CID: মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় পরিবারের লোকজন
সিআইডি আধিকারিকদের সামনে ক্ষোভ জানাচ্ছেন এলাকাবাসী (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কালিয়াগঞ্জে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন সিআইডি-র (CID) তদন্তকারী অফিসাররা। ঘটনার তদন্ত এবং সিআইডি-র কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন গ্রামবাসীরা। তবে, এখনও সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় রয়েছে মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবার।
সিআইডি-র সামনে কী ক্ষোভ জানালেন বাসিন্দারা?
শুক্রবার ফের কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুরের চাঁদগায় নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাড়িতে যান সিআইডি-র (CID) আধিকারিকরা। সেই সময় সিআইডি-র আধিকারিকদের তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। সিআইডি-র আধিকারিকদের এদিন গ্রামবাসীরা সরাসরি প্রশ্ন করেন, এই মামলায় যে দোষী, তাকে এখনও পর্যন্ত কেন গ্রেফতার করা হয়নি? এমনকী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে বলছেন গুলি চালিয়েছে বিএসএফ, সেখানে আপনাদের ওপর কীভাবে ভরসা করব? এই খুনের ঘটনার গতিপ্রকৃতি এবং সিআইডি-র কাজকর্ম নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন তোলেন। গ্রামবাসীরা তদন্তকারী অফিসারদের উদ্দেশে বলেন, খুনের ঘটনা ঘটলে আগে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। তারপরেই তদন্ত শুরু হয়। অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার তাঁরা দাবি জানান। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে সিআইডি আধিকারিকরা মূলত এই ঘটনায় নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মন ও স্ত্রী গৌরী বর্মনের বয়ান রেকর্ড করেন।
কী বললেন নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাবা?
এখনও সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের পরিবার। তাঁর বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, "পুলিশই আমার ছেলেকে মেরেছে। সিআইডি (CID) তদন্তে আমাদের কোনও আস্থা নেই। কারণ যাদের বয়ান সাক্ষী হিসেবে নেওয়া হচ্ছে, ঘটনার সময় তারা কেউই উপস্থিত ছিল না। ফলে সিআইডির ওপর কী করে ভরসা থাকবে।" তিনি আরও বলেন, "অবিলম্বে ছেলে খুনের ঘটনার সিবিআই তদন্ত হোক।"
এলাকাবাসীর ক্ষোভ নিয়ে কী বললেন সিআইডি আধিকারিক?
সিআইডি-র (CID) এক আধিকারিক অনীশ সরকার বলেন, "কোনও বিক্ষোভ নয়। গ্রামবাসীরা তাঁদের অভাব-অভিযোগ আমাদের কাছে বলেছেন। সমস্ত বিষয়টি রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।"
প্রসঙ্গত, গত ২১শে এপ্রিল কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা সংলগ্ন পালোইবাড়ি এলাকার একটি পুকুরপাড় থেকে উদ্ধার হয় এক নাবালিকার মৃতদেহ। ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ঘিরে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় সাহেবঘাটা এলাকা। মৃত নাবালিকার দেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ায় রাজ্য জুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ। ভাঙচুর ও থানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। আক্রান্ত হয় পুলিশ। পরবর্তীতে চাঁদগা গ্রামে তল্লাশি অভিযানে গেলে রাজবংশী যুবক মৃত্যুঞ্জয় বর্মনকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে, হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।