Kalyani: চেম্বার খুলে রমরমিয়ে রোগী দেখতেন ভুয়ো 'এমডি' অখিল, থানায় গড়াল অভিযোগ
সেখ অখিল (বাঁদিকে), অখিলের নামের পাশে এমডি লেখা লিফলেট (ডানদিকে) (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এখনও নদিয়ার কল্যাণীর কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালে পিজিটি প্রথম বর্ষের ছাত্র শেখ মহম্মদ অখিল। ভুয়ো 'এমডি' ডিগ্রি (Fake MD) দেখিয়ে রোগী দেখায় অভিযুক্ত তিনি। প্রতারণায় অভিযুক্ত এই মেডিক্যাল ছাত্র বেশ কয়েক বছর ধরেই চণ্ডীতলার গ্রামে ডাক্তারি করতেন। তাঁর কয়েকটি চেম্বারও রয়েছে। তার মধ্যে একটি আবার তৈরি করে দিয়েছেন অখিলের বাবা। 'এমডি' না হওয়া সত্ত্বেও সাইনবোর্ডে এবং লিফলেটে 'এমডি' লিখে দিব্যি রোগী দেখতেন। কল্যাণী মেডিক্যাল কলেজেরই আইনি পরামর্শদাতা তথা আইনজীবী অনিরুদ্ধ ঘোষ গত ৭ জুন চণ্ডীতলা থানায় অখিলের বিরুদ্ধে ভুয়ো 'এমডি' পরিচয় দিয়ে রোগী দেখার অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারপরই সমস্ত বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
হুগলির চণ্ডীতলার বেলতলা এলাকায় অখিলদের বাড়ি থেকে কিছু দূরে মশাট-জগৎবল্লভপুর সড়কের ধারে তাঁর বাবা শেখ নুর আলির মুদিখানার দোকান। এলাকাবাসী জানান, ছ'সাত মাস আগে সেই দোকানের মাঝ বরাবর ভাগ করে তিনি ছেলে অখিলের রোগী দেখার জন্য চেম্বার করে দেন। সেখানে চণ্ডীতলা, জাঙ্গিপাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগীরা দেখাতে আসতেন। এছাড়া গোপালপুর বাজারে একটি ওষুধের দোকানেও বসতেন অখিল। সেখানকার বোর্ডে অখিলের নামের পাশে জেনারেল মেডিসিন (Fake MD) বিশেষজ্ঞ হিসেবে তাঁর পরিচয় উল্লেখ থাকতে দেখা গিয়েছে। তবে, ওই দোকানের মালিক দাবি করেন, "এখন আর অখিল বসে না। ও কী পাশ করেছে, তা- ও জানি না। এলাকার ছেলে হিসেবে ওকে এখানে বসতে দিতাম।"
আরও পড়ুন: কাঁকসায় তৃণমূল সমর্থকের ছেলে জঙ্গি! গ্রেফতার করল এসটিএফ
অখিলের বাবা শেখ নুর আলি বলেন, "রাজনৈতিক কারণে আমার ছেলেকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিনা পয়সায় ও এলাকার রোগী দেখত।" অবশ্য 'রাজনৈতিক কারণ' বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। চণ্ডীতলা থানা জানিয়েছে, অখিলকে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৪ নম্বর ধারায় নোটিস দেওয়া হয়েছে। তবে, অখিলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অখিল নদিয়ার কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হসপিটালে পিজিটি প্রথম বর্ষের ছাত্র (Fake MD)। তাঁর বিরুদ্ধে সেখানে নানা রকম বেনিয়ম, অন্যায় প্রভাব খাটানো, এমনকী প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের একাংশের বিরুদ্ধেও তাঁকে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর রাজ্য সভাপতি সুদীপ্ত রায়ের নাম করে হুমকি দিতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সুদীপ্ত বলেন, "আমি অখিলকে চিনি। কিন্তু কেউ যদি ভুয়ো ডিগ্রি দেখিয়ে চিকিৎসা করে, তা হলে তার বিরুদ্ধে তো পদক্ষেপ করতেই হবে। এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।"
অখিলের 'কীর্তি' সামনে আসার পরে সমাজমাধ্যম থেকে শুরু করে চিকিৎসকদের বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কার্যত নিন্দার ঝড় উঠেছে। হেলথ্ সার্ভিস ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক সন্দীপ মিত্র বলেন, "এই ধরনের অপরাধের তীব্র নিন্দা করছি। এদের জন্য গোটা মেডিক্যাল শিক্ষা ব্যবস্থাটাই ভেঙে যেতে বসেছে। আমরা ওই ছাত্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।