শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে বসানো হল বনজাম, পিয়াল, আঁশফল, কেন্দু, জলপাই, পানিয়ালা, তমাল গাছের চারা
শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে তৈরি করা হল খাওয়ার যোগ্য বুনোফল গাছের আলাদা বিভাগ। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শহরের মধ্যে গহন অরণ্যের অনুভূতি দিতে শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে (Botanical Garden) তৈরি করা হয়েছিল কৃত্রিম অরণ্য। এবার এই জাতীয় উদ্যানে তৈরি করা হল খাওয়ার যোগ্য বুনোফল গাছের আলাদা বিভাগ বা বাগান, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় ওয়াইল্ড এডিবল ফ্রুট, অর্থাৎ যেসব ফল চাষ না করে সরাসরি বন থেকে সংগ্রহ করা হয় খাওয়ার জন্য। এই ধরনের গাছ দ্রুত কমে যাচ্ছে বলেই গত কয়েক বছরে দু্ষ্প্রাপ্য হয়ে গেছে ফলসার মতো ফল। বোট্যানিক্যাল গার্ডেনে এই বিভাগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব নমিতা প্রসাদ। বোট্যানিক সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার উদ্যোগে ১৬ ফেব্রুয়ারি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ভারতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের একবিশংতি বিভাগে (ডিভিশন নম্বর XXI) এটি চালু হয়।
বন্য উদ্ভিদও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন (Botanical Garden)
আমলকি, জামরুলের মতো অনেক ফলই এদেশে সেভাবে চাষ হয় না। বন থেকে সংগ্রহ করা হয়। এই ধরনের ফলগাছের বিভাগ উদ্বোধন করে বোট্যানিক গার্ডেনের জয়েন্ট ডিরেক্টর ডক্টর দেবেন্দ্র সিং বলেন, কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের অধীন সংস্থা হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এইসব গাছের অস্তিত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করা, খাওয়ার উপযুক্ত বুনোফল বিভাগের সাহায্যে ছাত্রছাত্রী, গবেষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। গুরুত্ব বোঝানোর পাশাপাশি বোঝানো হবে, এইসব গাছের অস্তিত্ব বজায় রাখতে কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বন্যপ্রাণীদের মতো বন্য উদ্ভিদও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন। এইসব গাছের অস্তিত্ব এখন ঠিক কোন পর্যায়ে রয়েছে তা রেকর্ড করা, এখনও এই ধরনের গাছের যত প্রজাতি টিকে রয়েছে সেগুলি সংরক্ষণ করার দিকে বনমন্ত্রক নজর দিচ্ছে। কারণ ক্রমাগত বন সাফ করে বসতি গড়া ও কৃষিজমির আয়তন বৃদ্ধি হচ্ছে বলে বন্য গাছগাছালির অস্তিত্বও ক্রমেই সঙ্কটে পড়ে যাচ্ছে। এছাড়া নির্বিচারে গাছকাটা তো আছেই। তাছাড়া বাস্তুতন্ত্রে এইসব গাছের ভূমিকা এবং এদের সংরক্ষণ এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে, সেই ব্যাপারে বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় তৈরি করাও এর অন্যতম উদ্দেশ্য। স্বাভাবিক পরিবেশে বেড়ে ওটা এইসব গাছ এবং এইসব পরিবেশে বসবাসকারী মানুষজনের এইসব গাছ সম্পর্কে স্বাভাবিকভাবে যেসব জ্ঞান রয়েছে, সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সেসব কাজে লাগানোও উদ্দেশ্য। তাছাড়া গবেষণার জন্য (Botanical Garden) প্রয়োজনীয় রিসোর্স দেওয়ারও বন্দোবস্ত হয়েছে।
গাছ সংরক্ষণ করার বিষয়ে আলোচনা (Botanical Garden)
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পদ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের যে পরিবর্তন হচ্ছে, সেই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে এইসব গাছ সংরক্ষণ করার বিষয়ে আলোচনা করেন নমিতা প্রসাদ। তিনি নিজে এখানে একটি কমলালেবু গাছ রোপন করেন। বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার নির্দেশক ডঃ এ এ মাও বলেন, মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য খাদ্যের উপযোগী উদ্ভিদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এইসব গাছ থেকে আমরা পুষ্টি ও ওষুধ পাই। তাছাড়া আমাদের কৃষ্টির সঙ্গেও এর সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু নানা কারণে এইসব গাছের সঙ্কট ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এদিন তিনি একটি ফলসা গাচের চারা পোঁতেন। এছাড়াও বসানো হয় বনজাম, পিয়াল, বহুবারা, আঁশফল, কেন্দু, জলপাই, পানিয়ালা, তমাল, খিরনি, ভল্লাত সহ বিভিন্ন গাছের চারা অনুষ্ঠানে বরিষ্ঠ বিজ্ঞানীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন (Botanical Garden) ডঃ মানস ভৌমিক, ডঃ সি মুরুগান, ডঃ প্রতিভা গুপ্ত, ডঃ জে জয়ন্তী, ডঃ কণাদ দাস প্রমুখ।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।