সাতজন যাত্রীকে আটক করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ
আনন্দবিহার এক্সপ্রেস, ইনসেটে প্রাক্তন সেনাকর্মীর দেহ ঘিরে পুলিশ আধিকারিকরা (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সোমবার রাতে এনজেপি (NJP) স্টেশন ঢোকার আগেই কামাখ্যা-আনন্দবিহার এক্সপ্রেসের এক যাত্রীর ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ওই ব্যক্তির কোমর থেকে পা পর্যন্ত গুলিতে রক্তাক্ত হয়ে যায়। সহযাত্রীরা জানিয়েছেন, হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে তাঁরা তাকিয়ে দেখেন, ওই ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েছেন। এনজেপি (NJP) স্টেশনে ট্রেনটি ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে রেল পুলিশ ও আরপিএফ তদন্তে নামে।
ঠিক কী হয়েছিল?
আটক যাত্রীদের জেরা করে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে, ওই ব্যক্তি প্রাক্তন সেনা কর্মী রাজস্থানের বাসিন্দা। গুয়াহাটি থেকে তিনি সোমবার ট্রেনে চেপেছিলেন। জেনারেল কামরায় বসার জায়গা নিয়ে তার সঙ্গে সহযাত্রীদের বচসা বাধে। নিজেকে সেনাকর্মী পরিচয় দিয়ে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি কোমর থেকে সে তার রিভলবার বের করে দেখায় এবং শূন্যে একটি গুলিও চালায় বলে অভিযোগ। তাতেই আতঙ্কিত হয়ে সহযাত্রীরা তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রাক্তন সেনাকর্মী তখন তার রিভলবারটি ধরে রাখতে গিয়ে কোনওভাবে তিন রাউন্ড গুলি ছিটকে তাঁর শরীরে ঢোকে। এমনটাই প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে। এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এনজেপি (NJP) স্টেশন লাগোয়া সেনা ক্যাম্পের থেকে জওয়ানদের একটি দল স্টেশনে (NJP) এসে খোঁজখবর নিতে শুরু করে। রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ রেল পুলিশের তরফে সেনা বিভাগের প্রতিনিধিদের ডাকা হয় মৃতদেহ দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য জানানোর ব্যাপারে। তবে, সেনা বিভাগের পক্ষ থেকে কেউ কোনও মন্তব্য করেনি।
কী বললেন রেল পুলিশের আধিকারিক?
রেল পুলিশ সুপার এস সালভা মুরুগান বলেন, কী করে ওই প্রাক্তন সেনা কর্মীর কোমর থেকে শরীরের নিচের দিকে তিন রাউন্ড গুলি চললো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনাটি আত্মহত্যা, খুন না নিছক দুর্ঘটনা এ নিয়ে এখনও পরিষ্কার করে বলার মতো তথ্য আমাদের হাতে আসেনি। সব সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে সাতজন সহযাত্রী আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।
সহযাত্রীরা কী বললেন?
কামরার মধ্যে যাত্রীদের ভিড়ে থিক থিক করছে। অধিকাংশ যাত্রী ঘুমোচ্ছিলেন। আচমকাই কামরার মধ্যে গুলির আওয়াজ শুনে সকলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সহযাত্রীরা বলেন, হঠাৎ গুলির শব্দে তাদের সকলের ঘুম ভাঙে। কেউ ভয়ে কামরার মধ্যেই ছোটাছুটি শুরু করেন, কেউবা চুপ করে নিজের জায়গাতে বসেছিলেন। কে গুলি চালিয়েছে এ নিয়ে তাঁরা জানেন না এমনটাই দাবি করেছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, আনন্দবিহার এক্সপ্রেস ট্রেনটি অনেকক্ষণ এনজেপি (NJP) স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। যে কোচে এই ঘটনা ঘটেছে সেই কোচটি কেটে আলাদা করে এনজেপি স্টেশনে রেখে দেওয়া হয়েছে তদন্তের জন্য। তারপর রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ প্রায় তিন ঘণ্টা দেরিতে এনজেপি (NJP) স্টেশন থেকে আনন্দবিহার এক্সপ্রেসকে রওনা করানো হয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।