Balurghat: বিরল রোগকে সঙ্গী করে উচ্চ মাধ্যমিকে বাজিমাত করলেন জয়দীপ, বড় হয়ে তাঁর স্বপ্ন কী জানেন?
জয়দীপ সামন্ত (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাধ্যমিকের পরেই শরীরে বাসা বেঁধেছিল বিরল রোগ। বেঁকে যাচ্ছিল শিরদাঁড়া। থাবা চওড়া করছিল অ্যানকোলাইসিস স্পন্ডেলাইটিস। যার ফলে পড়াশোনা ভুলতে বসেছিল বালুরঘাটের জয়দীপ সামন্ত। কিন্তু, শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এবার উচ্চমাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট (HS Result 2024) করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সকলকে।
জয়দীপের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮২ (HS Result 2024)
মার্কশিট অনুয়ায়ী, তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৮২। বালুরঘাট হাইস্কুলে প্রথম (HS Result 2024)। এমনকী জেলার মধ্যেও সম্ভাব্য প্রথম বলেই জানা গিয়েছে। মাত্র ৫ নম্বরের জন্য রাজ্যের দশজনের মেধাতালিকায় আসতে পারেনি জয়দীপ। জয়দীপের ইচ্ছে বড় হয়ে আইএএস অফিসার হওয়ার। কাজ করতে চান দেশের জন্য। বালুরঘাট শহরের উত্তরায়ণ ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি জয়দীপের। ছোট থেকেই এলাকায় মেধাবী ছাত্র বলে পরিচিত তিনি। মাধ্যমিকে পেয়েছিলেন ৬৬০ নম্বর। কিন্তু, মাধ্যমিকের পর থেকে শরীরে বাসা বাঁধে অ্যানকোলাইসিস স্পন্ডেলাইটিস। বেঁকে যাচ্ছিল গোটা শরীর। সোজা হয়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতাটাই যেন ধীরে ধীরে উবে যাচ্ছিল। নানা জায়গায় দেখানো হয় ডাক্তার। চলতে থাকে চিকিৎসা। এরইমধ্যে দুয়ারে কড়া নাড়তে থাকে উচ্চমাধ্যমিক। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গী করেই উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় বসেন জয়দীপ। শেষে উচ্চমাধ্যমিক। আসে ৪৮২ নম্বর। বাংলায় পেয়েছেন ৯৫, ইংরেজিতে ৯৭, ইতিহাসে ৯৩, ভুগোলে ৯৮, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৯৭, দর্শনে ৯৫ নম্বর পেয়েছেন। তাঁর এই তাক লাগানো রেজাল্টে স্বভাবতই খুশি পরিবারের সদস্যরা। খুশি বালুরঘাট হাইস্কুলের শিক্ষকেরাও। খুশির হাওয়া বন্ধু মহলেও।
জয়দীপ বলেন,আমি উচ্চ মাধ্যমিকে মাত্র ৫ নম্বরের জন্য রাজ্যের দশজনের মেধাতালিকায় (HS Result 2024) আসতে পারিনি। মোবাইলের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। পড়াশোনার একঘেয়েমি কাটাতে আমি মোবাইলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক বিষয় দেখতাম। দিনে ১০ ঘণ্টাও পড়েছি। গত চার বছর ধরে ইউপিএসসি প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার বড় হয়ে আইএএস অফিসার হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। আমি দেশের জন্য কাজ করতে চায়। জদীপের বাবা অসিত সামন্ত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। তিনি বলেন, ‘বেলুড়ে ইতিহাসে সাম্মানিক স্নাতক নিয়ে পড়ার ইচ্ছে তার। সে যেভাবে এগোতে চায়। তাতেই আমরা তার সঙ্গে আছি। তার এখনও ফিজিওথেরাপি চলছে।’
ধর্মীয় উস্কানিমূলক মন্তব্যের জের! তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে শো-কজ কমিশনের
বালুরঘাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সৃজিৎ সাহা বলেন, ‘ইচ্ছাশক্তির ওপর ভর করে তার এই অভাবনীয় ফল শুধু পড়ুয়াদের নয় অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে আমাকে ও অন্য শিক্ষকদেরও। তিন বছর আগেও জয়দীপের উচ্চতা ছয় ফিটের উপরে ছিল। কিন্তু তার মেরুদন্ড বেঁকে যাওয়ায় এখন উচ্চতা কয়েক ইঞ্চি কমে এসেছে। প্রথম প্রথম হাঁটতে পারলেও এখন আর ঠিকমতো হাঁটতে পারে না। অনেক সরঞ্জাম ও টোটোকে সঙ্গী করে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কোনও অজুহাত ছাড়াই সে স্কুলে পৌঁছে যেত। তার লড়াইকে কুর্নিশ জানাই।’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।