পানিহাটিতে এ কী হাল তৃণমূলের! দলীয় বৈঠকে কী হয়েছে জানেন?
পানিহাটি পুরসভা (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পানিহাটি (Panihati) পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় রায়কে সরাতে তৎপর কাউন্সিলরদের একাংশ। দলীয় মিটিংয়ে কাউন্সিলরদের একটা বড় অংশ ফের চেয়ারম্যানকে সরানোর দাবি জানান। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলও একেবারে প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
একদিকে ভাগাড় সমস্যা, অন্যদিকে রাস্তাঘাট, নিকাশি, স্বাস্থ্য পরিষেবা সহ দৈনন্দিন পরিষেবা প্রদানে নাজেহাল অবস্থা পানিহাটি (Panihati) পুরসভার। পুর কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কথা এখন পানিহাটির মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে। পুরসভার পরিষেবা অব্যাহত রাখতে রবিবার সোদপুর সরকারি কোয়ার্টারে তৃণমূলের অফিসে দলের ৩৩ জন কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠকে বসেন সাংসদ সৌগত রায় এবং বিধায়ক নির্মল ঘোষ। বৈঠকের শুরুতে কাউন্সিলরদের একটা অংশ পানিহাটি পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান মলয় রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেন। অভিযোগ করেন, পুরসভা পরিচালনা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান পরিবর্তনের দাবিও তোলেন তাঁরা। যদিও সৌগত রায় তাঁদের থামিয়ে দেন। সাংসদ তাঁদের উদ্দেশে বলেন, চাইলেই চেয়ারম্যান পরিবর্তন করা যায় না। তার নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। প্রথমে দলকে সেটা জানাতে হয়। তারপর দল যদি মনে করে তবেই চেয়ারম্যান বদল সম্ভব। তখনই কাউন্সিলরদের তরফে কয়েকজন বলে ওঠেন দু-একদিনের মধ্যেই আমরা সেই চিঠি দলের কাছে পৌঁছে দেব। তাঁকে সামনে বসিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দলের কাউন্সিলরদের একের পর এক উক্তিতে স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়েন চেয়ারম্যান। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে কাউন্সিলরদের বিরত করেন বিধায়ক নির্মল ঘোষ। এরপরই পুরসভা পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব এদিনের বৈঠক থেকে উঠে আসে।
নতুন কমিটিতে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, পাঁচ সিআইসি সদস্য সহ দলের দুই কাউন্সিলর প্রবীর ভট্টাচার্য এবং সম্রাট চক্রবর্তী রয়েছেন। এই দুজন আবার পানিহাটি (Panihati) শহর তৃণমূলের সভাপতি। দলীয় স্তরে ওই কমিটির তালিকা শীঘ্রই সাংসদ এবং বিধায়কের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে চেয়ারম্যানকে। নির্মল ঘোষ বলেন, 'পুরসভা যাতে ঠিকঠাকভাবে চলে তা নিয়ে এদিন আলোচনা হয়েছে। ভাগাড়, রাস্তাঘাট সহ একাধিক ইস্যু এদিন আলোচিত হয়েছে। চেয়ারম্যানের শারীরিক সমস্যার কারণে কাজ পরিচালনায় একটু সমস্যা হচ্ছে। তাই চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁর পছন্দ মতো কয়েকজনকে নিয়ে একটি কমিটি করার। ওই কমিটির তালিকা শীঘ্রই দিতে বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের সাথে আলোচনা করেই কাজ করতে বলা হয়েছে। যাতে পুরবাসী কোনও পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন'।
চেয়ারম্যান মলয় রায় বলেন, 'কিছু বিষয় নিয়ে নিশ্চিত আলোচনা হয়েছে। এটা দলের ভিতরের বিষয়। বাইরে কিছু বলব না'। তবে দলের ব্যাপার হলেও রবিবারের বৈঠকের বিষয়ে দমদম ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তাপস রায়কে বিষয়টি না জানানোয় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'এদিনের বৈঠকের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। দলীয় ব্যাপারে দলের জেলা সভাপতিকে নিশ্চিতভাবে জানানো উচিত ছিল। সৌগত রায়, নির্মল ঘোষ আমাকে কিছু জানাননি'।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।