img

Follow us on

Friday, Nov 22, 2024

ISRO: সামান্য ঠিকাকর্মী থেকে ইসরোর বিজ্ঞানী রাজীব, কতটা কষ্টের ছিল যাত্রাটা?

চন্দ্রযান-৩ সফল উৎক্ষেপনে অন্যতম শরিক ছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানী রাজীব সাহা

img

ইসরোর বিজ্ঞানী রাজীব সাহা , নিজের স্কুলে পেলেন সংবর্ধনা (ডানদিকে) (নিজস্ব চিত্র)

  2023-09-21 11:18:13

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এ যেন হার না মানার লড়াই। শত বাধা ও আর্থিক প্রতিকূলতাকে জয় করে আগরপাড়ার রাজীব সাহা আজ ইসরোর (ISRO) বিজ্ঞানী। চন্দ্রযান-৩ তৈরিতেও তিনি অন্যতম ভূমিকা পালন করেছেন। চন্দ্রযান-৩ সফল উৎক্ষেপন হওয়ার পর অন্যান্য ভারতীয়দের মতো আগরপাড়ার মানুষও বেশি গর্বিত হন। কারণ, এই এলাকার ছেলে রাজীববাবু চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণে সরাসরি অংশীদার ছিলেন। সম্প্রতি তিনি আগরপাড়ার বাড়িতে এসেছিলেন। নিজের স্কুল তাকে সংবর্ধনা দেন। নিজের ছোটবেলার স্কুলের শিক্ষকদের কাছে সংবর্ধনা পেয়ে কার্যত আপ্লুত হয়ে পড়েন ইসরোর এই বিজ্ঞানী।

ইসরোর (ISRO) বিজ্ঞানী হওয়ার আগে রাজীববাবু কী করতেন জানেন?

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজীববাবু ছোটবেলায় আগরপাড়া নেতাজি শিক্ষায়তনে পড়াশুনা করেছেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্কুল পড়ুয়াদের সামনে তার জীবনের নানা ঘাত প্রতিঘাত এবং জীবন সংগ্রামের কথা তিনি তুলে ধরেন। জানা গিয়েছে, নেতাজি শিক্ষায়তনে ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় দুর্ঘটনায় তাঁর পায়ে চোট লাগে। ভুল চিকিৎসার জন্য তাঁর পা বাদ চলে যাচ্ছিল। কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে তিনি ছয় মাস ভর্তি ছিলেন। পায়ে ইনফেকশন এতটাই বেশি হয়ে গিয়েছিল যে তার বেঁচে থাকারই কথা ছিল না। তবে, চিকিৎসকদের তৎপরতায় তিনি প্রাণ ফিরে পান। ছমাস স্কুল কামাই করলেও স্কুলের শিক্ষকরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ক্লাস সিক্সে ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি ভালো ফলও করেছিলেন। বাবা প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করতেন। সেই কাজও একদিন চলে যায়। ফলে, চরম আর্থিক অনটনে রাজীববাবুর প্রায় পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যেতে বসেছিল। পরে, বাবা সরস্বতী প্রেসে ঠিকাকর্মী হিসেবে কাজ পান। সেখানে বাবার সঙ্গে তিনিও ঠিকাকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন কিছুদিনের জন্য। সেখানে দৈনিক ৩০ টাকা করে রোজগার ছিল তাঁর। তাতে পড়াশুনার খরচ তিনি চালিয়ে নিতেন।  মাধ্যমিকে স্কুলের মধ্যে তিনি প্রথম হন। উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল রেজাল্ট করেন তিনি। আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তিনি জয়েন্ট এন্ট্রাস পরীক্ষায় বসতে পারেননি। তাই, উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে  তিনি পলিটেকনিক পাশ করেছিলেন। পরে, সাত হাজার টাকা বেতনের একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে তিনি কাজ পান। কিন্তু, সেই টাকায় সংসারে কোনও কাজেই আসছিল না। চাকরির পাশাপাশি তিনি ফের পড়াশুনা শুরু করেন। পরীক্ষা দিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বিটেক করার সুযোগ পান। পাস করে তিনি একটি ভাল চাকরির সুযোগ পান। সেখানে বছরে ১৮ লক্ষ টাকা তাঁর বেতন ছিল। সেখানে কিছুদিন চাকরি করার পরও সেই চাকরিও তিনি ছেড়ে দেন। বাড়িতে এসে দাদার গ্যারেজে কিছুদিন তিনি কাজ করেছেন। সময়ের ফাঁকে ফাঁকে তিনি চাকরি পাওয়ার জন্য পড়াশুনা চালিয়ে গিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্তরে একাধিক চাকরির পরীক্ষায় তিনি বসেন। পরে, ইসরাতো (ISRO) কাজ করার জন্য তিনি পরীক্ষায় বসেন। সেবার ইসরোতে সর্বভারতীয় স্তরে ৩০ জনকে নেওয়ার কথা ছিল। সর্বভারতীয় স্তরে তিনি ২১ স্থান পেয়েছিলেন।

কী বললেন রাজীব?

রাজীববাবু বলেন, ছোট থেকেই আমার জীবনে অনেক বাধা এসেছে। কিন্তু, মনের মধ্যে একটা ইচ্ছে ছিল বড় কিছু করার। তাই সব সময়ের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টাই করে গিয়েছি। আর মন দিয়ে যদি কোনওদিন কেউ কিছু চায় ভগবানও তা পেতে সাহায্য করে।  আমি আমার জীবন সংগ্রাম দিয়ে যে সাফল্য পেয়েছি এটাই জ্বলন্ত প্রমাণ।

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Tags:

Madhyom

ISRO

bangla news

bengalinews

agarpara


আরও খবর


ছবিতে খবর