কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করল জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশন
কালিয়াগঞ্জে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন পুলিশ।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কালিয়াগঞ্জ ও কালিয়াচকে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের (Kaliaganj and Kaliachak incident) অভিযোগের ঘটনা এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নের (Nabanna) কাছে রিপোর্ট তলব করল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (Governor CV Ananda Bose)। মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিপি’কে চিঠি পাঠানো হয় রাজভবন থেকে। শীঘ্রই দিল্লি সফর কাটছাঁট করে কলকাতায় ফিরছেন রাজ্যপাল। উল্লেখ্য, পরপর দু’টো একই ঘটনা নিয়ে বর্তমানে উত্তপ্ত উত্তরবঙ্গ। বুধবার সেই নিয়েই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে রাজভবনে আসছেন বিজেপির উত্তরবঙ্গের আট বিধায়ক।
ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে উত্তাল উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ (Kaliaganj and Kaliachak incident)। গত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকাতে। মঙ্গলবার কার্যত ব্যাপক আকার নিয়েছে এই ঘটনা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে কালিয়াগঞ্জ থানা। এমনকী একাধিক গাড়ি-বাইক পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতেই পুলিশের দিকে ঢিল, ইট ছোড়া হতে থাকে। পথ চলতি মানুষ ও সংবাদমাধ্যমের দিকেও ইট ছোড়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পালটা কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স নামানো হয়। শেষমেশ আন্দোলনকারীরা কালিয়াগঞ্জ থানার একটি অংশে আগুন ধরিয়ে দেয়। থানার একটি পাঁচিলও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
কালিয়াগঞ্জের ছবি দেখেই রাজ্যের ডিজিপি এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলেন উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। জানা গিয়েছে, সেই ফোনালাপে এই ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা নাকি মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে রাজ্যপালকে জানান বলে খবর। আজ বুধবার দিল্লিতে একাধিক কর্মসূচি ছিল রাজ্যপাল বোসের। বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকেও বসার কথা ছিল রাজ্যপালের। কিন্তু যেভাবে কালিয়াগঞ্জের ঘটনা ঘিরে মঙ্গলবার পরিস্থিতি ব্যাপক আকার নেয় তাতে তড়িঘড়ি কলকাতাতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: সামনেই ভোট, জেনে নিন জাতীয় পঞ্চায়েতি রাজ দিবসের গুরুত্ব এবং ইতিহাস
অন্যদিকে, কালিয়াগঞ্জে নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ও তাঁর মৃত দেহ পুলিশের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করল জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশন (National Commission for Protection of Child Rights)। জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন জানিয়েছে, মানুষের একটি মৃতদেহকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া ও সম্মান দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। কালিয়াগঞ্জের ঘটনার ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। রাজ্যের মুখ্য সচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশন। আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তদন্ত কতদূর হয়েছে, মৃতার পরিবারকে কী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ দিতে হবে। ওই দেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কতজনকে কী শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা নিয়েও জানাতে হবে রিপোর্টে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।