Junior Doctor: সুবিচারের দাবিতে রাত জাগল কলকাতা, মশাল মিছিলে হুইলচেয়ারে প্রবীণরা...
নির্যাতিতার পরিবারের হাতে মশাল তুলে দিলেন আন্দোলনকারীরা (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরজি করকাণ্ডে (RG Kar Protest) সুবিচারের দাবিতে রাত জাগল কলকাতা। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে মধ্যরাতে অঙ্গীকার করলেন আন্দোলনকারীরা। প্রতিবাদের এই লড়াই চলবে, সাফ জানিয়ে দিলেন জুনিয়র ডাক্তাররাও। এই আন্দোলনে যোগ দিয়ে নির্যাতিতার বাবা-মা জুনিয়র ডাক্তারদের কুর্ণিশ জানালেন। জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে বললেন, ‘‘ছোট না হলে প্রণামই করতাম।’’
শুক্রবার স্বাস্থ্যভবন থেকে সিজিও পর্যন্ত মিছিল করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অন্যদিকে দক্ষিণ কলকাতার হাইল্যান্ড পার্ক থেকে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার পর্যন্ত দীর্ঘ ৪২ কিলোমিটার রাস্তা মশাল হাতে মিছিল (RG Kar Protest) করল নাগরিক সমাজ। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছিল, ‘তিলোত্তমার জন্য একসাথে, এক পথে’। রাত দখল আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্সির গবেষক ছাত্রী রিমঝিম সিন্হা। তিনিই শুক্রবারের মশাল মিছিলের অন্যতম আয়োজক। তিনি জানান, রাত দখলের কর্মসূচির দিনেই ঘোষণা করা হয়েছিল আরজি করের ঘটনায় দোষীদের সাজা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। শুক্রবারের মিছিল চলমান আন্দোলনের আর একটি ধাপ।
এদিন বিকেল ৪টে নাগাদ শুরু হয় এই মিছিল। রুবি ক্রসিং, ভিআইপি বাজার, সায়েন্স সিটি, চিংড়িঘাটা, বেলেঘাটা বিল্ডিং মোড়, মল্লিক বাজার, এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও এসএসকেএম হাসপাতাল হয়ে মিছিল শেষ হয় শ্যামবাজারে। বিচারের দাবিতে মিছিলে পা মেলান সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। কোথাও হুইলচেয়ারে, কোথাও ওয়াকার নিয়েই মিছিলে সামিল হয়েছিলেন প্রবীণরাও। মিছিলে ছিলেন তারকা, বুদ্ধিজীবী, কর্পোরেট সংস্থার কর্মী, সরকারি চাকরিজীবী, বিজ্ঞানী, অধ্যাপক এমনকী বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিরাও৷ মিছিলে নেমেছিলেন সেলিব্রিটিরাও। শুক্রবারের মিছিলে ছিলেন কিছু অভিনেতা ও ফিল্ম পরিচালকও। মিছিলে দেখা যায় বিরসা দাশগুপ্তকেও। পথে নেমেছিলেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র, বিদীপ্তা চক্রবর্তীরাও। মিছিলে স্লোগান ওঠে, 'মশাল হাতে এক স্বর/ জাস্টিস ফর আর জি কর'। 'আামার রাজ্য আমার দেশ/ অত্যাচারির হবে শেষ'। আন্দোলনের জনজোয়ারই বুঝিয়ে দিচ্ছিল যে এই প্রতিবাদ থামার নয়। এই আগুন নিভবে না। ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা শহর। নির্যাতিতার বিচার না হওয়া পর্যন্ত পথে নেমে এই আন্দোলন চলবে। এদিন গড়িয়াহাট মোড় থেকে রাসবিহারী পর্যন্তও হয় আরও একটি নাগরিক মিছিল।
আরও পড়ুন: তিরুপতির প্রসাদ লাড্ডুতে পশু চর্বি! হিন্দু ভাবাবেগে আঘাত, সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা
শ্যামবাজারে নেতাজির মূর্তির পাদদেশে হাজির ছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। সেখান থেকে কিছুটা দূরেই আরজি কর। রাত তখন আড়াইটে মশাল তুলে দেওয়া হল নির্যাতিতার পরিবারের হাতে। সকলের উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে চোখের জল ঝরালেন নির্যাতিতার মা। তিনি বললেন, ‘‘৯ তারিখের পর থেকে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছি। মুখে কোনও কথা আসে না। কারণ, বুকের ব্যথা মুখ দিয়ে ব্যক্ত করা যায় না। ব্যথাটা বুকেই রয়েছে। তবে, একটাই আশা যে এত সাধারণ নাগরিক আমার পাশে আছেন, সবাই আমার মেয়েকে তাঁদের পরিবারের মেয়ে ভেবে আন্দোলনে নেমেছেন। আর জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctor) তাঁরা তো আমার ছেলে-মেয়ে। তাঁরা যেভাবে ঝড়ে-বৃষ্টিতে রোদে পুড়ে কষ্ট করে এতদিন ধরে লড়াই (RG Kar Protest) চালিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের তো আমি কী বলব? ছোট না হলে প্রণামই করতাম। তাঁরা তো জনগণের সেবার জন্যই ডাক্তার হন। আজ সমাজই তাঁদের রাস্তায় এনে দাঁড় করিয়েছেন। তাই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সমাজের সেবা করবেন, আন্দোলনও চালিয়ে যাবেন। এটাতে আমি খুব খুশি হয়েছি। যতদিন না আমার মেয়ে বিচার পাই, ততদিন এভাবেই রাস্তায় থাকুন। আমার পাশে থাকুন।’’
মিছিল (RG Kar Protest) থেকেই বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নির্যাতিতার বাবা বলেন, "সিবিআইয়ের ওপরে আস্থা রাখতে হবে, উচ্চ আদালতের ওপরও আস্থা রাখতে। এত সহজে বিচার আসবে না, সময় লাগবে। জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে ফিরেছে। কাজের মধ্যে থেকেই বিচার ছিনিয়ে আনবে।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।