সাধারণ মানুষের থেকে অন্তত ৬৫ থেকে ৭০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে গার্ডেনরিচের ব্যসায়ী নিসার খানের (Nesar Khan) বিরুদ্ধে৷ সেই অভিযোগের সূত্রেই এ দিন সকালে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দেয় ইডি৷
কোন পথে জালিয়াতি?
সূত্রের খবর ‘ই-নাগেটস’ নামের একটি গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে চলত প্রতারণা। ঠিক কী ভাবে কোন পথে এই লোক ঠকানোর চক্র চালানো হত তাও জানায় ইডির আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে খবর, আমির খান ই-নাগেটস নামে মোবাইল গেমিং অ্যাপটি লঞ্চ করেছিলেন। লোক ঠকাতেই এই গেমিং অ্যাপ বাজারে আনা বলেই ইডির হাতে তথ্য উঠে এসেছে। এই গেমিং অ্যাপে খেলার শুরুতে ব্যবহারকারীরা ভালো টাকাই ফেরত পেতেন। সেই টাকা পেতে খুব একটা কসরতও করতে হয় না তাঁদের। ফলে এই খেলার প্রতি একটা আলাদা আগ্রহ তৈরি হয়। এই অ্যাপে ২০০ টাকা খরচেই সাধারণ মেম্বার হতে পারতেন যে কেউ। সাধারণ মেম্বারশিপ নিয়ে খেলা শুরু হত। খেলে কয়েন জিততে হত। একটা কয়েন সমান ১ টাকা। প্রথমে জেতা টাকা ওয়ালেট মারফত ট্রান্সফার করা যেত কিংবা অনলাইন শপিং করা যেত। অ্যাপের মালিকদের প্রথম পর্যায়ে মূল লক্ষ্য ছিল, ব্যবহারকারীদের বিশ্বাস জিতে নেওয়া, যাতে তাঁরা আরও বেশি করে টাকা খাটান। ব্যবহারকারীরা বড় অঙ্কের টাকা খাটাতেই ওই অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ইডি। তখন একের পর এক কয়েন জিতে মোটা টাকা জিতলে টাকা তোলা যেত না। তখন সার্ভার প্রবলেম বলা হত। আর এভাবেই লোক ঠকাত এই চক্র। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্ক স্ট্রিট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় আমির খানের বিরুদ্ধে। এরপর এই মামলার তদন্তে নামে ইডি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
Tags: