ইডি হানা দিতেই নিতাইকে নিয়ে জোর চর্চা নদিয়া জেলাজুড়ে
রেশন ডিলার নিতাই ঘোষের বাড়ি (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শনিবারই রাজ্যের একাধিক জায়গার পাশাপাশি রানাঘাটে রেশন ডিলার নিতাই ঘোষের চালকলে ইডি (ED) হানা দেয়। শুধু চালকল নয়, রানাঘাট শহরের ওল্ড বহরমপুর রোডের পাশে থাকা অট্টালিকার মতো বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হানা দিতেই নিতাই ঘোষকে নিয়ে জেলা জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়।
ছোট একটা বেড়ার ঘরে বাবার সঙ্গে গরুর গাড়ির চাকা তৈরির কাজ করতেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় রানাঘাট শহরের রেশন ডিলার বিশ্বনাথ পালের দোকানের কর্মী ছিলেন নিতাই। অল্প দিনের মধ্যেই পাল পরিবারের বিশ্বাস অর্জন করেন তিনি। তারপর রেশন ডিলারের লাইসেন্সও হাতে আসে নিতাইয়ের। শুরু হয় রেশন সামগ্রীর ব্যবসা। এক সময়ে বিশ্বনাথ ও নিতাই যৌথ ভাবে ব্যবসা করতেন। পরে নিতাই নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন ও ব্যবসা বাড়িয়ে অন্যান্য রেশন ডিলারদের নিজের ছত্রচ্ছায়ায় নিয়ে আসেন। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, যৌথ ভাবে ব্যবসা করার সময় থেকেই রেশন সামগ্রী কালোবাজারি করার কাজে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় খাদ্য সরবরাহ দফতরের দেওয়া রেশন সামগ্রীর বদলে নিম্নমানের সামগ্রী উপভোক্তাদের দেওয়ার অভিযোগ ছিল। রাস্তার পাশে তাঁদের গরুর গাড়ি চাকা তৈরি করার ভাঙাচোরা ঘরটা এখনও রয়েছে। তার পাশেই উঠেছে তিনতলা বাড়ি। বছর আটেক আগে আনুলিয়ায় চালকল তৈরি করে ব্যবসার পরিধি বাড়ান নিতাই। রানাঘাট রেল বাজারে তাঁর পাইকারি মুদির দোকানও রয়েছে। বর্তমানে রেশন সামগ্রীর ব্যবসা ছাড়াও চালকলের মালিক সেই নিতাই ঘোষই। এমনকী তিনি এখন পশ্চিমবঙ্গ এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের রানাঘাট শাখার সম্পাদকও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, রেশন সামগ্রী নিয়ে অবৈধ কারবার করার জন্য বাম জামানা থেকেই পুলিশ, প্রশাসন ও নেতাদের হাত ছিল তাঁর মাথায়। সরকার বদলের পর শাসক দলের নেতাদের হাত ছিল তাঁর মাথায়। তবে, তিনি কখনও কোনও দলের সামনে আসতেন না। টাকার জোগান দিয়ে নেতাদের মুঠোয় রাখতেন তিনি। ফলে, তাঁকে খুব বেশি কেউ চিনত না। তবে, সামান্য রেশন দোকানের কর্মী থেকে তাঁর উল্কার গতিতে উত্থান নিয়ে এলাকায় চর্চা ছিল। ইডি (ED) তাঁর বাড়িতে হানা দিতেই তিনি ফের চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।