পুজোর আগেই বন্যা! নতুন করে জল ছাড়া হল ১ লক্ষ কিউসেক, আতঙ্কে রাজ্যের সাত জেলার বাসিন্দারা
জল ছা়ড়ছে ডিভিসি (ছবি-সংগ্রহীত)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুজো হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন বাকি। টানা বৃষ্টি পুজোর বাজারে অনেকটাই ধাক্কা দিয়েছে। এবার বৃষ্টির পাশাপাশি ডিভিসি-র (DVC) বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে পুজোর আগে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেটরি কমিশন বা ডিভিআরআরসির তরফে টানা কয়েকদিন বৃষ্টি ও খারাপ আবহাওয়াকে মাথায় রেখে সতর্কতা জারি করা হল। মাইথন, পাঞ্চেত ও দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছিল প্রায় ২ লক্ষ কিউসেক জল। রবিবার কমলা বা অরেঞ্জ সতর্কতা জারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, সোমবার সকালের পরে জল ছাড়ার পরিমাণ বেড়ে এক লক্ষ কিউসেক হওয়ায় হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। মঙ্গলবার ডিভিসি নতুন করে ১ লক্ষ ১০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। এরমধ্যে মাইথন থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়়া হয়েছে। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫৭৫ কিউসেক জল ছা়ড়া হয়েছে।
এদিন দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (DVC) এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর (সিভিল) অঞ্জনকুমার দুবে বলেন, 'টানা বৃষ্টির কারণে মাইথন এবং পাঞ্চেতে জলস্তর বেশ কয়েক ফুট বেড়েছে। ফলে, প্রয়োজনে ধাপে ধাপে জল ছাড়া হবে।' জানা গিয়েছে, ডিভিসির কাছ থেকে জল ছাড়ার একটা বার্তা সোমবার সকালে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক গোন্নাবলন এসকে পাঠানো হয়েছে। সেই মতো জেলাশাসক জেলার দুই পুরনিগম আসানসোল ও দুর্গাপুরকে তা জানিয়েছেন। নির্দেশে বলা হয়েছে, মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে পরবর্তী কালে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হলে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ ধাপে ধাপে বাড়তে পারে।
পুজোর আনন্দে এলাকার মানুষ এখন থেকে মেতে উঠবেন। ক্লাবগুলিতে মণ্ডপ তৈরির কাজ চলবে। এটাই এখন ছিল চেনা চিত্র। কিন্তু, তার পরিবর্তে ডিভিসির ছাড়া জলে ঘুম উড়েছে পূর্ব বর্ধমানের দামোদর সংলগ্ন এলাকার মানুষজনের। জল আরও বাড়লে প্লাবনের আশঙ্কায় শঙ্কিত নিম্ন দামোদরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অধিবাসীরা। ডিভিসি (DVC) থেকে দফায় দফায় জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক বাড়ছে নদীবাঁধ সংলগ্ন এলাকায়। জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়লে জেলার রায়না ও জামালপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকার মানুষজন। এছাড়়াও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমান-সহ সাতটি জেলার পার্শ্ববর্তী এলাকায়। যে কারণে এই সব জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে তাঁরা কীভাবে সামলাবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজন। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে জেলা প্রশাসনের তরফে একদফা বৈঠকও করা হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
Tags: