গত ৩ নভেম্বর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসের হেরিটেজ ভবনের অব্যবহৃত ঘর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন স্বদেশ মজুমদার নামে এক ব্যক্তি।
জোড়াসাঁকো
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো (Jorasanko) ক্যাম্পাসে (Rabindra Bharati University) হেরিটেজ তকমা পাওয়া ভবনে নির্মাণের কাজ শুরু করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই ভবনের একাংশ ভেঙে নির্মাণ হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই নির্মাণে স্থগিতাদেশ দিল আদালত। আদালতের নির্দেশ, হেরিটেজ ভাঙার যাবে না। ভবনে নির্মাণ সংক্রান্ত কোনও কাজ হলে রাজ্যকে জবাবদিহি করতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় আদালত। বিষয়টিতে নজরদারির জন্য রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়।
অভিযোগ উঠেছিল, কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়িত হেরিটেজ ভবন ভেঙে তৃণমূল শিক্ষাকর্মী সংগঠনের অফিস তৈরি করা হচ্ছিল। আর এই বিস্ফোরক অভিযোগের পরেই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে কলকাতা হাইকোর্ট। অবিলম্বে হেরিটেজ ভবন ভাঙার কাজ বন্ধের নির্দেশ দিল আদালত।
আরও পড়ুন: এবার তাপস মণ্ডলের দুই হিসাব রক্ষককে তলব ইডির
গত ৩ নভেম্বর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসের হেরিটেজ ভবনের অব্যবহৃত ঘর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন স্বদেশ মজুমদার নামে এক ব্যক্তি। মামলাকারীর অভিযোগ, ইতিমধ্যেই এই হেরিটেজ ভবনের দুটি ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। যে ঘরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথমবার বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, ঐতিহাসিক সেই ঘর তৃণমূলের শিক্ষাকর্মী সংগঠন শিক্ষা বন্ধু সমিতির অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সেখানে কবিগুরুর ছবি সরিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের ছবি টাঙানো হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
‘গ্রেড ওয়ান’ হেরিটেজ তকমা পেয়েছে জোড়াসাঁকোর কবিগুরুর বাড়ি। মামলাকারী স্বদেশ মজুমদারের আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তীর জানান, রবীন্দ্রনাথের একটিও ছবি নেই সেই ঘরে। অথচ রাজনৈতিক দলের নেতাদের ছবি রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে ও রাজ্যকে রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ২১ নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে হবে রাজ্যকে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও নিজেদের বক্তব্য আদালতকে জানাবে।
সোমবার, প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট নির্দেশ দেয়, জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে হেরিটেজ ভবন আর ভাঙা যাবে না। এই নির্দেশের পরেও যদি কাজ চলে, জবাবদিহি করতে হবে রাজ্য সরকারকেই। কার নির্দেশে হেরিটেজ ভবন ভাঙা হচ্ছিল ? কোনও আগাম অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কি না? এই রিপোর্ট ২১ নভেম্বর দিতে হবে রাজ্য সরকার ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।