জয়নগরে তৃণমূল নেতা খুন দলের কোন্দলেই, তাহলে এই তাণ্ডব কেন?
(বাঁ দিকে) নিহত তৃণমূল নেতা, (ডান দিকে) জ্বলছে গ্রাম। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর (South 24 Parganas) এখনও উত্তপ্ত। শাসকদলের রোষানলে পুড়েছে দোলুয়াখাঁকির নস্কর পাড়া এলাকার প্রচুর ঘরবাড়ি। গ্রাম জুড়ে এতটাই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যে, অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। তৃণমূল নেতা তথা বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং একইসঙ্গে বামনগাছি অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সইফুদ্দিন লস্কর খুন হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে তৃণমূলীদের তাণ্ডব। এলাকা দখলের উদ্দেশ্যে সিপিএমই এই খুন করিয়েছে, এমন তত্ত্ব সোমবার সকাল থেকেই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঘটনার দিন রাতেই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন ওইদিন গণপিটুনিতে মৃত্যু হওয়া সহাবুদ্দিন শেখের স্ত্রী। তিনি যা বললেন, তাতে এটাই পরিষ্কার হয়ে গেল, ওই খুন আসলে শাসকদলের অভ্যন্তরের দ্বন্দ্বেরই ফল।
কী বলেছেন সহাবুদ্দিনের স্ত্রী? (South 24 Parganas)
মৃতের স্ত্রী দাবি করেন, তাঁর স্বামী তৃণমূল করতেন। তার পর তিনি আরও বিস্ফোরক তথ্য সামনে এনেছেন। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, সইফুদ্দিন খুনের ঘটনা জানাজানি হতেই কয়েকজন তাঁদের বাড়ি আসে। সেই সময় তাঁর স্বামী বাড়িতেই ছিলেন। তাঁকে বারবার ভয় দেখনো হয় এবং জানতে চাওয়া হয়, কারা এই খুন করেছে। কিন্তু স্বামী কিছু জানি না বলাতেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যাপক মারধর শুরু করে। চোখের সামনে তাকে টানতে টানতে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সবার সামনে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। অন্যদিকে, পুলিশ (South 24 Parganas) সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মৃত সহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধেও থানায় অনেক অভিযোগ আছে।
কী ঘটেছিল সেদিন (South 24 Parganas)
ঘটনার বিবরণে জানা গিয়েছে, রোজকার মতো সোমবার ভোরে ওই তৃণমূল নেতা নমাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ই তাঁকে কাছ থেকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। গুলির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে দেখেন, ওই নেতা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছেন। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। এর পরই শুরু হয় তৃণমূল কর্মীদের তাণ্ডব। তারা অভিযোগ করতে থাকে, এলাকা দখলের জন্য সিপিএমই এই হত্যাকাণ্ড করিয়েছে। গুলি করে পালানোর সময় দুজন তাদের হাতে ধরা পড়ে যায়, যার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় গণপিটুনিতে। সোমবার এদের পরিচয় জানা যায়নি। অবশেষে জানা গেল, মৃত ব্যক্তিও তৃণমূল কর্মী ছিলেন।
বগটুইয়ের ছায়া?
এই ঘটনার সঙ্গে অনেকেই বগটুইয়ের মিল খুঁজে পাচ্ছেন। এখানেও বেছে বেছে বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের (South 24 Parganas) ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে দীর্ঘক্ষণ দমকলের গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। বাড়ির পর বাড়ি দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় বহু বাড়ি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।