সরকারি কেন্দ্রেই কুইন্টাল প্রতি চার-পাঁচ শতাংশ ধান বাদ, চাষিরা যাবেন কোথায়?
বিক্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধান। ফাইল চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চাষিরা ধান বিক্রি করতে গিয়ে ফের বিপাকে! তাঁদের অভিযোগ, কুইন্টাল প্রতি চার-পাঁচ শতাংশ ধান ওজন থেকে বাদ দিয়ে কেনা হচ্ছে। একে বর্ষার সময় অতিবৃষ্টি, তারপর ফসল তোলার আগে শীতের বৃষ্টি, চাষিদের বিরাট বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হয়েছে। কিন্তু সারা বছরের পরিশ্রমের ফসল বিক্রি করে যখন সামান্য লাভের আশা দেখবেন, ঠিক সেই সময় সরকারি ধান বিক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রি করতে কেউ যাচ্ছেন না বললেই চলে। এমন ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) সন্ন্যাসীহাটে। কৃষকদের অভিযোগ, সরকারি বিক্রয় কেন্দ্রে চলছে ধান কেনায় ওজনে কারচুপি। তাই কেউ ওই মুখো হতে চাইছেন না।
সন্ন্যাসীহাটের (Jalpaiguri) এক কৃষক দুলালচন্দ্র রায় বলেন, “বিক্রয় কেন্দ্রে ১৫ কুইন্টাল ধান নিয়ে এসেছিলাম। চার শতাংশ ধান বাদ দেওয়া হয়েছে। আমি মোট ৬০ কেজি ধানের দাম পেলাম না। খোলা বাজারে বিক্রি করলে অন্তত আটশো টাকা বেশি পেতাম। সরকারি কেন্দ্রে গিয়ে আমার সবটাই ক্ষতি হয়েছে।” আবার আর এক চাষি করেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “সরকারি কেন্দ্রে গেলে সারা দিন চলে যায়। প্রচুর সময় নষ্ট হয়। ওজনে ধানের পরিমাণ বাদ দিয়ে মূল্য কম দেওয়া হয়। তাই খোলা বাজারে বিক্রি করলেই আমাদের ভালো।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল সোমাবার সন্ন্যাসীহাটের (Jalpaiguri) সরকারি ধান বিক্রয় কেন্দ্রে ধান বিক্রি করতে এসেছিলেন মাত্র ৬ জন। উল্লেখ্য এই কেন্দ্রে গত দুই মাসে মোট ২৮ টন ধান কেনা হয়েছে । অথচ গোটা জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লক্ষ ২১ হাজার টন। নভেম্বর পেরিয়ে গিয়ে এখন ডিসেম্বর। কিন্তু মাত্র কেনা হয়েছে ১০ হাজার টন। লক্ষ্যমাত্রার চার ভাগের এক ভাগও কিনতে পারেনি সরকারি ধান বিক্রয় কেন্দ্রগুলি। গত বছর ৭০ হাজার কৃষক ধান বিক্রি করেছিল জেলার কেন্দ্রগুলিতে। এই বছর মাত্র ২১ হাজার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই সব কিছুর কারণ হল চাষিদের বিক্রয় করা ধানের ওজন এবং মূল্যে চুরি করা হচ্ছে। সবটাই সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে হচ্ছে বলে চাষিদের অভিযোগ।
জেলার (Jalpaiguri) প্রশাসন থেকে জেলা খাদ্য নিয়ামক বলেন, “ওজন থেকে বাদ দেওয়ার তেমন নিয়ম নেই। এই বছর ধান বিক্রির প্রবণতা অনেক কম। সবে ডিসেম্বর, আরও সময় রয়েছে। ঝাড়াই, মাড়াই করার পর হয়তো আরও ধান বিক্রয় কেন্দ্র আসবে।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।